স্যানিটারি ন্যাপকিনে লিঙ্গ বৈষম্য ও ধর্ষণ সংস্কৃতি বিরোধী স্লোগান লিখে ক্যাম্পাসে ছড়ালেন জামিয়ার পড়ুয়ারা

দেশে বেড়ে চলা লিঙ্গ বৈষম্য, ধর্ষণ 'সংস্কৃতি'র বিরুদ্ধে অভিনব এক প্রতিবাদের রাস্তা ধরলেন জামিয়ার একদল পড়ুয়া। বেনামে জামিয়া ক্যাম্পাস জুড়ে স্যানিটারি ন্যাপকিনের উপর লিঙ্গ বৈষম্য ও ধর্ষণ বিরোধী স্লোগান লিখে বিভিন্ন জায়গায় সেঁটে দিল পড়ুয়ারা।

Updated By: Mar 13, 2015, 03:47 PM IST
স্যানিটারি ন্যাপকিনে লিঙ্গ বৈষম্য ও ধর্ষণ সংস্কৃতি বিরোধী স্লোগান লিখে ক্যাম্পাসে ছড়ালেন জামিয়ার পড়ুয়ারা

ওয়েব ডেস্ক: দেশে বেড়ে চলা লিঙ্গ বৈষম্য, ধর্ষণ 'সংস্কৃতি'র বিরুদ্ধে অভিনব এক প্রতিবাদের রাস্তা ধরলেন জামিয়ার একদল পড়ুয়া। বেনামে জামিয়া ক্যাম্পাস জুড়ে স্যানিটারি ন্যাপকিনের উপর লিঙ্গ বৈষম্য ও ধর্ষণ বিরোধী স্লোগান লিখে বিভিন্ন জায়গায় সেঁটে দিল পড়ুয়ারা।

কী কী লেখা আছে এই স্যানিটারি ন্যাপকিন গুলির উপর?

''মাসিকের রক্ত নয়, অশুদ্ধ তোমার ভাবনা।''
''মেন্সট্রুয়েসন স্বাভাবিক, ধর্ষণ নয়।''
''দিল্লির রাস্তার উপর মেয়েদেরও সমান অধিকার আছে।''
''ধর্ষকরা মানুষকে ধর্ষণ করে, তার পোশাককে নয়।''
''কন্যা কুমারি, নোংরা ভাবনা তোমারই।''

স্যানিটারি ন্যাপকিনে লেখা রয়েছে এই ধরণেরই বেশ কিছু বক্তব্য।

এ বছরের আন্তর্জাতিক নারী দিবসে #প্যাডসআগেনস্টসেক্সিজিম (#padsagainstsexism) নামে সারা বিশ্বজুড়েই লিঙ্গবৈষম্য বিরোধী একটি প্রচার শুরু করা হয়। এই প্রচারেই উৎসাহিত হয়ে প্রতিবাদের হাতিয়ার রূপে এবার স্যানিটারি ন্যাপকিনকে বেছে নিলেন জামিয়ার পড়ুয়ারা।

গতবছর শুরুটা করে ছিলেন জার্মানির এক যুবতী এলোন কাস্ত্রাতিয়া। ''পিরিয়ড নিয়ে পুরুষরা যতখানি বিরক্ত, তারা যদি ধর্ষণ নিয়েও একই রকম বিরক্ত হতেন, ভাবুনতো তাহলে কেমন হত?'' এই বক্তব্য প্যাডের উপর লিখে পাবলিক স্পেসে সাঁটতে শুরু করেন এলোন।

সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এলোনের #padsagainstsexism সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পরে।

জামিয়ার পড়ুয়ারা স্বীকার করেছেন এলোনের এই পদক্ষেপ তাঁদেরও  ধর্ষণ ও লিঙ্গ বিরোধী আন্দোলনের এক নতুন দিশা দেখিয়েছে।

জামিয়ার এক ছাত্রী জানিয়েছেন ''যে দেশে এখনও লিঙ্গ বৈষম্য বা সেক্সিসিমের মাত্রা লাগামছাড়া সেখানে জন সচেতনতা বৃদ্ধি করার একটা চেষ্টা শুরু করেছি আমরা। আমাদের বক্তব্য অত্যন্ত স্পষ্ট। পিরিয়ডস নিয়ে সামাজিক যে অবান্তর গোঁড়ামি আছে, সেগুলো উপড়ে ফেলতে চাই আমরা। বোঝাতে চাই মেন্সট্রুয়েসন একটি অত্যন্ত স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া ছাড়া আর কিছুই না। প্রাত্যহিক জীবলে কীভাবে লিঙ্গ বৈষম্য ছড়িয়ে আছে আমাদের প্যাড কথা বলেছে তার বিরুদ্ধেই। আওয়াজ তুলেছে ধর্ষণ সংস্কৃতির বিরুদ্ধে। আমরা বোঝাতে চাই নারীবাদ মানে সমানুধিকারের লড়াই, পুরুষ বিদ্বেষ নয়। আমরা ভাবনায় বদল আনতে চাই।''

জামিয়ার পড়ুয়াদের পক্ষ থেকে আশা করা হয়েছে এড়িয়ে চলার বদলে  যদি শুধুমাত্র কৌতূহলের বশেও কিছু মানুষ প্যাডের উপর লেখা বক্তব্যগুলি পড়েন, তাহলে অন্তত কয়েক জনের মধ্যে বক্তব্যটা পৌছাবে। হয়ত কিছুটা হলেও কয়েক জনের ভাবনায় বদল আসবে।

 

.