উন্নতশীল অন্য দেশের বাজারের তুলনায় ভাল জায়গায় টাকা: উর্জিত পটেল
সত্তরের ঘর পার করার পর এবার ৭৪-এ ঢুকে পড়ল ভারতীয় বিনিময়মুদ্রা।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ডলারের নিরিখে প্রথমবার ৭৪-এর ঘর পার করেছে টাকা। তবে এনিয়ে ঘাবড়ানোর কিছু দেখছেন না রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর উর্জিত পটেল। তাঁর কথায়, উন্নতশীল দেশের বাজারের নিরিখে এখনও ভাল জায়গায় ডলারের নিরিখে টাকার বিনিময় মূল্য। এব্যাপারে অবশ্য শীর্ষ ব্যাঙ্ক কোনও লক্ষ্য স্থির করেনি।
সাংবাদিক বৈঠকে উর্জিত পটেল বলেন, ''গত অগস্টে আর্থিক নীতি কমিটির বৈঠকের পর থেকেই টালমাটালে টাকা। মার্চের পর থেকে ডলারের নিরিখে ৫.৬ শতাংশ অবমূল্যায়ন হয়েছে ভারতীয় মুদ্রার''। তিনি আশ্বস্ত করেন,''বর্তমানে ৪০০.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশি মুদ্রার তহবিল রয়েছে ভারতের। তা দিয়ে আরও ১০ মাস চালানো সম্ভব''।
চলতি বছরে জানুয়ারি থেকে ১৭ শতাংশ পড়েছে টাকার দাম। ১৩ এপ্রিল বিদেশি মুদ্রার তহবিলে জমা হয়েছে রেকর্ড ৪২৬.০২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে টাকার দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য তহবিলে বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয় অনেকটাই কমে গিয়েছে।
শুক্রবার আর্থিক ঋণনীতি ঘোষণায় রেপো রেট ৬.৫০ শতাংশ অপরিবর্তিত রেখেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। রিভার্স রেটেও বদল ঘটেনি। তা রয়েছে ৬.২৫ শতাংশেই। বৃহস্পতিবার ডলার নিরিখে ৭৩.৫৮ টাকায় বন্ধ হয়েছিল ভারতীয় মুদ্রা। শুক্রবার আরবিআইয়ের এমন ঘোষণার পর উত্সাহ হারায় শিল্পমহল। যার সরাসরি প্রভাব পড়ে ডলার-টাকার বিনিময় মূল্যে। ০.৭ শতাংশ পতন বাবা ৫৫ পয়সা পড়ে টাকা। ডলারের নিরিখে টাকার দাম দাঁড়ায় ৭৪.২৩। সত্তরের ঘর পার করার পর এবার ৭৪-এ ঢুকে পড়ল ভারতীয় বিনিময়মুদ্রা।
টাকার অবমূ্ল্যায়নের জেরে পেট্রোল ও ডিজেলের দামের উপরে সরাসরি প্রভাব পড়বে। আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারে কিনতে হয় অপরিশোধিত তেল। সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হবে তেল বিপণন সংস্থাগুলিকে। আর এই অতিরিক্ত অর্থে তারা তুলবে গ্রাহকদের পকেট থেকে। বৃহস্পতিবারই শুল্ক কমিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। পেট্রোল ও ডিজেলের দাম কমেছে ২.৫০ টাকা। তবে এভাবে ডলার নিরিখে টাকার দাম পড়তে থাকলে ফের বাড়তে পারে জ্বালানির দর।
টাকার অবমূল্যায়নের জের পড়েছে শেয়ার বাজারে। বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ সূচক সেনসেক্স পড়েছে ৭৯২ অঙ্ক। গত ৬ মাসে সর্বনিম্ন ৩৪,৩৭৬.৯৯ টাকায় পৌঁছল সেনসেক্স। দিনের শেষে সূচক বন্ধ হয়েছে ৩৪,৩৭৬.৯৯ অঙ্কে। ২৮২.৮০ অঙ্ক পড়ে নিফটি থিতু হয়েছে ১০,৩১৬.৪৫ পয়েন্টে।
বৃহস্পতিবার বম্বে স্টক একচেঞ্জ সূচকের তালিকায় থাকা সংস্থাগুলির বাজারের আর্থিক মূল্য ৫,০২,৮৯৫.৯৭ কোটি টাকা পড়ে হয় ১,৪০,৩৯,৭৪২.৯২ কোটি টাকা। শুক্রবার তা আরও ৩,৭৯,১২৪.৭ কোটি পড়ে দাঁড়াল ১,৩৬,৬০,৬১৮.২২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন- দায়িত্ব পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ঘুঁটি সাজাতে ময়দানে মুকুল রায়