ঝাড়ুর ঘায়ে সাফ কংগ্রেস, রাজধানীর রাজনীতিতে চমকপ্রদ শুরু আম আদমির পার্টির, আলোচনার কেন্দ্রে সেই অরবিন্দ কেজরিওয়াল
ঝাড়ুর ঘায়ে সাফ কংগ্রেস। জোর ধাক্কা বিজেপিকেও। দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে চমকপ্রদ উত্থান হল আম আদমি পার্টির। খোদ শীলা দীক্ষিতকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে এখন যাবতীয় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
ঝাড়ুর ঘায়ে সাফ কংগ্রেস। জোর ধাক্কা বিজেপিকেও। দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে চমকপ্রদ উত্থান হল আম আদমি পার্টির। খোদ শীলা দীক্ষিতকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে এখন যাবতীয় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
২০১১-র এপ্রিল-অগাস্ট। দুর্নীতির প্রতিবাদ আর জন লোকপাল বিলের দাবিতে আন্না হাজারের আন্দোলনে উত্তাল দিল্লি। আন্নার পাশে অরবিন্দ কেজরিওয়াল। পরের বছর সেপ্টেম্বরে হঠাত করেই বদলে গেল ছবিটা। আন্নার সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটে গেল কেজরিওয়ালের। তাঁর রাজনৈতিক দল গঠনের ভাবনায় মত দিতে পারেননি আন্না। ২০১২-র নভেম্বরে আম-আদমি পার্টি তৈরি করলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তারপর কেটেছে মাত্র একটা বছর। এই একটা বছরেই তাক লাগিয়ে দিল তাঁর আম-আদমি পার্টি। টানা তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতকে হারানোই শুধু নয়, দিল্লি বিধানসভায় কংগ্রেসকে তিন নম্বরে পাঠিয়ে দিলেন কেজরিওয়াল।
দুর্নীতি দুর করতে জন লোকপাল বিল, কাজ না করলে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ফিরিয়ে নেওয়ার অধিকারের মতো নানা দাবিতে শুরু হয়েছিল আন্দোলন। তারপর, ক্রমশ সহজে সাধারণ মানুষের মন ছুঁতে পারবে এমন ইস্যুগুলির ওপর জোর দেন কেজরিওয়ালরা। নির্ভয়া-কাণ্ডের পর মহিলাদের নিরাপত্তার দাবিতে সরব হন তাঁরা।
রাজধানীর বাসিন্দাদের ওপর থেকে জল-বিদ্যুত বিলের বোঝা কমানোর দাবিতে অনশনে বসেন কেজরিওয়াল। নিজের দলকে সামিল করেন অটো-রিকশ চালকদের আন্দোলনে। বড় জনসভার বদলে জোর দেন বাড়ি বাড়ি প্রচারে। যার ফল, পূর্ব, পশ্চিম দিল্লি ও রাজধানীর শহরতলির মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্তরা এ বার আস্থা রেখেছেন ঝাড়ুতেই। দুর্নীতি, মূল্যবৃদ্ধির মতো ইস্যুতে ক্রমাগত শীলা দীক্ষিতকে আক্রমণ করে ভোটারদের বার্তা দিয়েছেন কেজরিওয়াল। সাহসী পদক্ষেপে নিজেই দাঁড়িয়ে পড়েন সরাসরি শীলা দীক্ষিতের বিরুদ্ধে। তাই মতান্তর থাকলেও শেষপর্যন্ত কেজরিওয়ালের প্রশংসা না করে পারলেন না আন্না হাজারে।
কেজরিওয়ালের ঝাড়ু কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্কে ধস নামিয়ে তাদের ঠেলে দিয়েছে তৃতীয় স্থানে। ভোটের আগে আম-আদমি পার্টিকে প্রকাশ্যে গুরুত্ব দিতে না চাইলেও ফল বেরোনোর পর ঢোঁক গিলতে হচ্ছে আকবর রোডকে।
আম-আদমি পার্টিকে ভোট দিয়ে ভোট নষ্ট না করার কথা বলেছিল বিজেপি। ঝাড়ুর ঝাপটায় ব্যাকফুটে তারাও।
বিদেশ থেকে আসা টাকায় দলের তহবিল ভরানোর অভিযোগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তদন্তের নির্দেশ, আন্না হাজারের নাম করে টাকা তোলায় বিতর্ক, স্বয়ং আন্নার আপত্তি, দলের নেত্রী শাজিয়া ইলমির বিরুদ্ধে স্টিং অপারেশনে অবৈধভাবে টাকা নেওয়ার অভিযোগ। গত এক বছরে নানা সমস্যায় পড়েছে আম-আদমি পার্টি।
ভোটের ফল বলছে দিল্লির ভোটাররা সে সবে পাত্তা দেননি। বিধানসভা ভোটের এই সাফল্য লোকসভা ভোটেও কেজরিওয়ালরা ধরে রাখতে পারেন কিনা, এখন সেদিকেই নজর গোটা দেশের।