শরদ পাওয়ারের ক্ষোভ প্রশমনে সচেষ্ট সোনিয়া

আসন বিতর্ক নিয়ে শরদ পাওয়ারকে তুষ্ট করতে ভারসাম্যের রাস্তায় হাঁটতে চাইছে কংগ্রেস। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ আসনে কে বসবেন, তা ঠিক করতে আজ ৩ সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন সোনিয়া গান্ধী। কমিটিতে পাওয়ারের পাশাপাশি একে অ্যান্টনিকেও রাখা হয়েছে।

Updated By: Jul 20, 2012, 02:33 PM IST

আসন বিতর্ক নিয়ে শরদ পাওয়ারকে তুষ্ট করতে ভারসাম্যের রাস্তায় হাঁটতে চাইছে কংগ্রেস। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ আসনে কে বসবেন, তা ঠিক করতে আজ ৩ সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন সোনিয়া গান্ধী। কমিটিতে পাওয়ারের পাশাপাশি একে অ্যান্টনিকেও রাখা হয়েছে। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পর যিনি লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা নির্বাচিত হবেন, তাঁকে কমিটির তৃতীয় সদস্য করা হবে। আজ সকালে ইউপিএ চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেন মারাঠা স্ট্রংম্যান। তারপরই দশ জনপথবাসিনী কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন।
বৃহস্পতিবার রাতে কেন্দ্রীয় কৃষি ও গণবণ্টনমন্ত্রী শরদ পাওয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করেন বলে খবর। মন্ত্রিসভার দ্বিতীয় আসন নিয়ে কথা বলতেই তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়েছিলেন বলে অনুমান রাজনৈতিক মহলের। যদিও শরদ-ঘনিষ্ঠ এনসিপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প ও রাষ্ট্রায়ত্ত উদ্যোগ বিষয়ক মন্ত্রী প্রফুল প্যাটেলের দাবি করেন, তাঁদের নেতা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে সরকারের কিছু কাজ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আর সে কারণেই এনসিপি গতকাল মন্ত্রিসভার বৈঠকেও যোগ দেয়নি বলেও দাবি করেন প্যাটেল।

বস্তুত, আজ সাংবাদিক সম্মেলনে বিতর্কের পুরো দায় কংগ্রেসের দিকে ঠেলেছেন এনসিপি নেতা প্রফুল প্যাটেল। তাঁর অভিযোগ, মনমোহন ক্যাবিনেটের `নাম্বার টু` হওয়ার শরদ পাওয়ার বিদ্রোহ করেছেন-এ খবর পুরোপুরি অসত্য। পাশাপাশি আসন বিতর্কের জেরে দ্বিতীয় ইউপিএ-র মন্ত্রিসভা থেকে তাঁদের ইস্তফা এবং এনসিপি`র ইউপিএ জোট ছাড়ার সম্ভাবনা সংক্রান্ত সমস্ত জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন প্রফুল প্যাটেল। এমনকি কংগ্রেসের একাংশ সংবাদ মাধ্যমের কাছে বিকৃত তথ্য দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
যদিও গতকাল প্রথমে এনসিপি শিবির থেকেই পাওয়ারের অসন্তোষের কথা জানানো হয়েছিল। প্রফুল প্যাটেলের দাবি, শরদ পাওয়ারই মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রীর পাশে বসার যোগ্য ব্যক্তি। কারণ এমনিতেই তিনি শরিক হিসেবে যোগ্যতার গুণে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর পাশে বসেন। প্যাটেলের অভিযোগ, দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ আসনে পাওয়ারের যোগ্যতাকে খাটো করে দেখাতেই এনসিপিকে ইউপিএ-তে ছোট দল হিসেবে প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চলছে। রাজনৈতিকমহলের ধারণা, আসন বিতর্ককে সামনে রেখে এনসিপি কংগ্রেসের সঙ্গে বিরোধিতার রাস্তায় হাঁটলেও, ভিতরে অন্য কোনও রাজনৈতিক অঙ্ক থাকার সম্ভাবনাও রয়েছে।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য প্রণব মুখার্জি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর পদ ছাড়ার পর মনমোহন ক্যাবিনেটে `নাম্বর টু` হওয়ার বাসনা ছিল শরদের। দু`নম্বর ব্যক্তি সাধারণত মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর বাঁ পাশে বসেন। প্রণববাবু ইস্তফা দেওয়ার পর ক্যাবিনেটের প্রথম বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর পাশের সেই চেয়ারেই বসেছিলেন পওয়ার। ফলে তিনি ভেবেছিলেন, সনিয়া-মনমোহন তাঁকেই মন্ত্রিসভার দ্বিতীয় ব্যক্তির মর্যাদা দিচ্ছেন৷ কিন্তু গত ১২ জুলাইয়ের বৈঠকে মনমোহনের পাশে বসতে দেওয়া হয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যান্টনিকে। তাঁর পাশে বসতে দেওয়া হয় পওয়ারকে।
এই পরিস্থিতিতে গতকাল শরদ এবং প্রফুল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে যোগ দেননি। এর পরই রাজনৈতিক মহলে খবর ছড়ায়, প্রধানমন্ত্রীর কাছে ইস্তফাপত্র পেশ করেছেন তাঁরা। যদিও আজ সাংবাদিক সম্মেলনে প্রফুল প্যাটেল দাবি করেন, এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার ও তিনি, দুজনের কেউই আনুষ্ঠানিক ভাবে ইস্তফা দেননি। যদিও পদত্যাগের বিষয়ে এর বেশি আর একটি কথাও বলেননি তিনি।

.