লোকপাল বিল পাশ করাতে অঙ্গীকারবদ্ধ সরকার, জানালেন প্রধানমন্ত্রী
এবার দুর্নীতির মোকাবিলায় ব্যক্তিগত তত্পরতার প্রতিশ্রুতি! দেশবাসীর উদ্দেশ্যে নববর্ষের শুভেচ্ছাবার্তায় এমনই অঙ্গীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। ৭ রেসকোর্স রোডের বাসিন্দার ঘোষণা, এবার দেশের মানুষকে আরও স্বচ্ছ ও কর্মদক্ষ সরকার উপহার দিতে ব্যক্তিগত ভাবে প্রচেষ্টা চালাবেন তিনি।
এবার দুর্নীতির মোকাবিলায় ব্যক্তিগত তত্পরতার প্রতিশ্রুতি! দেশবাসীর উদ্দেশ্যে নববর্ষের শুভেচ্ছাবার্তায় এমনই অঙ্গীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। ৭ রেসকোর্স রোডের বাসিন্দার ঘোষণা, এবার দেশের মানুষকে আরও স্বচ্ছ ও কর্মদক্ষ সরকার উপহার দিতে ব্যক্তিগত ভাবে প্রচেষ্টা চালাবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী খোলাখুলি কবুল করেছেন, ভারতে দুর্নীতি একটি গুরুতর সমস্যা, বহুমুখী পদ্ধতিতেই এর মোকাবিলা করতে হবে। স্পেকট্রাম, কমনওয়েলথ গেমস, আদর্শ অ্যাপার্টমেন্টস- ২০১১ সাল জুড়ে একের পর এক কেলেঙ্কারির জেরে ঘুম ছুটেছে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের। আর সে কারণেই প্রধানমন্ত্রীর নববর্ষের বার্তায় `দুর্নীতিমুক্ত সরকার` গড়ার প্রতিশ্রুতি এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।
অনিবার্যভাবেই প্রধানমন্ত্রীর নববর্ষের প্রেস-বার্তায় এসেছে বহুচর্চিত লোকবাল বিল ঘিরে সাম্প্রতিক সংসদীয় টানাপোড়েনের প্রসঙ্গ। লোকসভায় লোকপাল বিল পাশ করেও প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকার কারণে গত ২৯ ডিসেম্বর রাজ্যসভায় বিলটি নিয়ে ভোটাভুটিতে করার সাহস দেখাতে পারেনি কেন্দ্র। বিরোধী শিবির এবং ইউপিএ শরিকদের একাংশের চাপে সরকারের এই পশ্চাদপসরণ নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা বিতর্ক তৈরি হয়েছে। দিনভর আলোচনার পরও রাজ্যসভায় বিল `পাশ` না করতে পারার ঘটনাকে `দুর্ভাগ্যজনক` বলে বর্ণনা করেছেন মনমোহন সিং। তবে সেই সঙ্গেই জানিয়েছেন, শক্তিশালী লোকপাল আইন প্রণয়নের ব্যাপারে তাঁর সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাত্পর্যপূর্ণ ভাবে লোকপালের পাশাপাশি দুর্নীতি প্রতিরোধে লোকায়ুক্ত-এর কার্যকরিতার কথাও উঠে এসেছে তাঁর বক্তব্যে। যদিও ইউপিএ জোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম শরিক তৃণমূল কংগ্রেসের লোকায়ুক্ত সম্পর্কে অনীহার কথা প্রধানমন্ত্রীর অবিদিত নেই।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে অধ্যক্ষ হামিদ আনসারি রাজ্যসভা মুলতুবি করার পর লোকপাল বিল নিয়ে রাজনৈতিক ভাবে কিছুটা বেকায়দায় পড়েছে কংগ্রেস। লোকসভায় পাশ হয়ে যাওয়া লোকপাল বিল কেন সংসদের উচ্চকক্ষে ভোটাভুটি হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। এই পরিস্থিতিতে পাঁচ রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা ভোটের দিকে লক্ষ্য রেখে `প্রতিআক্রমণ আর প্রতিশ্রুতি`র জোড়া কৌশল নিয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। এই পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবেই লোকপাল বিল রাজ্যসভায় পাশ করতে না পারার জন্য বিজেপি ও বামেদের কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে। পাশাপাশি দল ও সরকারের তরফে বোঝানোর চেষ্টা চলছে, লোকপাল বিল আদৌ `ঠাণ্ডাঘরে` চলে যায়নি। সংসদের পরবর্তী বাজেট অধিবেশনে বিলটি পুনরুজ্জীবিত করা সম্ভব।
বস্তুত, তৃণমূল, ডিএমকে`র মতো বিগড়ে যাওয়া শরিকদের ফের কাছে এনে পরবর্তী অধিবেশনে রাজ্যসভায় লোকলাল বিল পাশ করাতে ইতিমধ্যেই তত্পর হয়ে উঠেছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরমের বিবৃতিতেই তার ইঙ্গিত মিলেছে। বাজেট অধিবেশনের আগে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড তৃণমূলকে বোঝাতে সক্ষম হবে বলে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।