আত্মসমর্পণ করছেন মাওবাদী নেতা গণপতি! জল্পনা উড়িয়ে দিলেন না বস্তারের আইজি
মাওবাদী এই নেতার ঘাঁটি মূলত অবুজমারের জঙ্গল। সূত্রের খবর, সেখান থেকে তিনি সম্প্রতি তেলঙ্গানার দিকে চলে গিয়েছেন
মৌপিয়া নন্দী
আত্মসমর্পণ করতে চান মাওবাদী নেতা গণপতি! এমনই এক খবরে তোলপাড় তেলঙ্গানা।
রাজ্য প্রশাসনিক মহলে জোর জল্পনা, শরীর ভালো যাচ্ছে না ৭৪ বছরের বৃদ্ধ মাও নেতা মুপালা লক্ষ্ণণ রাও ওরফে গণপতির। তাই আত্মসমর্পণের কথা ভাবছেন তিনি। তবে এনিয়ে তেলঙ্গানার প্রশাসনিক মহলের কেউই জোর দিয়ে কিছু বলেননি। কিন্তু সেই জল্পনা উড়িয়ে দিলেন না, ছত্তীসগঢ়ের বস্তারের আইজি সুন্দর রাজ।
আরও পড়ুন-১৫ সেপ্টেম্বর থেকে চলতে পারে রেল, আলোচনার পরই সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য
জি ২৪ ঘণ্টাকে সুন্দর রাজ বলেন, মাওবাদী নেতা গণপতি আত্মসমর্পণ করতে পারেন বলে জল্পনা তৈরি হয়েছে। আত্মসমর্পণের ব্যাপারে গণপতির সঙ্গে সরকারিভাবে তেলঙ্গানা কিংবা অন্ধ্র সরকারের কোনও কথা হয়েছে বলে জানা যায়নি। তবে মাও নেতার বয়স ও তার স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রাখলে আত্মসমর্পণের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। উনি যদি আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেন তাহলে তা তিনি করতে পারেন তেলঙ্গানা কিংবা অন্ধ্রে। গোটা বিষয়টির ওপরে আমরা কড়া নজর রাখছি।
গত তিন দশক ধরে পুলিসের নাগাল এড়িয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন প্রবল প্রতাপশালী এই মাও নেতা। ছত্তীসগঢ়ের সুকমা, দান্তেওয়াড়া ছাড়াও গড়চিরৌলি সহ একাধিক জায়গায় মাওবাদী অপারেশনের মাথা বলে গণপতিকে মনে করা হয়। ২০১২ সালের ২১ এপ্রিল সুকমার ডিএম অপহরণকান্ড, ২০১৩ সালে মহেন্দ্র কর্মা-সহ কংগ্রেসের একাধিক নেতাকে এক অপারেশনে হত্যা করে মাওবাদীরা।
মাওবাদী এই নেতার ঘাঁটি মূলত অবুজমারের জঙ্গল। সূত্রের খবর, সেখান থেকে তিনি সম্প্রতি তেলঙ্গানার দিকে চলে গিয়েছেন। মাওবাদী নেতা কিষেণজি যেমন মাঝে মধ্যেই সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিতেন গণপতি কিন্তু গত তিন দশকের অধিকাংশ সময়েই থেকেছেন প্রচার মাধ্যমের আড়ালে। ফলে তার নাগাল পাওয়ার কাজটা আরও শক্ত হয়ে গিয়েছে পুলিসের কাছে। তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, ছত্তীসগঢ়, ওড়িশায় গণপতির নামে শতাধিক মামলা রয়েছে। তার মাথার দামও কোটি টাকা।
তেলঙ্গানা রাজ্য গোয়েন্দা দফতর সূত্রে সংবাদমাধ্যমের খবর, বিভিন্ন ভাবে প্রতিনিধির মাধ্যমে আত্মসমর্পণের ইঙ্গিত দিচ্ছেন গণপতি। তবে তাঁর কিছু শর্তও রয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে, চিকিত্সার সুযোগ দিতে হবে তাঁকে।
এনিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি রাজ্যের ডিজিপি এম মহেন্দ্র রেড্ডি। তবে প্রশাসন সূত্রে খবর, 'শুনতে পাওয়া যাচ্ছে গণপতি ধরা দিতে চান তাবে সরকারিভাবে এখনও যোগাযোগ করা হয়নি।' প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে দলের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরে আসেন গণপতি। তাঁর জায়গায় আসেন নাম্বালা কেশব রাও।
আরও পড়ুন-৭ তারিখ থেকে ধাপে ধাপে চালু, ১২ সেপ্টেম্বর থেকে স্বাভাবিক হবে মেট্রো চলাচল, জানাল কেন্দ্র
এদিকে, এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, গোয়েন্দারা মনে করছেন ২৮-২৯ অগাস্টের মধ্যে দান্তেওয়াড়া থেকে গড়চিরৌলি হয়ে তেলঙ্গানার উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছেন গণপতি। সম্প্রতি তিনি মাওবাদী শীর্ষপদ ছেড়েছেন। স্বাস্থ্যের কারণে তিনি ধরাও দিতে পারেন।
প্রসঙ্গত, তেলঙ্গানার জগতাইলার বীরপুর গ্রামে জন্ম গণপতির। কৃষক পরিবারের সন্তান গণপতি করিমনগর কলেজ থেকে বিজ্ঞানে স্নাতক ও বিএড করেন। তার পর থেকে সিপিআই(মাওবাদী)-কে নেতৃত্ব দেন প্রায় তিন দশক। এতদিন ধরে তাঁর টিকি ছুঁতে পারেনি পুলিস।