সাত দফায় তৃণমূল ভাঙার পরিকল্পনায় বাঁধ, মুকুলের 'ভাটপাড়া' মডেল হিমঘরে

 বঙ্গ বিজেপির অন্দরে পর্ব ৪

Updated By: Aug 8, 2019, 10:25 PM IST
সাত দফায় তৃণমূল ভাঙার পরিকল্পনায় বাঁধ, মুকুলের 'ভাটপাড়া' মডেল হিমঘরে

অঞ্জন রায়

দিল্লিতে দলীয় দফতরে বসে সাত দফায় তৃণমূল ভাঙার ভাঙার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুকুল রায় ও কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তারপর থেকে বিধায়ক ও বিভিন্ন পুরসভার কাউন্সিলরদের যোগদান করিয়েছেন। কিন্তু তারপর একরাশ বিতর্ক। কাচরাপাড়ার কাউন্সিলরদের ধরে রাখতে পারেননি মুকুল। লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলামের যোগদানের পর বিতর্কের আগুনে পড়ে ঘৃতাহুতি। লোকসভা ভোটের পর দল ভাঙানোর যে খেলা মুকুল রায়রা শুরু করেছিলেন, তা সকলের অলক্ষ্যেই যেন চলে গিয়েছে শীতঘুমে। 

লোকসভা ভোটে এরাজ্যে বিজেপি ১৮টি আসন পাওয়ার পর জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালে প্রকাশিত হয়েছিল 'একুশের আগে রাজ্যজুড়ে ঘাসফুল ছাঁটতে বিজেপির দাওয়াই 'ভাটপাড়া' মডেল'  প্রতিবেদন। ওই কৌশলে বিজেপি পরিকল্পনা করেছিল, ১৮টি লোকসভা আসনে চল্লিশেরও বেশি পুরসভার দখল নিতে হবে। যেমনটা হয়েছে ভাটপাড়ার ক্ষেত্রে। এই কৌশলে প্রথমে এলাকার প্রভাবশালী নেতাকে দলে টানা হবে। তারপর ওই নেতার সঙ্গেই তাঁর অনুগামী কাউন্সিলররাও শিবির বদলে ফেলবেন। সবটাই ছিল ছকে বাঁধা। কিন্তু বিধি বাম!

লোকসভা ভোটের পর কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তৃণমূল ভাঙার পক্ষে সবুজ সংকেত দেন। ওই সংকেত পেয়ে আসরে নেমে পড়েছিলেন মুকুল-কৈলাস। দুজনেই ঘোষণা করে দেন, সাত দফায় ভাঙা হবে তৃণমূল। কিন্তু দলে যোগদানকারীদের ধরে রাখতে পারেনি বিজেপি। কাউন্সিলররা ফিরে গিয়েছেন পুরনো দলে। এতে মুখ পুড়েছে দলের। তার উপরে লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে রয়েছে ভুরি ভুরি অভিযোগ। সেই মনিরুলকে মেনে নিতে পারেনি বিজেপির একাংশ। এমনকি দিল্লিতে নালিশ করেছে সঙ্ঘও।

এখানেই শেষ নয়, নব্য বিজেপির সঙ্গে পুরনোদের দ্বন্দ্বও বেঁধেছে জায়গায় জায়গায়। নব্যদের সভায় আসছেন না পুরনোরা, আবার পুরনোদের সভায় গরহাজির থাকছেন নতুন নেতা-কর্মীরা। বিজেপির অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছিল, নতুনদের নিয়ে ধরে রাখা যাচ্ছে না, এতে মুখ পুড়ছে দলের। এর সঙ্গে যাঁরা লোকসভা ভোটেও বিজেপি কর্মীদের মারধর করেছেন, তাঁদের সঙ্গে নিয়ে কীভাবে লড়াই সম্ভব? 

বিতর্ক, বিতর্ক ও বিতর্ক। জেরবার বিজেপি। শেষপর্যন্ত দলে কারা যোগদান করবেন, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কমিটি করে দেন অমিত শাহ। সরল করে বললে, মুকুলের একার সিদ্ধান্তে আর দলবদল হবে না।

রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলছেন, 'জোর করে কাউকে আনছি না। শাসক দল এত ভয় দেখাচ্ছে, স্বাভাবিকভাবে তাঁরা থাকতে চাইছেন না। সকলের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে।' 

আরও পড়ুন- বর্তমান কাশ্মীরকে হিটলারের কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের সঙ্গে তুলনা করে বিতর্কে অধীর

.