সারবজিতের দেশে ফেরাতে চাইল ভারত
পাকিস্তানের জেলে আক্রান্ত বন্দি সরবজিত সিংকে চিকিত্সার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়া হবে না। জিন্না হাসপাতালে ভর্তি সরবজিতের সিংয়ের অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক হওয়ায়, তাঁর পরিবারের তরফে চিকিত্সার জন্য তাঁকে ভারতে নিয়ে আসার আবেদন জানানো হয়। পরিবারের আবেদন খতিয়ে দেখতে এরপরই চার সদস্যের বিশেষজ্ঞ চিকিত্সককে নিয়ে প্যানেল গড়ে পাক সরকার। চিকিত্সাকর জন্য পাকিস্তানের বাইরে সরবজিত সিংকে নিয়ে যাওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই বলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই প্যানেল।
বিবৃতি জারি করে সরবজিত সিংকে দেশে ফেরানোর আর্জি জানাল ভারত। সোমবার এক বিবৃতিতে ভারত জানিয়েছে, "এটা স্পষ্ট, সরবজিতের অবস্থা সঙ্কটজনক। আমরা পাক সরকারের আছে আবেদন করছি মানবিকতার এই ঘটনাকে বিবেচনা করে ওনাকে মুক্ত করা উচিৎ।"
ভারত এও জানিয়েছে, এদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় সরবজিতকে ভারত ফেরানো উচিৎ।
জিন্না হাসপাতালে ভর্তি সরবজিতের সিংয়ের অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক হওয়ায়, তাঁর পরিবারের তরফে চিকিত্সার জন্য তাঁকে ভারতে নিয়ে আসার আবেদন জানানো হয়। পরিবারের আবেদন খতিয়ে দেখতে এরপরই চার সদস্যের বিশেষজ্ঞ চিকিত্সককে নিয়ে প্যানেল গড়ে পাক সরকার। চিকিত্সাকর জন্য পাকিস্তানের বাইরে সরবজিত সিংকে নিয়ে যাওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই বলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই প্যানেল। পাকিস্তানের জেলে আক্রান্ত বন্দি সরবজিত সিংকে চিকিত্সার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেয় পাক প্রশাসন।
পাকিস্তানের জিন্না হাসপাতালে কোমাচ্ছন্ন ভারতীয় বন্দী সরবজিৎ সিংয়ের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর বাঁচার সম্ভাবনা ক্ষীণ। রবিবার ১৫ দিনের ভিসায় সরবজিতের সঙ্গে দেখা করতে তাঁর স্ত্রী সহ পরিবারের চার সদস্য পাকিস্তানে পৌঁছেছেন। গতকালই তাঁরা সরবজিতের সঙ্গে হাসপাতালে দেখা করেছেন।
অন্যদিকে ভারতীয় হাই কমিশনের প্রতিনিধি দল আজ হাসপাতালে সরবজিৎকে দেখে এসেছেন।
গত সপ্তাহের শুক্রবার কোট লাখপত জেলে বন্দিদের হামলায় গুরুতর জখম হন উনপঞ্চাশ বছরের সরবজিৎ।
জনা ছয়েক বন্দি তাঁর ওপর ইঁট, ব্লেড ও ঘিয়ের টিন নিয়ে হামলা চালায় বলে জানা গেছে। গতকালই সরবজিতের পরিবারের চার সদস্যের জন্য পনেরো দিনের ভিসা মঞ্জুর করেছিল পাক সরকার। আজ তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে ও বোন লাহোর পৌঁছান। সরবজিত সিংয়ের সুস্থতা কামনায় শনিবার অমৃতসরে মোমবাতি মিছিল হয়। অংশ নেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। দেশের অন্যান্য অংশেও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। সরবজিতের গ্রাম সহ বিভিন্ন জায়গায় পাকিস্তানের জেলে তাঁর ওপর হামলার প্রতিবাদে সামিল হন বহু মানুষ।
১৯৯০ সালে পাক পঞ্জাবে বিস্ফোরণের ঘটনায় সরবজিত সিংকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। দু`দশক ধরে পাকিস্তানের জেলে বন্দি রয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের জেলে সরবজিত সিংয়ের ওপর হামলার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। এই ঘটনার পর সরবজিতকে ভারতে ফেরানোর জন্য পাকিস্তানের ওপর চাপ বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ।
সরবজিতের ওপর হামলা, কেন্দ্রীয় সরকারের বিদেশনীতির ব্যর্থতার প্রমাণ বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি। দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তানের জেলে বন্দি সরবজিত সিংকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই কূটনৈতিক প্রয়াস এখনও সফল হয়নি। তবে, সরবজিতের ওপর হামলার ঘটনায়, তাঁকে ভারতে নিয়ে আসার ব্যাপারে ইসলামাবাদের কাছে নয়াদিল্লির দাবি আরও জোরালো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ।
সরবজিত সিংয়ের ওপর হামলার ঘটনায় পাকিস্তানে তদন্তকারী দল পাঠানোর বিষয়ে কেন্দ্রের কাছে দাবি জানিয়েছে পঞ্জাব সরকার। চিন ও পাকিস্তান প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের বিদেশনীতির সমালোচনা করেছেন পঞ্জাবের উপ-মুখ্যমন্ত্রী। নতুন অস্ত্র হাতে পেয়ে সরকারকে চেপে ধরার সুযোগ ছাড়ছে না বিজেপিও। সরবজিত সিংয়ের ওপর হামলার ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রাষ্ট্রসঙ্ঘের দ্বারস্থ হওয়ার দাবি জানিয়েছে সমাজবাদী পার্টি।