শরিকি সায়েই পেট্রোলের বিনিয়ন্ত্রণ, সাফাই প্রণবের
প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে কথা বলার পর পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে তৃণমূলের ক্ষোভ কমবে। এমনটাই আশা করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়।
প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে কথা বলার পর পেট্রলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে তৃণমূলের ক্ষোভ কমবে। এমনটাই আশা করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে গত বছর পেট্রোলের মূল্য নিয়ন্ত্রণ তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে জোটশরিক তৃণমূল কংগ্রেসের সম্মতির কথাও 'স্মরণ' করিয়ে দিলেন তিনি। তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট, পেট্রোলের সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধির পিছনে পরোক্ষ সায় রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস-সহ জোটশরিকদের।
শুক্রবার রাত দশটায় দিল্লি থেকে কলকাতায় পৌঁছন প্রণববাবু। ঢাকুরিয়ার বাড়িতে সাংবাদিকরা প্রণববাবুর কাছে জানতে চান, মমতা ব্যানার্জি তার কাছে দফায় দফায় পেট্রোপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে আপত্তি জানিয়েছেন কি না। এর উত্তরে কোনও মন্তব্য করতে চাননি প্রণববাবু। পাশাপাশি ইউপিএ দুই সরকারের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নেওয়ার তৃণমূল কংগ্রেসের হুমকি নিয়েও কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে অস্বীকার তিনি। কিন্তু আজ সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, কেন তেল সংস্থাগুলো তেলের দাম বাড়াল, কীসের ভিত্তিতে দাম বাড়ল, তার ব্যাখ্যা দেবেন তিনি। প্রতিশ্রুতি মতোই দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধির সাফাই দেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচা তেলের দাম বাড়ার কারণে দেশীয় তেল কোম্পানিগুলির বিপুল ক্ষতি হচ্ছিল। তাই তেল সংস্থাগুলির দাবি মেনে মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্তে সায় দিতে হয়েছে কেন্দ্রকে। এই ইস্যুতে তৃণমূল-সহ শরিক দলগুলির ভূমিকা নিয়েও কার্যত প্রশ্ন তোলেন তিনি। ২০১০ সালে পেট্রোলের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা তেল সংস্থাগুলির হাতে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ইউপিএ সরকার। মন্ত্রিগোষ্ঠীর যে বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তাতে তৃণমূল-সহ সমস্ত শরিক দলের প্রতিনিধিরাই হাজির ছিলেন। প্রণববাবু মনে করিয়ে দিয়েছেন, সে সময় কোনও শরিকের তরফেই সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলায় হয়নি। উল্লেখ্য, পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরব হওয়ার পর মূল্য বিনিয়ন্ত্রণের সময় তৃণমূলের ভূমিকা নিয়ে ঠিক এই প্রশ্নই তুলেছে বাম দলগুলি।
তৃণমূলের পাশাপাশি ডিএমকে, এনসিপি'র মতো ইউপিএ জোটের শরিক দলগুলির তরফেও ইতিমধ্যে পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আজ বিকেলে বৈঠকে বসছে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটি। ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী এবং কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ও। পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধির জেরে প্রবল চাপের মুখে কংগ্রেস। তার উপর উত্তরপ্রদেশ-সহ কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন এগিয়ে আসছে। এর জেরেই দলের মধ্যেই আশঙ্কা, পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে আমজনতার মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। গতকাল জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকেই প্রধানমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছিলেন পেট্রোলের দাম কমার সম্ভাবনা ক্ষীণ। কিন্তু অনুমান, আজ বিকেলের বৈঠকে দলের তরফ থেকেই পেট্রোলের দাম কমানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর ওপর চাপ দেওয়া হবে।