Rajasthan: ধারের টাকা ফেরানোর দাবি, জীবন্ত জ্বালিয়ে দেওয়া হল দলিত শিক্ষিকাকে
মৃত শিক্ষক অনিতা অভিযুক্তকে আড়াই লাখ টাকা ধার দিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। বেশ কয়েকদিন ধরেই অভিযুক্তের কাছে টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি করেন তিনি। বারবার টাকা ফেরতের দাবি করায় অভিযুক্তরা শিক্ষককে মারধর এবং গালিগালাজ করে বলে জানা গিয়েছে। এই বিষয়ে গত ৭ মে রাইসার থানায় একটি মামলাও করেন অনিতা। জানা গিয়েছে, শিক্ষিকার অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিস কোনঅ ব্যবস্থা না নেওয়ার সুযোগ নিয়ে তাকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছে দুষ্কৃতিরা।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: রাজস্থানের জালোরে এক দলিত ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনার এখনও নিষ্পত্তি হয়নি। এর মাঝেই জয়পুরে এক দলিত মহিলা শিক্ষককে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়। স্কুলে যাওয়ার সময় ওই মহিলাকে পেট্রোল ঢেলে তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় দুষ্কৃতিরা। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গুরুতর আহত হন ওই শিক্ষক। মঙ্গলবার গভীর রাতে এসএমএস হাসপাতালে মারা যান। গত ১০ অগস্ট এই ঘটনাটি ঘটে। যার ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসে বুধবার। জানা গিয়েছে, চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি জয়পুরের রাইসার গ্রামে ঘটেছে। গত ১০ আগস্ট সকাল আটটা নাগাদ রেগারোঁ এলাকার ৩২ বছরের শিক্ষক অনিতা রেগার তার ছয় বছর বয়সি ছেলে রাজবীরকে নিয়ে বীণা মেমোরিয়াল স্কুলে যাচ্ছিলেন। এই সময় কয়েকজন দুষ্কৃতি তাকে ঘিরে ধরে হামলা চালায়। তাদের হাত থেকে বাঁচতে পাশের একটি বাড়িতে ঢুকে পড়ে অনিতা। তার সাহাজ্যের জন্য ১০০ ডায়ালে তথ্য দেওয়া হইয়। যদিও দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সেখানে পুলিস পৌঁছায়নি বলেই জানা গিয়েছে।
এরপরেই সুযোগ বুঝে ওই শিক্ষকের গায়ে পেট্রল ঢেলে দেয় দুষ্কৃতিরা। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় সাহাজ্যের আবেদন জানালেও, কেউ তার সাহাজ্যের জন্য এগিয়ে আসেনি বলেই জানা গিয়েছে। এই ঘটনার খবর পেয়ে ওই শিক্ষকের স্বামী তারাচাঁদ তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। স্ত্রীকে জামভারমগড়ের সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান তিনি। সেখানে ৭০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া অনিতাকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর জয়পুরের এসএমএস হাসপাতালে রেফার করা হয়।
মৃত শিক্ষক অনিতা অভিযুক্তকে আড়াই লাখ টাকা ধার দিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। বেশ কয়েকদিন ধরেই অভিযুক্তের কাছে টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি করেন তিনি। বারবার টাকা ফেরতের দাবি করায় অভিযুক্তরা শিক্ষককে মারধর এবং গালিগালাজ করে বলে জানা গিয়েছে। এই বিষয়ে গত ৭ মে রাইসার থানায় একটি মামলাও করেন অনিতা। জানা গিয়েছে, শিক্ষিকার অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিস কোনঅ ব্যবস্থা না নেওয়ার সুযোগ নিয়ে তাকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছে দুষ্কৃতিরা।
আরও পড়ুন: জন্মাষ্টমীতে ঈদগাহে প্রার্থনার দাবি, এবিএইচএম নেতার রক্তে লেখা চিঠি যোগীকে
মৃত শিক্ষকের স্বামী তারাচাঁদ মোট দশ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন। রামকরণ, বাবুলাল, গোকুল, মূলচাঁদ, সুরেশ চাঁদ, আনন্দী, প্রহ্লাদ রেগার, সুলোচনা, সরস্বতী ও বিমলার বিরুদ্ধে তার স্ত্রীর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়ার অভিযোগ করেছেন তারাচাঁদ। অন্যদিকে তারাচাঁদ জানিয়েছেন, অভিযোগ পাওয়ার পরও পুলিস অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এখন পর্যন্ত একজন অভিযুক্তও গ্রেফতার হয়নি বলে জানা গিয়েছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে ওই শিক্ষকের মৃত্যুর পরে ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। এরপরই গোটা বিষয়টি সামনে আসে।
এর আগে জালোরের সায়লা থানা এলাকার সুরানা গ্রামের নয় বছর বয়সী ইন্দ্র মেঘওয়াল এক শিক্ষকের মারধরের কারণে মারা যায়। ইন্দ্র সরস্বতী বিদ্যা মন্দির স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়তেন ইন্দ্র। অভিযোগ, ২০ জুলাই স্কুলে রাখা পাত্র থেকে জল খায় শিশুটি। এই কারনে শিক্ষক ছাইল সিং তাকে মারধর করেন। ওই শিশুকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদয়পুর এবং আহমেদাবাদে নিয়ে যাওয়া হয়। ২৪ দিন চিকিৎসার পরে শনিবার আহমেদাবাদে তাঁর মৃত্যু হয়। অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিস।