'মুসাফির নয়, মুহাজির হু ইয়ারো', ভারতে চরবৃত্তির জাল ছড়াতে 'মুহাজির কৌশল' ISI-এর

সাত দশকের যন্ত্রনা। প্রলোভন, ব্ল্যাকমেল। ভারতে চরবৃত্তির জাল ছড়াতে কোনও কৌশলই ছাড়ছে না ISI। তাদের নতুন ফর্মূলা, মুহাজির।  

Updated By: Nov 30, 2015, 05:04 PM IST
'মুসাফির নয়, মুহাজির হু ইয়ারো', ভারতে চরবৃত্তির জাল ছড়াতে 'মুহাজির কৌশল' ISI-এর

ওয়েব ডেস্ক:সাত দশকের যন্ত্রনা। প্রলোভন, ব্ল্যাকমেল। ভারতে চরবৃত্তির জাল ছড়াতে কোনও কৌশলই ছাড়ছে না ISI। তাদের নতুন ফর্মূলা, মুহাজির।  

এ ক্ষত জুড়োনোর নয়। ছিন্নমূলের হাহাকার শোনা গেছে সিন্ধুর দুপারেই। দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভাগ হয় দেশ। কিন্তু, দেশের আশায় দেশ ছাড়লেন যাঁরা, নতুন দেশ তাঁদের নিল না। নাম দিল মুহাজির। আরবি এই শব্দের অর্থ উদ্বাস্তু। কিন্তু, পাকিস্তানে মুহাজির মানে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক।

মুহাজির বিদ্রোহ

আটের দশকের শেষে করাচিকে কেন্দ্র করে সংঘবদ্ধ হলেন মুহাজিররা। তৈরি হল মুহাজির কায়ামি মুভমেন্ট, সংক্ষেপে MQM। কঠোরহাতে সেই বিপ্লব দমন করা হল। দেশদ্রোহিতার মামলা হল নেতাদের বিরুদ্ধে। উঠল ভারতের ইন্ধনের অভিযোগও।

ফর্মূলা মুহাজির

তিরিশ বছর পরে সেই মুহাজির মুভমেন্টকেই ব্যবহার করছে ISI। সম্পূর্ণ ভিন্ন ছকে। রনো মামলার ভয় দেখিয়ে MQM আন্দোলনকারীদের ব্ল্যাকমেল করছে ISI। যেসব মুহাজিরের ভারতে আত্মীয় রয়েছে তাঁদের নিশানা করা হচ্ছে। ভারতীয় আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করে চরবৃত্তিতে বাধ্য করা হচ্ছে মুহাজিরদের। কলকাতায় সম্প্রতি ধরা পড়া পাঁচ ISI এজেন্টের ক্ষেত্রেই দেখা গেছে এই মুহাজির ফর্মূলা।

দশ বছর আগে করাচিতে ভাইয়ের কাছে গিয়েই ISI-এর খপ্পরে পড়েন ইরশাদ। ইরশাদের দুই ভাই ইরফান ও ইকবাল বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানে যায়। বৈধ কাগজপত্র না থাকায় সহজেই ISI-এর ব্ল্যাকমেলের শিকার হয় তারা। এর আগেকলকাতায় ধৃত, আখতার ও জাফরকেও মুহাজির ফর্মূলাতেই ফাঁসায় ISI।

আখতার ও জাফরের দাদা ইজরায়েল থাকেন পাকিস্তানে। বৈধ কাগজপত্র ছাড়া পাকিস্তানে গিয়ে ISI-এর খপ্পরে পড়ে তারা। চরবৃত্তির অভিযোগে সম্প্রতি ধরা পড়েছেন রাজৌরির লাইব্রেরিয়ান কায়ফলউল্লা। তাঁর আত্মীয়ও রয়েছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে। মুহাজির ফর্মূলা ছাড়া ISI ব্যবহার করে প্রলোভনের অস্ত্র।

প্রলোভন

মিরাটে ধৃত পাক চর মহম্মদ ইজাজ, জানিয়েছেন অভাবের সংসারে প্রলোভন দেখিয়ে তাকে কাছে টেনেছিল ISI। বাবার মৃত্যুর পর অর্থকষ্টে ভুগছিল মহম্মদ ইজাজের পরিবার। পরিবারের ভরনপোষণ ও দুই বোনের বিয়ের আশ্বাসে তাকে কাছে টানে ISI। কিন্তু, প্রশিক্ষণ নিয়ে বাংলাদেশে পৌছতেই ইজাজের পাকিস্তানি পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়। অর্থাত্‍ তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে দেয় পাকিস্তান। এভাবেই অসহায় যুবকদের ঠেলে দেওয়া হয় চরবৃত্তির অন্ধকারে।

এখন চ্যালেঞ্জ

ভিসা ব্যবস্থার সরলীকরণের পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যোগাযোগ বেড়েছে। পাকিস্তানে যাওয়া ভারতীয় নাগরিকদের ওপর নজর রাখাই এখন গোয়েন্দাদের কাছে চ্যালেঞ্জ। কারণ আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে কে ISI-এর খপ্পরে পড়ছে তা খুঁজে বেড় করা সত্যিই কঠিন।

 

.