সংখ্যালঘু সংরক্ষণ, সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে কেন্দ্র
অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্ট নাকচ করেছিল আগেই। এবার সরকারি শিক্ষাক্ষেত্র এবং চাকরিতে ২৭ শতাংশ ওবিসি সংরক্ষণের মধ্যে ৪.৫ শতাংশ সংখ্যালঘু কোটা চালু করার কেন্দ্রীয় উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্টও। সংখ্যালঘু সংরক্ষণের মতো `জটিল` এবং `স্পর্শকাতর` বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র যেভাবে পদক্ষেপ করছে, বিচারপতি কে এস রাধাকৃষ্ণণ এবং বিচারপতি জে এস খেহারকে নিয়ে গঠিত শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ এদিন সরাসরি তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।
অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্ট নাকচ করেছিল আগেই। এবার সরকারি শিক্ষাক্ষেত্র এবং চাকরিতে ২৭ শতাংশ ওবিসি সংরক্ষণের মধ্যে ৪.৫ শতাংশ সংখ্যালঘু কোটা চালু করার কেন্দ্রীয় উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্টও। সংখ্যালঘু সংরক্ষণের মতো 'জটিল' এবং 'স্পর্শকাতর' বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র যেভাবে পদক্ষেপ করছে, বিচারপতি কে এস রাধাকৃষ্ণণ এবং বিচারপতি জে এস খেহারকে নিয়ে গঠিত শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ এদিন সরাসরি তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। কিসের ভিত্তিতে কেন্দ্র সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৪.৫ শতাংশ মুসলিম কোটা চালু করতে উদ্যোগী হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে দুই বিচারপতির বেঞ্চ।
গত ২২ ডিসেম্বর সরকারি শিক্ষা এবং চাকরির ক্ষেত্রে অনগ্রসর শ্রেণির জন্য সংরক্ষিত ২৭ শতাংশ আসনের মধ্যে ৪.৫ শতাংশ আসন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের জন্য বিশেষভাবে সংরক্ষণের প্রস্তাব দিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু গত ২৮ মে বিচারপতি মদন বি লকুর ও বিচারপতি পি ভি সঞ্জয়কুমারকে নিয়ে গঠিত অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ মনমোহন সরকারের এই উদ্যোগ খারিজ করে দেয়। দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, সংখ্যালঘুদের জন্য বিশেষ সংরক্ষণ চালু করার প্রস্তাবে ধর্মীয় কারণটাই মুখ্য। এক্ষেত্রে অনগ্রসরতার বিষয়টিকে কার্যত উপেক্ষা করা হচ্ছে। মুসলিম, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ইত্যাদি নানা ধর্মীয় গোষ্ঠীতে বিভক্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নাগরিকদের জন্য একত্রে সংরক্ষণ চালু করার কেন্দ্রীয় নীতি নিয়েও প্রশ্ন তোলে দুই বিচারপতির বেঞ্চ। তা ছাড়া অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য নির্ধারিত ২৭ শতাংশ সংরক্ষণের মধ্যে থেকে সংখ্যালঘুদের ৪.৫ শতাংশ 'সাব-কোটা' বরাদ্দ করার কেন্দ্রীয় প্রস্তাবের সমালোচনা করে অন্ধ্র হাইকোর্ট বলে, এখনও অনগ্রসর শ্রেণির বহু মানুষ রয়েছেন, যাঁদের সংরক্ষণ সত্যিই প্রয়োজন। ধর্মের ভিত্তিতে তাঁদের অংশে ভাগ বসানো অনুচিত।
কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী সলমন খুরশিদ এই রায় ঘোষণার পরই সরাসরি জানিয়ে দিয়েছিলেন, অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্টের এই পর্যবেক্ষণের সঙ্গে একমত নয় কেন্দ্রীয় সরকার। অন্ধ্র হাইকোর্টের রায়কে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানানোর কথাও জানিয়েছিলেন তিনি। এদিন কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে অ্যাটর্নি জেনারেল জি ই বাহনবতী শীর্ষ আদালতের বেঞ্চে অন্ধ্র হাইকোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে সওয়াল করেন। তিনি বলেন, আইআইটি'তে ভর্তির ক্ষেত্রে সংখ্যালঘু সংরক্ষণ চালু করার জন্য সরকারি প্রক্রিয়া সমাপ্ত হয়েছে। অন্ধ্র হাইকোর্টের রায় বহাল থাকলে ভর্তির ক্ষেত্রে অচলাবস্থা দেখা দেবে। দুই বিচারপতির বেঞ্চ বুধবারের মধ্যে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন বাহনবতীকে। তবে শীর্ষ আদালতের এদিনের মন্তব্য সংখ্যালঘু সংরক্ষণ নিয়ে কেন্দ্রের রক্তচাপ বাড়াবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।