কোমাচ্ছন্ন সরবজিতের সঙ্গে দেখা করলেন পরিবারের সদস্যরা
এখনও সঙ্কট কাটেনি সরবজিত সিংয়ের। গভীর কোমায় আচ্ছন্ন রয়েছেন তিনি। লাহোরের জিন্না হাসপাতালে ভর্তি সরবজিতকে দেখতে আজ রওনা দিচ্ছে তাঁর পরিবার।
পাকিস্তানের হাসপাতালে কোমাচ্ছন্ন সরবজিত সিংহের সঙ্গে দেখা করলেন তাঁর পরিবারের চার সদস্য। কিন্তু এর মধ্যেই দু'দেশের কুটনৈতিক সম্পর্কের মধ্যে উত্তাপ বাড়িয়ে ভারতীয় প্রতিনিধিদের সরবজিতের সঙ্গে সাক্ষাতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল পাকিস্তান।
প্রাথমিকভাবে দুই ভারতীয় প্রতিনিধিদের কয়েক মিনিটের জন্য সরবজিতের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দিয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু আজ নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এল তারা।
সূত্রে খবর, ভারত ইতিমধ্যে সরবজিতের সঙ্গে প্রতিনিধিদের দেখা করাতে দেওয়ার বিষয়ে চাপ বারিয়েছে। এখনও সঙ্কট কাটেনি সরবজিত সিংয়ের। গভীর কোমায় আচ্ছন্ন রয়েছেন তিনি। লাহোরের জিন্না হাসপাতালে ভর্তি সরবজিতকে দেখতে আজই পাকিস্তান পৌঁছেছে তাঁর পরিবার।
লাহোরের জিন্না হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন সরবজিত সিং। তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে। অবস্থা স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত অস্ত্রোপচার সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন চিকিত্সকরা। সরবজিতের মাথা, ঘাড়, মুখ, পেট সহ দেহের অন্যান্য অংশে গুরুতর আঘাত রয়েছে। শুক্রবার কোট লাখপত জেলে বন্দিদের হামলায় গুরুতর জখম হন উনপঞ্চাশ বছরের সরবজিত।
জনা ছয়েক বন্দি তাঁর ওপর ইঁট, ব্লেড ও ঘিয়ের টিন নিয়ে হামলা চালায় বলে জানা গেছে। গতকালই সরবজিতের পরিবারের চার সদস্যের জন্য পনেরো দিনের ভিসা মঞ্জুর করেছিল পাক সরকার। আজ তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে ও বোন লাহোর পৌঁছান। সরবজিত সিংয়ের সুস্থতা কামনায় শনিবার অমৃতসরে মোমবাতি মিছিল হয়। অংশ নেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। দেশের অন্যান্য অংশেও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। সরবজিতের গ্রাম সহ বিভিন্ন জায়গায় পাকিস্তানের জেলে তাঁর ওপর হামলার প্রতিবাদে সামিল হন বহু মানুষ।
১৯৯০ সালে পাক পঞ্জাবে বিস্ফোরণের ঘটনায় সরবজিত সিংকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। দু`দশক ধরে পাকিস্তানের জেলে বন্দি রয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের জেলে সরবজিত সিংয়ের ওপর হামলার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। এই ঘটনার পর সরবজিতকে ভারতে ফেরানোর জন্য পাকিস্তানের ওপর চাপ বাড়ানোর কথা জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ।
সরবজিতের ওপর হামলা, কেন্দ্রীয় সরকারের বিদেশনীতির ব্যর্থতার প্রমাণ বলে অভিযোগ করেছে বিজেপি। দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তানের জেলে বন্দি সরবজিত সিংকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই কূটনৈতিক প্রয়াস এখনও সফল হয়নি। তবে, সরবজিতের ওপর হামলার ঘটনায়, তাঁকে ভারতে নিয়ে আসার ব্যাপারে ইসলামাবাদের কাছে নয়াদিল্লির দাবি আরও জোরালো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ।
সরবজিত সিংয়ের ওপর হামলার ঘটনায় পাকিস্তানে তদন্তকারী দল পাঠানোর বিষয়ে কেন্দ্রের কাছে দাবি জানিয়েছে পঞ্জাব সরকার। চিন ও পাকিস্তান প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের বিদেশনীতির সমালোচনা করেছেন পঞ্জাবের উপ-মুখ্যমন্ত্রী। নতুন অস্ত্র হাতে পেয়ে সরকারকে চেপে ধরার সুযোগ ছাড়ছে না বিজেপিও। সরবজিত সিংয়ের ওপর হামলার ঘটনায় কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রাষ্ট্রসঙ্ঘের দ্বারস্থ হওয়ার দাবি জানিয়েছে সমাজবাদী পার্টি।