হিসারে জয়ী কুলদীপ, চার রাজ্যের উপনির্বাচনে ভরাডুবি কংগ্রেসের
পরাজয় প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু টিম আন্নায় প্রচারের অভিঘাতে যে এভাবে দলের ভোটব্যাংকে ধস নামবে তা আঁচ করতে পারেনি কংগ্রেস হাইকম্যান্ড।
পরাজয় প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু টিম আন্নায় প্রচারের অভিঘাতে যে এভাবে দলের ভোটব্যাংকে ধস নামবে তা আঁচ করতে পারেনি কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। হিসার লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে সুতোর ব্যবধানে জামাতন বাঁচিয়ে সোনিয়া গান্ধির দল জাঠ মুলুকে কার্যত অস্তিত্বের সঙ্কটের মুখে। শুধু হরিয়ানার হিসার নয়, অন্য তিন রাজ্যের তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনেও ভরাডুবি হয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোটের।
হরিয়ানার হিসার লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছেন হরিয়ানা জনহিত কংগ্রেসের প্রার্থী কুলদীপ বিশনই। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লোকদল (আইএনএলডি) প্রার্থী অজয় চৌতালার সঙ্গে তাঁর ভোটের ব্যবধান ৬,৩২৩। কুলদীপ ৩,৫৫,৯৪১ এবং চৌতালা ৩,৪৯,৬১৮ টি ভোট পেয়েছেন। ১,৪৯,৭৮৫ টি ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে থাকা কংগ্রেস প্রার্থী জয়প্রকাশ কোনওক্রমে নিজের জামানতটুকু রক্ষা করেছেন।
২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ২,৪৮,৪৭৬ ভোট পেয়ে উত্তর হরিয়ানার হিসার কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন হরিয়ানা জনহিত কংগ্রেসের সভাপতি ভজনলাল। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আইএনএলডি প্রার্থী সম্পত সিং পান ২,৪১,৪৯৩ ভোট। ২,০৪,৫৩৯ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে ছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী জয়প্রকাশ। এবার তৃতীয় স্থানে থাকলেও জয়প্রকাশের ভোট অনেকটাই কমে গিয়েছে। অন্যদিকে আইএনএলডি সুপ্রিমো ওমপ্রকাশ চৌতালার বড় ছেলে অজয় সিংকে প্রার্থী করেও জাঠ আনুকূল্য পায়নি চৌধুরি দেবীলালের দল। ভোটের প্রচারে সমস্ত দুর্নীতিগ্রস্ত প্রার্থীকে বর্জন করার জন্য ভোটারদের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন আন্না হাজারে। আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন সম্পত্তির একাধিক মামলায় অভিযুক্ত অজয়কে তার ফল ভুগতে হয়েছে। পাশাপাশি বিজেপির সমর্থন আর আন্না ম্যাজিকে ভর করে জনতার দরবারে জয় পেয়েছেন প্রয়াত ভজনলালের ছোট ছেলে কুলদীপ। যদিও এদিন ভোটগণনা শুরুর পরই তাত্পর্যপূর্ণ ভাবে টিম আন্নাকে কটাক্ষ করেন কুলদীপ। নিজেকে জনলোকপাল বিলের একনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে দাবি করার পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, আন্নাদের উচিত ছিল নিজেদের শুধুমাত্র কংগ্রেস বিরোধী প্রচারে সীমাবদ্ধ না রেখে দুর্নীতিগ্রস্থ অজয় চৌতালার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া। এমনকী প্রয়াত পিতার প্রতি হিসারবাসীর সহানুভূতির কথা বললেও ভোটে ফলাফলে আন্নার আবেদনের প্রভাবের কথাও স্বীকার করেননি কুলদীপ।
শুধু হিসার লোকসভা কেন্দ্র নয়, আজ গণনা হওয়া তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনেও মুখ থুবড়ে পড়েছে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট। অন্ধ্রপ্রদেশের বাঁশওয়াড়া আসনে ৪৯,৯৪৯ ভোটে কংগ্রেস প্রার্থীকে হারিয়ে দিয়েছে কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি। মহারাষ্ট্রের পুনে জেলার খড়গভাসলায় বিজেপি-শিবসেনা-আরপিআই জোটের কাছে ৪০০০ ভোটে পরাজিত হয়েছে কংগ্রেস-এনসিপি জোটের প্রার্থী হর্ষাদা ওয়াঞ্জালে। এখানে ব্যক্তিগত উদ্যোগে মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার প্রয়াত বিধায়ক রমেশ ওয়াঞ্জালের স্ত্রীকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছিলেন এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ারের ভাইপো তথা মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার। কিন্তু ভোটের ময়দানে সহানুভূতি ঢেউ তুলতে ব্যর্থ হয়েছে শাসকজোট। অন্যদিকে বিহারের দারোন্দা কেন্দ্রে জনতা দল (ইউনাইটেড) প্রার্থীকে জিতিয়ে এনে ফের নিজের ক্যারিশমার প্রমাণ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। হিসারের মতোই এখানেও কংগ্রেসকে 'পুওর থার্ড' হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। দ্বিতীয় স্থান পেয়েছে আরজেডি।