দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে প্রস্তুত, বিদেশে বললেন রাহুল

Updated By: Sep 12, 2017, 08:56 PM IST
দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে প্রস্তুত, বিদেশে বললেন রাহুল

ওয়েব ডেস্ক: দেশের প্রধানমন্ত্রীত্বের জন্য সামনে থেকে লড়তে চাই, বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে জানিয়ে দিলেন রাহুল গান্ধী। বার্কলের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার মঞ্চে দাঁড়িয়ে আগামী লোকসভা নির্বাচনে মোদীর সঙ্গে সম্মুখ সমরে নামতে তিনি যে প্রস্তুত তা জানাতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করলেন না সোনিয়া-নন্দন।

দু'সপ্তাহের মার্কিন সফরে মঙ্গলবার রীতিমতো অচেনা মেজাজে দেখা যায় কংগ্রেস সহসভাপতিকে। প্রধানমন্ত্রীত্বের প্রশ্নের পরই সঞ্চালকের তরফ থেকে একের পর এক বাউন্সার আসতে থাকে রাহুলের দিকে। আর সেসব কঠিন বল আগ্রাসী মেজাজে খেললেন রাহুল। প্রধানমন্ত্রীত্ব সংক্রান্ত প্রশ্নটা যদি ওভারের প্রথম বল হয়, শেষ বলও স্টেপ আউট করে খেললেন নির্দ্বিধায়। রাহুল আদতে পরিবারতন্ত্রের ফসল, সঞ্চালকের এমন খোঁচা দেওয়া প্রশ্নে 'যুবরাজে'র হাল্কা চালে উত্তর, "অখিলেশ যাদব, এডিএমকের স্টালিন, অভিষেক বচ্চনও তো পরিবারতন্ত্র থেকে এসেছেন। অম্বানি ভাইয়েরাও সেই একই সূত্র থেকে এসেছেন। তাহলে কেন শুধু আমাকে আক্রমণ! বরং বিবেচ্য হওয়া উচিত, সে সব মানুষ কতটা দক্ষ।"

আগামী লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী পদে লড়তে চাওয়ার বিষয়ে  সঞ্চালকের প্রশ্নে, রাহুল বেশ আত্মবিশ্বাসী সুরে বলেন, "হ্যাঁ, আমি লড়তে প্রস্তুত।" কিন্তু "আমাদের সাংগঠনিক দল। এই সিদ্ধান্ত তারাই নেবে। ইতিমধ্যেই প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে। দল যা সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই চূড়ান্ত"- বলে নিজেকে দলের অনুগত সৈনিক হিসাবেও চিহ্নিত করলেন।

ইন্দিরা এবং রাজীব গান্ধীর হত্যার পর যখনই গান্ধী পরিবারের সদস্য সোনিয়াকে প্রধানমন্ত্রী করার দাবি উঠেছে, তখনই বিশেষ কারণ দেখিয়ে পদে না বসে 'সরকারের মূল চালিকা শক্তি' হয়ে থেকেছেন তিনি, এমনটাই শোনা যায় রাজনৈতিক মহলে কান পাতলে। পরবর্তীকালে রাহুলকেও দল ও সরকারে প্রধান মুখ করার ক্ষেত্রেও বার বার দ্বিধা প্রকাশ করে এসেছে নেহেরু-গান্ধী পরিবার বলে মনে করা হয়। ফলে, গান্ধী পরিবারের এতদিনকার লাইন থেকে বেরিয়ে এসে রাহুল যে কথা শোনালেন তা তাত্পর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনীতি বিশেষজ্ঞরা । 

আরও পড়ুন- সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘন করে হামলা, নওসেরা লক্ষ্য করে ফের গুলি চালাচ্ছে পাকিস্তান  

এই প্রথম রাহুলের কণ্ঠে প্রশংসিত হলেন নরেন্দ্র মোদী। তবে প্রশংসার পিছনেই ছিল সুতীব্র সমালোচনাও। মোদীকে ‘উচ্চমানের কমিউনিকেটর’ বলে উল্লেখ করা রাহুল পরক্ষণেই জানালেন তিনি প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক নীতির সঙ্গে একেবারেই সহমত নন। পাশাপাশি, এ দিন রাহুলের বক্তব্যে উঠে আসে বিজেপির হিংসাত্মক এবং বিদ্বেষমূলক রাজনীতির প্রতি সমালোচনাও। গৌরী লঙ্কেশের হত্যায় মোদী সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে তিনি সম্প্রতিককালের  গোরক্ষার নামে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর গণপিটুনিকেও একহাত নেন। 

আরও পড়ুন-আজও আম্মাই প্রধান, পদচ্যুত শশীকলা

সব মিলিয়ে এই বিদেশ সফরের ফাঁকে এক চিলতে হলেও প্রকাশিত হলেন অন্য রাহুল। আবার ইতিহাস সম্পর্কে ওয়াকিবহাল মহল রাহুলের এদিনের বক্তব্য রাখার সঙ্গে যোগসূত্র খুঁজে পাচ্ছেন আরেক ভারতীয় রাজনীতিকেরও।  ১৯৪৯-এ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দিয়েছিলেন রাহুলের ঠাকুমার বাবা জওহরলাল নেহেরু। ৬৮ বছরের ব্যবধানে সেই একই মঞ্চে দাঁড়ালেন রাহুল। তফাত্ শুধু প্রধানমন্ত্রিত্বে!

.