বফর্সের উত্তরসূরি হচ্ছে `এম-৭৭৭` হাউইত্‍জার

বোফর্সের ২৭ বছর পর এবার ফের হাউইত্‍জার কামান কিনতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ৩,০০০ কোটি টাকায় ১৪৫ মার্কিন এম-৭৭৭ হাউইত্‍জার কামান কেনার প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ক্রয় সংক্রান্ত নিয়ামক সংস্থা `ডিফেন্স অ্যাকুইজিশন কাউন্সিল`-এর তরফে।

Updated By: May 12, 2012, 10:16 AM IST

বোফর্সের ২৭ বছর পর এবার ফের হাউইত্‍জার কামান কিনতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ৩,০০০ কোটি টাকায় ১৪৫ মার্কিন এম-৭৭৭ হাউইত্‍জার কামান কেনার প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ক্রয় সংক্রান্ত নিয়ামক সংস্থা `ডিফেন্স অ্যাকুইজিশন কাউন্সিল`-এর তরফে।  সেনাবাহিনীর আধুনিকীকরণের প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করতে শুক্রবারই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের থেকে মোট ৭,০০০ কোটিরও বেশি টাকার অস্ত্রশস্ত্র এবং সরঞ্জাম কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
আশির দশকের সুইডেনের বফর্স কোম্পানির তৈরি `হবিটস এফএইচ৭৭/বি` ১৫৫ মিলিমিটার হাউইত্‍জার কেনার সাতাশ বছর পর ফের হাউতজার কামান কিনতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। শুক্রবার  প্রতিরক্ষামন্ত্রী একে অ্যান্টনির নেতৃত্বে `ডিফেন্স অ্যাকুইজিশন কাউন্সিল` বা ডিএসি-র বৈঠকে, এ ব্যাপার সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়েছে। সেনার আধুনিকীকরণের কথা মাথায় রেখেই ব্রিটিশ `ভিএসইএল` সংস্থার প্রযুক্তিতে তৈরি মার্কিন `বিএই সিস্টেমস`-এর তৈরি এম-৭৭৭ হাউইতজার কামান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিএসি।  ইরাক এবং আফগান যুদ্ধে এই এম-৭৭৭ হাউত্জারই ছিল ন্যাটো বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। অত্যাধুনিক এই কামানটির বৈশিষ্ট কম নয়।
১) অন্যান্য ১৫৫ এমএম হাউইত্‍জার কামানের থেকে  মার্কিন এম-৭৭৭ হাউইত্‍জার কামানের ওজন অনেক কম।
২) মিনিটে পাঁচ রাউন্ড গোলা ছোড়ার ক্ষমতা রয়েছে মার্কিন কামান হাউতজারের। 
৩) কামানের সর্বোচ্চ ফায়ারিং রেঞ্জ ২৪.৭ কিলোমিটার। রকেট-নির্ভর ব্লেড সেল-এর সাহায্যে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩০ কিলোমিটারে। প্রয়োজনে ৪০ কিমি পাল্লার `গাইডেড আর্টিলারি সেল`-ও ব্যবহার করা যায় এই কামানে।
৪) কামানের ওজন কম হওয়ায় দ্রুত হেলিকপ্টারে স্থানান্তরিত  করা সম্ভব। পার্বত্য অঞ্চলে যুদ্ধের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সুবিধাজনক এই কামান।

এই মার্কিন কামান মূলত অরুণাচলপ্রদেশ এবং লাদাখে মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।  প্রসঙ্গত ন্যাটো গোষ্ঠীর দেশগুলি ছাড়া ভারতই প্রথম এম-৭৭৭-এর অধিকারী হতে চলেছে। পাকিস্তানের হাতে রয়েছে এর পূর্ববতী সংস্করণ, তুলনায় অনেক কম ক্ষমতাসম্পন্ন এম-১৯৮। প্রাথমিকভাবে হাউইত্‍জার-এর বরাত পাওয়ার দৌড়ে ছিল সিঙ্গাপুরে নির্মীত `পেগাসাস`। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ পরীক্ষার পর এম-৭৭৭-এর পক্ষেই রায় দেন বিশেষজ্ঞরা। শুক্রবারের বৈঠকে ইঙ্গ-মার্কিন কামানের পাশাপাশি সেনার বিভিন্ন বিভাগের জন্য বেশ কিছু অস্ত্র ও সরঞ্জাম কেনার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে-

১) এল-৭০ বিমান বিধ্বংসী কামান-এর ৬৭টি রাডার। 
২) ৩০০টি ওয়াটার ট্যাঙ্কার।  
৩) রুশ টি-৯০ ট্যাঙ্কের `স্টিমুলেটর`।
৪) নৌসেনার প্রস্তাবিত প্রশিক্ষণ জাহাজের জন্য ৪৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে ডিএসির তরফে।
৫) বায়ুসেনা এবং সেনাবাহিনীর যৌথ প্রকল্প ৩০০টি `এরিয়াল টার্গেট `-এর জন্য ধার্য হয়েছে সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীকে লেখা সেনাপ্রধান ভি কে সিংয়ের চিঠির কথা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে সেনার প্রস্তুতি ও অস্ত্রভাণ্ডার অবস্থা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। অনুমান, সম্ভবত সেই চিঠির প্রক্ষিতেই এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র কেনার বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে ডিআরডিও চিফের নেতৃত্বাধনী একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটিও। ডিএসির প্রস্তাব অর্থমন্ত্রকের শিলমোহর পেলেই তা পাঠানো হবে মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য।

.