ছেলে তেজস্বীকে উপ-মুখ্যমন্ত্রী করে বিহার সরকারের রাশ নিজের হাতে রাখলেন লালু
পঞ্চমবারের জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন নীতীশ কুমার। উপ-মুখ্যমন্ত্রী হলেন লালুর ছোট ছেলে তেজস্বীপ্রসাদ। বড় ছেলে তেজপ্রতাপও মন্ত্রী হয়েছেন। দুই ছেলেকে নীতীশের মন্ত্রিসভায় পাঠিয়ে সরকারের রাশ নিজের হাতেই রাখলেন লালু।
ওয়েব ডেস্ক: পঞ্চমবারের জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন নীতীশ কুমার। উপ-মুখ্যমন্ত্রী হলেন লালুর ছোট ছেলে তেজস্বীপ্রসাদ। বড় ছেলে তেজপ্রতাপও মন্ত্রী হয়েছেন। দুই ছেলেকে নীতীশের মন্ত্রিসভায় পাঠিয়ে সরকারের রাশ নিজের হাতেই রাখলেন লালু।
৪ দশক আগে পটনার গান্ধী ময়দান থেকেই ইন্দিরা হঠাওয়ের ডাক দিয়েছিলেন জয়প্রকাশ নারায়ণ। জেপি-র সেদিনকার দুই শিষ্য নীতীশ কুমার ও লালুপ্রসাদ যাদব মাঝের কয়েকবছরের শত্রুতা ভুলে এখন আবার বন্ধু। শুক্রবার, সেই ঐতিহাসিক গান্ধী ময়দানেই পঞ্চমবারের জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন নীতীশ।
বিহার জয়ের পর লালু বলেছিলেন, তাঁর ২৮ ও ২৬ বছরের দুই ছেলে এখন কাকা নীতীশের কাছে রাজনীতি শিখবে। এদিন কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের পরই শপথ নেন লালুপ্রসাদের ছোট ছেলে তেজস্বীপ্রসাদ যাদব। ফলে, তিনিই বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ক্লাস নাইন পর্যন্ত পড়া তেজস্বীর পর শপথ নেন লালুর বড় ছেলে তেজপ্রতাপ যাদব। তারপরই, মঞ্চে ওঠেন লালু-ঘনিষ্ঠ বর্ষীয়ান আরজেডি নেতা আব্দুল বারি সিদ্দিকি। মেয়ে মিসাকে মন্ত্রী করেননি লালু। বুঝিয়ে দিয়েছেন, দলে নিজের উত্তরাধিকারী হিসাবে ছোট ছেলেকেই তাঁর পছন্দ।
শুক্রবার, জেডিইউ-আরজেডি-র ১২ জন করে মন্ত্রী ও কংগ্রেসের ৪ মন্ত্রী শপথ নেন। তবে, নীতীশের পরই লালুর দুই ছেলে-সহ আরজেডির ৩ বিধায়ক পরপর শপথ নেওয়ায় মন্ত্রিসভার রাশ যাদব নেতার হাতেই থাকছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বিহার ভোটে সমসংখ্যক আসনে লড়ে ৮০ টি আসন পায় আরজেডি। জেডিইউ পায় ৭১ টি আসন। তারপর থেকেই আরজেডি নেতারা বলতে শুরু করেন, নীতীশের দলিত-মহাদলিত ভোটব্যাঙ্কের তুলনায় লালুর যাদব-মুসলিম ভোটব্যাঙ্কই বাজিমাতে বড় ভূমিকা নিয়েছে। শুক্রবারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানও বুঝিয়ে দিল, নীতীশকে নিজের রিমোট কন্ট্রোলে রেখেই আইনের গেরোয় মুখ্যমন্ত্রী হতে না পারার দুঃখ ভোলার চেষ্টা করবেন লালুপ্রসাদ।
আমন্ত্রণ পেয়েও এদিন গান্ধী ময়দানের ছায়া মাড়াননি নরেন্দ্র মোদী। তবে, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে নীতীশের শপথে রাজীবপ্রতাপ রুডি ও বেঙ্কাইয়া নাইডুকে পাঠান তিনি। রাজনৈতিক মহলের একটা অংশ মনে করছে, সময় একটু গড়ালেই মহাজোটে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করবে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশের পাশে দাঁড়িয়ে লালুর ক্ষোভ উস্কে দেওয়াই হবে তার কৌশল। তাই কি শপথের দিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে নীতীশের নাম করলেও লালুর নাম মুখে আনলেন না বেঙ্কাইয়া? শপথের উষ্ণতার মধ্যেই লালু-নীতীশের বন্ধুত্ব কতদিন স্থায়ী হবে, এই প্রশ্নটা শুক্রবার দিনভর ঘুরে বেড়াল পটনার গান্ধী ময়দানে।