গুজরাটে ২০০২ সালের গোধরা পরবর্তী দাঙ্গাপর্বের কুখ্যাত নারোদা-পাতিয়া গণহত্যাকাণ্ড মামলার রায়দান স্থগিত রাখল আমদাবাদের বিশেষ আদালত। শনিবার নারোদা-কাণ্ডের তদন্তে নিয়োজিত বিশেষ তদন্তকারী দলের কৌঁসুলি এবং অভিযুক্ত পক্ষের বক্তব্য শোনার পর অতিরিক্ত মুখ্য বিচারক জোত্স্না ইয়াগনিক আগামী ২৯ অগাস্ট পর্যন্ত রায়দান স্থগিত রাখার কথা ঘোযণা করেন।
২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গাপর্বের অন্যতম নারকীয় গণহত্যার সাক্ষী আমদাবাদের অনতিদূরের নারোদা-পাতিয়া। উন্মত্ত দাঙ্গাকারীদের আক্রমণে নিহত হয়েছিলেন নারী, শিশু-সহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৯৭ জন মানুষ। ২০০৯ সাল থেকে এই মামলার বিচারপর্ব শুরু হয়। এই দাঙ্গাকাণ্ডের মোট ৬১ জন অভিযুক্তের মধ্যে রয়েছেন, বিজেপি বিধায়ক মায়াবেন কোডনানি, দলের স্থানীয় নেতা বিপিন পাঞ্চাল, কিষাণ কোরানি, অশোক সিন্ধি, রাজু চুমল এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তত্কালীন প্রভাবশালী নেতা বাবু বজরঙ্গি। দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির জবানবন্দি গ্রহণের পাশাপাশি এই মামলায় একটি সংবাদমাধ্যমের তরফে সংগঠিত স্টিং অপারেশন-এর ফুটেজও পরীক্ষা করে বিশেষ আদালত। গত বছর নভেম্বর মাসে এই গণহত্যাকাণ্ডের অন্যতম সাক্ষী নাদিম আহমেদ সইদ অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হন।
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালে গোধরার সবরমতী এক্সপ্রেস অগ্নিকাণ্ডের পরবর্তী মোট ৯টি দাঙ্গার মামলার তদন্ত রয়েছে সুপ্রিম কোর্ট গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) হাতে। তার মধ্যে এ পর্যন্ত দু`টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। গত বছর নভেম্বর মাসে ২০০২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারির রাতে সরদারপুরা গ্রামে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৩৩ জনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার অভিযোগে ৩১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দণ্ডিত করে মেহসানার বিশেষ আদালত। চলতি বছরের ৯ এপ্রিল ওডে গণহত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদের কারদণ্ডে দণ্ডিত করে আনন্দ জেলার বিশেষ `সিট`-আদালত। এই ঘটনায় অভিযুক্ত ৪৭ জনের মধ্যে ২৩ জনকে উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিয়েছেন বিশেষ আদালতের বিচারক পি বি সিং। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে গুজরাতে বিধানসভা নির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে নারোদা-পাটিয়া রায় ঘিরে সবরমতীর তীরে নতুন করে রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
নারোদা-পাটিয়া গণহত্যার রায়দান স্থগিত