রাজনীতির অঙ্ক ঝুঁকে প্রণবের দিকেই
কংগ্রেস এখনও তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। তবে দশ জনপথ সূত্রের খবর, প্রণব মুখোপাধ্যায়কেই প্রার্থী করতে পারেন সোনিয়া গান্ধী। প্রণববাবুর নাম নিয়ে জল্পনা মাথাচাড়া দেওয়ার পর সমর্থনের সমীকরণও অনেকটাই পাল্টে গেছে। দিল্লির রাজনীতির অঙ্ক বলছে, প্রণববাবুর নামে আপত্তি না-ও তুলতে পারে তৃণমূল।
কংগ্রেস এখনও তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। তবে দশ জনপথ সূত্রের খবর, প্রণব মুখোপাধ্যায়কেই প্রার্থী করতে পারেন সোনিয়া গান্ধী। প্রণববাবুর নাম নিয়ে জল্পনা মাথাচাড়া দেওয়ার পর সমর্থনের সমীকরণও অনেকটাই পাল্টে গেছে। দিল্লির রাজনীতির অঙ্ক বলছে, প্রণববাবুর নামে আপত্তি না-ও তুলতে পারে তৃণমূল। সেইসঙ্গে অন্যান্য দলের সমর্থনও পেয়ে যেতে পারেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। ফলে অনেকটাই পাল্লা ভারি সাকিন কীর্ণাহারের এই রাজনীতিকের।
সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করতে গতকালই দিল্লি পৌঁছেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে কংগ্রেস সভানেত্রীর সঙ্গে তাঁর বৈঠক। দশ জনপথ সূত্রের খবর, প্রণব মুখোপাধ্যায়ের নাম নিয়ে একরকম সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছেন সোনিয়া গান্ধী। জল্পনা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্মতি পেলেই তাঁর নাম সামনে আনবে কংগ্রেস।
কিন্তু প্রশ্ন হল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি রাষ্ট্রপতি পদে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের নাম সমর্থন করবেন? বেশ কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ সামনে উঠে আসছে।
১- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মূল আপত্তি ছিল, তাঁর সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি। সোনিয়ার সঙ্গে বৈঠকের পর সেই অভিযোগের অবকাশ থাকবে না।
২- বাঙালি হিসাবে এই প্রথম কোনও ব্যক্তির নাম রাষ্ট্রপতি পদের জন্য সামনে উঠে আসছে। এই অবস্থায় বাঙালি আবেগের কথা মাথায় রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তি করার সুযোগ নেই।
৩-ইউপিএ-র প্রার্থীতে আপত্তি করলে সেক্ষেত্রে বিজেপির প্রার্থীকে সমর্থন করতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কের দিকে তাকিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রীর পক্ষে তা সম্ভব নয়।
৪- এসপি, বিএসপি, এআইএডিএমকে-র সঙ্গে তৃণমূলের কথা হলেও রাষ্ট্রপতি পদে কোনও সর্বসম্মত নাম ঠিক হয়নি। ফলে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থন করা ছাড়া বিকল্প নেই।
৫- প্রণব মুখোপাধ্যায়ের নাম ইতিমধ্যেই সমর্থন পেয়েছে অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের। এই অবস্থায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে একক বিরোধিতার কোনও সুযোগ নেই।
৬- শেষ পর্যন্ত উপরাষ্ট্রপতি পদে যশবন্ত সিংয়ের নাম মেনে নিলে প্রণব মুখোপাধ্যায় ক্ষেত্রে বিজেপিরও সমর্থন পেতে পারে কংগ্রেস। সেক্ষেত্রে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে পারেন প্রণববাবু।
৭-রাজনৈতিক অঙ্ক বলছে, প্রণব মুখোপাধ্যায় প্রার্থী হলে এবং বিজেপিও প্রার্থী দিলে, পাল্লা ভারি প্রণববাবুর দিকেই। ফলে তৃণমূলের সমর্থন না পেলেও প্রণববাবুই এগিয়ে থাকবেন।
৮-রাজ্যের অর্থনৈতিক প্যাকেজ নিয়ে প্রণববাবুর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত পর্যায়ে কিছু ক্ষোভ আছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু তারপরও সরাসরি প্রণববাবুর বিরোধিতা করা কঠিন তৃণমূলের পক্ষে। কারণ, রাজ্য এখনও পর্যন্ত যে বাড়তি অগ্রাধিকার পেয়েছে তাতে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সহযোগিতার কথা সকলের জানা।