দেখা হল কথা হল না, সংসদ হামলার বর্ষপূর্তিতে মুখোমুখি মোদী-মনমোহন
সৌজন্যের এই দৃশ্য যে এত তাড়াতাড়ি চোখে পড়বে তা কার্যত কল্পনার অতীত ছিল
নিজস্ব প্রতিবেদন: সামনে দাঁড়িয়ে প্রাক্তন। পেছন থেকে এগিয়ে এসে তাঁর সামনে করজোড়ে বর্তমান। শুধু তাই নয় ডঃ মনমোহন সিং-এর সঙ্গে হাতও মেলালেন নরেন্দ্র মোদী। পাশে দাঁড়িয়ে সোনিয়া গান্ধী। দু'দিন আগেও এই দৃশ্য অকল্পনীয় ছিল। গুজরাট নির্বাচন উপলক্ষে একে অপরকে যেভাবে নিশানা করেছিলেন তাতে এমন সৌজন্যের দৃশ্য যে এত তাড়াতাড়ি চোখে পড়বে সে কথা কার্যত কল্পনার অতীত ছিল।
#Delhi Prime Minister Narendra Modi meets former PM Manmohan Singh at the Parliament. pic.twitter.com/PZeiDmoE69
— ANI (@ANI) December 13, 2017
সংসদ হামলার ১৬তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে বুধবার শহিদদের শ্রদ্ধা জানালেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, মনমোহন সিং, রাজনাথ সিং, সুমিত্রা মহাজন, বেঙ্কাইয়া নাইডুরা। সংসদ ভবনের বাইরে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাহুল গান্ধী, রবিশঙ্কর প্রসাদ, সুষমা স্বরাজরাও। আর সেখানেই দেখা হয়ে গেল বর্তমান ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর। সামনাসামনি দেখা হল, শুভেচ্ছা বিনিময়ও হল তবে কোনও কথা হল না।
উল্লেখ্য, গুজরাট নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, বিজেপিকে হারানোর জন্য পাকিস্তানের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করছে কংগ্রেস। গুজরাটে আহমেদ প্যাটেলকে মুখ্যমন্ত্রী করতে চাইছে পাকিস্তান। প্রধানমন্ত্রীর আক্রমণের লক্ষ্য ছিল ৬ ডিসেম্বর মণিশঙ্কর আইয়ারের বাড়িতে অনুষ্ঠিত হওয়া একটি নৈশভোজ। সেদিন ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিতি ছিলেন, পাক হাই কমিশনার, প্রাক্তন পাক বিদেশমন্ত্রী, মনমোহন সিং, সলমন হায়দার, প্রাক্তন সেনাপ্রধান দীপক কাপুর সহ একাধিক সাংবাদিক। আর সেখানে বসেই পাক হস্তক্ষেপের ছক রচনা হয়েছিল বলে অভিযোগ বিজেপির।
Delhi: Congress President-elect Rahul Gandhi, Union Minister Ravi Shankar Prasad and EAM Sushma Swaraj at the Parliament where they arrived to pay tribute to people who lost lives in 2001 Parliament attack pic.twitter.com/dIfgGYKjHL
— ANI (@ANI) December 13, 2017
বিজেপির এমন আক্রমণে তেতে ওঠে কংগ্রেস। খোদ মনমোহন বিবৃতি দেন। তাঁর দশ বছরের প্রধানমন্ত্রীত্বে প্রকাশ্যে খুব বেশিবার কথা বলেননি মনমোহন। কোনও রাজনৈতিক বিতর্ক নিয়ে তো নয়ই। এবার একেবারে সরাসরি মোদীকেই নিশানা করেন অর্থনীতিবিদ। মনমোহন সিং এক বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘মিথ্যাচার করছেন প্রধানমন্ত্রী। মণিশঙ্কর আইয়ারের বাড়ির নৈশভোজে গুজরাট নির্বাচন নিয়ে কোনও কথা হয়নি। বরং কথা হয়েছে ভারত-পাক সম্পর্ক নিয়ে। প্রধানমন্ত্রী যা প্রচার করছেন তা প্রধানমন্ত্রী পদের অপমান। এর জন্য তিনি দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চান।’
আদ্যপান্ত নম্র, শান্ত মনমোহন যে এভাবে প্রতিক্রিয়া দেবেন তা হয়তো ভাবতে পারেনি বিজেপি শিবির। ফলে, কংগ্রেস-বিজেপের তরজা জমে ওঠে। আজ সংসদ চত্ত্বরে মোদী-মনমোহন সাক্ষাতে দুজনের মধ্যে সেই বরফ হয়তো কিছুটা গললেও গলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ১৩ ডিসেম্বর আচমকাই নিরাপত্তারক্ষীদের এড়িয়ে সংসদ চত্ত্ববরে ঢুকে পড়ে লস্কর ও জৈশ এর ৫ জঙ্গি। তাদের গুলিতে মৃত্যু হয় ১ সাধারণ নাগরিক সহ ১২ নিরাপত্তারক্ষীর। ঘটনার দিন অধিবেশন মুলতুবি হয়ে যাওয়ার মিনিট চল্লিশ পর ভেতরে ঢুকে পড়ে জঙ্গিরা। তখন সংসদের ভেতরে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ী, সনিয়া গান্ধী, লালকৃষ্ণ আডবানি-সহ একাধিক মন্ত্রী-সাংসদরা। নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে গুলির লড়াই সেখানেই মৃত্যু হয় জঙ্গিদের।
আরও পড়ুন-কয়লা কেলেঙ্কারিতে দোষী সাব্যস্ত ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মধু কোড়া-সহ ৮