নদীর উপর সেতু তৈরি করতে একার হাতে যা করলেন এই তরুণ, তাতে তিনিই 'নায়ক'!
ওডিশার রায়াগাদা জেলার কাশীপুর ব্লকের গুঞ্জারাম্পাঞ্জারা গ্রামের ঘটনা। সেখানে একটি নদী আছে, খুব গভীর না হলেও এর স্রোত তীব্র। সারা বছরই জল থাকে।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ছেলে ঠিক করলেন, বউয়ের গয়না বেচে গ্রামবাসীর জন্য সেতু তৈরি করে দেবেন! আসলে তাঁর বাবা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, গ্রামের মানুষের অসুবিধা হচ্ছে, অতএব তিনি তৈরি করে দেবেন সেতু! যা ভাবা, তাই কাজ। বাবার নাম কৈলাস নায়ক, ছেলে রঞ্জিত নায়ক। ছেলে বছরছাব্বিশের তরুণ ট্রাক ড্রাইভার। তাঁরা দেখেছেন, শেষ দুটো ভোটে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা এলাকাবাসীর কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি এই সেতু তৈরি করে দেবেন। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে কিছু হয়নি।
আরও পড়ুন: প্যাংগঙের পুনরাবৃত্তি? অরুণাচল প্রদেশে চিনের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ ভারতের...
ওডিশার রায়াগাদা জেলার কাশীপুর ব্লকের গুঞ্জারাম্পাঞ্জারা গ্রামের ঘটনা। সেখানে একটি নদী আছে, খুব গভীর না হলেও এর স্রোত তীব্র। সারা বছরই জল থাকে। ফলে, গ্রামবাসীদের নদী পেরোতে খুবই অসুবিধা হয়। অথচ, কোনও প্রতিকার নেই। অথচ, এই নদী পেরিয়েই স্থানীয় গ্রামীণ হাসপাতালে যেতে হয়। কিন্তু সেতু না থাকায় সারা বছরই গ্রামবাসীদের খুব কষ্ট হয়। এসব দেখেই এঁরা সিদ্ধান্ত নেন, নিজেরাই তৈরি করে দেবেন সেতু। নদীটির নাম বিছালা। যে গ্রাম দিয়ে বয়ে গিয়েছে নদীটি সেখানে মোটামুটি ১০০ পরিবারের বাস।
আরও পড়ুন: Lecturer Works as Porter: দিনে কলেজে পড়িয়ে রাতে কুলির কাজ করেন এই তরুণ, কারণ জানলে তাজ্জব হবেন
বাবা কৈলাস আর ছেলে রঞ্জিত মিলে এরপর হাত দিলেন এক কঠিন কাজে। কৈলাসের প্রাথমিক ইচ্ছে ছিল সেতুটি কংক্রিটের করা। কিন্তু সেটা করা তাঁদের পক্ষে যথেষ্ট কঠিন হওয়ায় তাঁরা ঠিক করেন, সেতুটি বাঁশ ও কাঠ দিয়েই আপাতত তৈরি করবেন। সেই মতো কাজও আরম্ভ করে দেন তাঁরা। তাঁদের পক্ষে প্রায় 'হিমালয়ান টাস্ক' এটি। কিন্তু সাহসে বুক বেঁধে দাঁতে দাঁত চেপে কাজটি করতে শুরু করেন তাঁরা। কাজ কিছুদিন এগনোর পরে তাঁরা দেখেন হাতে আর টাকা নেই, এবার কী হবে?
শেষ পর্যন্ত রঞ্জিত তাঁর স্ত্রীর গয়না বেচে সেতু তৈরির পরিকল্পনা করেন। যা শুনে তাজ্জব হন সকলে। আপাতত, তাঁরা বাপবেটা মিলে এমন একটা সেতু তৈরি করে দিতে পারছেন যার উপর দিয়ে অনায়াসে টু-হুইলার চলে যাবে। এটাকে 'সেতু' না বলে এখন অবশ্য 'সাঁকো'ই বলতে হবে। কেননা, নির্মাণ একমাত্র কংক্রিটের হলে তবেই সেটিকে 'সেতু' বলা যায়। যাই হোক, এই নভেম্বরেই কাজ শেষ হয়েছে সাঁকোটির। এবার এই সেতুর মাধ্যমে এই এলাকার মানুষজন অনায়াসে কালাহান্ডি নবরঙ্গপুরের মতো জায়গাগুলিতে যেতে পারবেন।