জেলাশাসক অপহরণকাণ্ড: মাওদের সঙ্গে আলোচনা সেরে ফিরলেন মধ্যস্থতাকারীরা
পণবন্দি জেলাশাসকের মুক্তি নিয়ে জঙ্গলের গোপন ডেরায় মাওবাদীদের সঙ্গে আলোচনা করে ফিরলেন দুই মধ্যস্থতাকারী। রবিবার সকালে তারমেটলার জঙ্গল থেকে চিন্তলনাড় ফিরেছেন মধ্যস্থতাকারী বিডি শর্মা ও হরগোপাল।
পণবন্দি জেলাশাসকের মুক্তি নিয়ে জঙ্গলের গোপন ডেরায় মাওবাদীদের সঙ্গে আলোচনা করে ফিরলেন দুই মধ্যস্থতাকারী। রবিবার সকালে তারমেটলার জঙ্গল থেকে চিন্তলনাড় ফিরেছেন মধ্যস্থতাকারী বিডি শর্মা ও হরগোপাল। এর আগে শনিবার জেলাশাসকের মুক্তির শর্ত নিয়ে আলোচনা করতে তারমেটলার জঙ্গলে যান দুই মধ্যস্থতাকারী। রাতভর মাওবাদীদের ডেরাতেই ছিলেন তাঁরা। যদিও, মাওবাদীদের সঙ্গে কী আলোচনা হয়েছে তা নিয়ে মুখ খোলেননি মধ্যস্থতাকারীরা।
চিন্তলনাড় থেকে হেলিকপ্টারে রায়পুরে ফিরবেন বিডি শর্মা ও হরগোপাল। রায়পুরে ছত্তিসগড় সরকার নিযুক্ত ২ মধ্যস্থতাকারী নির্মলা বুচ ও এসকে মিশ্রের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন তাঁরা। জেলাশাসকের মুক্তি নিয়ে মাওবাদীরা কী বার্তা দিয়েছে, তা নিয়েই আলোচনায় বসবেন তাঁরা। সূত্রের খবর, জেলাশাসকের বিনিময়ে সাজাপ্রাপ্ত মাওবাদী নেতাদের না ছাড়ার বিষয়ে অনড় মনোভাব নিয়েছে ছত্তিসগড় সরকার। মাওবাদীরা সরকারের সেই বার্তার কী জবাব দিয়েছে, রায়পুরে ৪ মধ্যস্থতাকারীর বৈঠকে তা নিয়েও আলোচনা হবে। তবে সূত্রে খবর, জেলাশাসক সুস্থ রয়েছেন।
অন্যদিকে, জেলাশাসকের মুক্তির বিনিময়ে সাজাপ্রাপ্ত মাওবাদীদের ছাড়তে নারাজ ছত্তিসগড় সরকার। একই সঙ্গে পণবন্দি জেলাশাসকের মুক্তি নিয়ে ছত্তিসগড় সরকার ও মাওবাদীদের মধ্যে শুরু হয়েছে কেন্দুপাতার অর্থনীতি নিয়ে নতুন স্নায়ুযুদ্ধ। সূত্রে খবর, কেন্দুপাতার মরসুম শেষ হওয়ার আগে জেলাশাসকের সমস্যা না মিটলে আর্থিক দিক দিয়ে বহু কোটি টাকার ক্ষতি হবে মাওবাদীদের। তাই অপহরণ কাণ্ডে এখন মাওবাদীরাই চাপে পড়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বস্তুত, ছত্তিশগড়ে জঙ্গলের পারিপার্শিক গ্রামগুলির জীবনযাত্রা অনেকটাই কেন্দুপাতার উপর নির্ভরশীল। কেন্দুপাতার মরসুম প্রায় শেষের মুখে। আর এই মরসুমে কেন্দুপাতাকে কেন্দ্র করে বহু কোটি টাকার লেনদেন হয় ছত্তিসগড়ে। এবং সেই লেনদেনে গ্রামবাসী ও ঠিকাদার, উভয়ের কাছ থেকেই কমিশন নিয়ে বহু কোটি টাকা আয় হয় মাওবাদীদের। কিন্তু, জেলাশাসক অপহরণের পর থেকেই ছত্তিসগড়ের জঙ্গলে বন্ধ কেন্দুপাতা তোলার কাজ। কেন্দুপাতা শুকিয়ে গেলে তা দিয়ে আর কোনও কাজও হবে না। এই পরিস্থিতিতে জেলাশাসকের সমস্যা দ্রুত মিটিয়ে ফেলতে মাওবাদীদের চাপ দিচ্ছে ঠিকাদাররা। চাপ রয়েছে আদিবাসীদের পক্ষ থেকেও।