চলতি সপ্তাহে ভারী ধস শেয়ার বাজারে, ৮ লক্ষ কোটি খোয়ালেন বিনিয়োগকারীরা
গোটা সপ্তাহে ১,৮৫০ অঙ্ক পড়ল সূচক। ৬০০ অঙ্ক পড়ে ১১,৪০০-র নীচে নামল নিফটি।
নিজস্ব প্রতিবেদন: টালমাটাল দালাল স্ট্রিট। চলতি সপ্তাহে বড়সড় ধস নামল শেয়ার বাজারে। তার ধাক্কায় ৩৫ হাজারের নীচে নেমে গেল বম্বে স্টক একচেঞ্জ সূচক সেনসেক্স। গোটা সপ্তাহে ১,৮৫০ অঙ্ক পড়ল সূচক। ৬০০ অঙ্ক পড়ে ১১,৪০০-র নীচে নামল নিফটি। চলতি সপ্তাহে ৮.৮২ লক্ষ কোটি টাকা লোকসান করলেন বিনিয়োগকারীরা।
শুক্রবার ঋণনীতি ঘোষণা করে আরবিআই। রেপো ও রিভার্স রেপো রেট অপরিবর্তিত রেখেছে আরবিআই। বর্তমানে রেপো রেট ৬.৫০ শতাংশ। এবং রিভার্স রেপো রেট ৬.২৫ শতাংশ। অথচ বাজার এমন প্রত্যাশায় ছিল না। তার ধাক্কা লাগল ডলার-টাকার বিনিময়মূল্যে। ডলারের নিরিখে ৭৪ অঙ্ক ছুঁয়ে ফেলে ভারতীয় মুদ্রা। এক ডলারের দাম ৭৪.২৩ টাকায় পৌঁছয়। টাকার এমন রক্তক্ষরণের চাপ গিয়ে পড়ল শেয়ার বাজারে। এক ধাক্কায় ৭৯২ অঙ্ক পড়ে গেল সেনসেক্স। গত ৬ মাসে সর্বনিম্ন ৩৪,৩৭৬.৯৯ টাকায় পৌঁছল বম্বে স্টক একচেঞ্জ সূচক। দিনের শেষে সূচক বন্ধ হয়েছে ৩৪,৩৭৬.৯৯ অঙ্কে। ২৮২.৮০ অঙ্ক পড়ে নিফটি থিতু হয়েছে ১০,৩১৬.৪৫ পয়েন্টে।
বৃহস্পতিবার বম্বে স্টক একচেঞ্জ সূচকের তালিকায় থাকা সংস্থাগুলির বাজারের আর্থিক মূল্য ৫,০২,৮৯৫.৯৭ কোটি টাকা পড়ে হয় ১,৪০,৩৯,৭৪২.৯২ কোটি টাকা। শুক্রবার তা আরও ৩,৭৯,১২৪.৭ কোটি পড়ে দাঁড়াল ১,৩৬,৬০,৬১৮.২২ কোটি টাকা। সপ্তাহের এই পাঁচদিনে বিনিয়োগকারীদের পকেট থেকে খসল ৮.৮২ লক্ষ কোটি।
এক শেয়ার বিশেষজ্ঞকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি শ্রীবৃদ্ধি ও ফেডারেল রিজার্ভের প্রতিক্রিয়ার জেরে মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা গিয়েছে।
৭৯২.১৭ অঙ্ক পড়ে থিতু হওয়ার আগে ৩৪,২০২.২২ পয়েন্টে পৌঁছে গিয়েছিল সেনসেক্স। ২৩ এপ্রিলের পর এটাই সর্বনিম্ন। সেবার সেনসেক্স নেমেছিল ৩৪,৪০৫.৭৭ অঙ্কে। শুক্রবার ১০,২৬১.৯০ অঙ্কে নেমেছিল নিফটি। তবে দিনের শেষে সেখান থেকে ৫৪ অঙ্ক ঘুরে দাঁড়ায় নিফটি।
বৃহস্পতিবার তেলের উপরে শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। তার জেরে এদিন ১৬ শতাংশ পড়েছে তেল বিপণন সংস্থাগুলির শেয়ার। সরকার শুল্ক কমানোয় আতঙ্ক ছড়িয়েছে, লোকসভা ভোটের আগে ফের পেট্রোল-ডিজেলের দরে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সরকার। ২০১২ সালে পেট্রোলের দর বাজারের হাতে ছেড়ে দেয় কেন্দ্র। তার আগে দাম নিয়ন্ত্রণ করত সরকারই। ২০১৪ সালে ডিজেলকেও বাজারের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সস্তার জনপ্রিয়তার জন্য পেট্রোল-ডিজেলকে ফের সরকার নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে বলে আশঙ্কা অনেকের।