বাংলাদেশের সঙ্গে মিল থাকায় রাজ্য সরকারের 'বাংলা' নামে আপত্তি বিদেশমন্ত্রকের

২০১১, ২০১৬ ও ২০১৮- তিন বার রাজ্যের নামবদলের প্রস্তাব কেন্দ্রের অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

Updated By: Nov 14, 2018, 10:26 PM IST
বাংলাদেশের সঙ্গে মিল থাকায় রাজ্য সরকারের 'বাংলা' নামে আপত্তি বিদেশমন্ত্রকের

নিজস্ব প্রতিবেদন: রাজ্যের নামবদলের বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে গড়িমসির অভিযোগ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কী কারণে রাজ্যের প্রস্তাব ঝুলিয়ে রেখেছে মোদী সরকার? সূত্রের খবর, রাজ্যের নাম পরিবর্তনে বাগড়া দিয়েছে বিদেশমন্ত্রক। 

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলা নামের আপত্তি জানিয়ে বিদেশমন্ত্রক যুক্তি দিয়েছে, পড়শি বাংলাদেশের সঙ্গে রাজ্যের প্রস্তাবিত 'বাংলা' নামটি মিলে যাচ্ছে। 

২০১১, ২০১৬ ও ২০১৮ - তিন বার রাজ্যের নামবদলের প্রস্তাব কেন্দ্রের অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইংরেজিতে 'পশ্চিমবঙ্গ' নামটি খারিজ করে দিয়েছিল ইউপিএ সরকার। এরপর এনডিএ সরকারের জমানায় ২০১৬ সালে নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব পাঠান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই প্রস্তাব অনুযায়ী, রাজ্যের নাম ইংরেজিতে 'বেঙ্গল', বাংলায় 'বাংলা' ও হিন্দিতে 'বাঙ্গাল' রাখা হয়.। কিন্তু এভাবে নানা ভাষায় বাহারি নাম নিয়ে আপত্তি তোলে কেন্দ্রীয় সরকার। 

কেন্দ্রীয় সরকারই বাংলা নামের প্রস্তাব দেয়। সেটি রাজ্য সরকার মেনে নেয় বলে জানিয়েছেন পরিষদীয়মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ২০১৭ সালে রাজ্যের মন্ত্রিসভায় রাজ্যের 'বাংলা' নামকরণের প্রস্তাবটি পাশ হয়। এরপর সর্বসম্মতিতে তা অনুমোদিত হয় বিধানসভাতেও। বাংলা নামের প্রতিবাদে অবশ্য গরহাজির ছিল বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের বক্তব্য ছিল, রাজ্যভাগের ইতিহাস মুছে ফেলতে চাইছে তৃণমূল। বাংলার হিন্দুদের নিরাপদ রাখতে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের অবদানটিও ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।                

সূত্রের খবর, রাজ্যের প্রস্তাবটি বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়েছিল বিদেশমন্ত্রকের কাছে। কিন্তু পড়শি বাংলাদেশের সঙ্গে মিল থাকায় বাংলা নামটি নিয়ে সুষমা স্বরাজের মন্ত্রক আপত্তি তুলেছে বলে সূত্রের খবর। 

আর কেন্দ্রের এই দীর্ঘসূত্রিতা নিয়েই টুইটারে তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়,“আমি কয়েকদিন ধরে লক্ষ্য করছি যে প্রায় প্রতিদিনই কোনও না কোনও ঐতিহাসিক স্থান এবং ঐতিহাসিক সংস্থার নাম বদল করছে বিজেপি। এটা তারা তাদের রাজনৈতিক স্বার্থে করছে। ”

তিনি বলেন, “ বাংলার ক্ষেত্রে কেন্দ্রের আচরণ একেবারে ভিন্ন। মাতৃভাষার প্রতি আমাদের আবেগের ভিত্তিতে, আমরা আমাদের রাজ্যের নাম বাংলা করেছি। বিধানসভার অধিবেশনে এই মর্মে সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাবও পাশ হয়েছে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে ইংরেজিতে পশ্চিমবঙ্গ হবে বেঙ্গল। হিন্দিতে হবে বাঙ্গাল। আর বাংলার ক্ষেত্রে লেখা হবে বাংলা। আমরা আমাদের প্রস্তাব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে পাঠিয়েছিলাম।”

মমতা আরও লিখেছেন, “স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আমাদের উপদেশ দেয় যে, তিন ভাষাতেই পশ্চিমবঙ্গের নাম লেখা হোক বাংলা। আমরা পুনরায় বিধানসভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করি এবং পশ্চিমবঙ্গের নাম তিন ভাষাতেই বাংলা করার প্রস্তাব পাশ হয়। আমরা ফের নাম বদলের বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে পাঠাই। অথচ তারপর থেকে সেটা দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে রয়েছে।”

মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতির পরই মুখ খুলেছেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর দাবি, নাম বদলে রাজ্যের উন্নতি হবে না। বছর ঘুরলেই লোকসভা ভোট। তার আগে নাম বদল ইস্যুতে  বিজেপি-তৃণমূল টক্করে কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় এখন সেটাই দেখার।

আরও পড়ুন- ফিরহাদ হাকিমকে ফোন জ্যাকলিনের, তারপর...

.