বাবার চোখ টিভিতে, মা ব্যস্ত পুজোয়! চন্দ্রকান্তের গ্রামের বাড়িও আজ যেন চাঁদের মাটি ছোঁবে

তাঁর ডিজাইন করা অ্যান্টেনার মাধ্যমেই চন্দ্রযান-২-এর সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। 

Updated By: Sep 6, 2019, 05:19 PM IST
বাবার চোখ টিভিতে, মা ব্যস্ত পুজোয়! চন্দ্রকান্তের গ্রামের বাড়িও আজ যেন চাঁদের মাটি ছোঁবে

নিজস্ব প্রতিবেদন : নামকরণের সময়ে ছেলের জীবনের সঙ্গেও যে চাঁদ জড়িয়ে যাবে, তা বোধহয় স্বপ্নেও ভাবেননি মা-বাবা। কিছু না ভেবেই বড় ছেলের নাম চন্দ্রকান্ত রেখেছিলেন হুগলীর গুড়াপের মধুসূদন কুমার ও অসীমা দেবী। অভাব অনটনের সংসারে কষ্ট করে চন্দ্রকান্তকে পড়াশোনা করিয়েছেন। আজ সেই চন্দ্রকান্তর জীবনের সঙ্গেই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে চাঁদ। ভারতের দ্বিতীয় চন্দ্রযান অভিযানের ডেপুটি প্রোজেক্ট ডিরেক্টর গুড়াপের চন্দ্রকান্ত কুমার। তাঁর ডিজাইন করা অ্যান্টেনার মাধ্যমেই চন্দ্রযান-২-এর সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। 

আরও পড়ুন-  ভারতের থেকে বাংলাদেশির টাকার দর বেশি! মোদীর সরকারের সমালোচনা করতে গিয়ে বেফাঁস সুরজেওয়ালা

হুগলীর গুড়াপের শিবপুর গ্রামে বেড়ে ওঠা। ছোট থেকেই পড়াশোনায় মেধাবী ছিলেন চন্দ্রকান্ত। ১৯৯২ সালে খাজুরদহ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাশ। ধনিয়াখালি মহামায়া বিদ্যামন্দির থেকে বিজ্ঞান নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন চন্দ্রকান্ত। স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক হন বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন থেকে। এর পর রাজাবাজার সায়েন্স কলেজ থেকে রেডিয়ো ফিজিক্স অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স নিয়ে এমএসসি ও এমটেক পাশ করেন। তারপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি। ২০০১ সালে যোগ দেন ইসরোতে।  

আরও পড়ুন-  ১৫ মিনিটের অপারেশন! কীভাবে পাখির পালকের মতো চাঁদের পৃষ্ঠে নামবে চন্দ্রযান ২, জানালেন জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা

অভাব অনটনকে সঙ্গী করেই দুই ছেলেকে পড়াশোনা করিয়েছেন মা-বাবা। নিজের পড়াশোনার খরচ চালাতে কখনও কখনও টিউশনও করেছেন চন্দ্রকান্ত। বাবার সঙ্গে মাঠে চাষবাসেও হাত লাগিয়েছেন চন্দ্রকান্ত। সেদিনের লড়াই আজও ভোলেননি মধুসূদন কুমার ও অসীমা দেবী। আজ বিশ্বের অন্যতম বড় মহাকাশ অভিযানের এক কান্ডারী চন্দ্রকান্ত। ছেলের সাফল্যে গর্বিত মধুসূদন কুমার ও অসীমা দেবী।  চন্দ্রযান-২ অভিযানের শেষ লগ্নে তাই উত্সবের মেজাজ চন্দ্রকান্তের হুগলীর গুড়াপের বাড়িতে। 

ছেলের সাফল্যের পরেও আজও অত্যন্ত সাদামাটা জীবনযাপন করেন চন্দ্রকান্তের মা-বাবা। প্রতিদিনের মতোই সকালে উঠে জাব-জল দিয়ে গরুর পরিচর্যা করেছেন মধুসূদনবাবু। কাঠের জ্বালেই রান্না সেরেছেন অসীমাদেবী। চন্দ্রযান-২-এর সাফল্য কামনায় পুজোও দিয়েছেন চন্দ্রকান্তের মা। তবে, তাঁদের মন পড়ে আছে টিভির দিকেই। গোটা দেশের সঙ্গে তাঁদেরও চোখ টিভির পর্দায়। চন্দ্রকান্তের চন্দ্রযান-২ চাঁদের মাটি স্পর্শ করবে যে! 

.