অন্ধ্রের উপনির্বাচনে জয়জয়কার জগনের

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ঘিরে জাতীয় রাজনীতিতে তুমুল অনিশ্চয়তার আবহের মধ্যেই উপনির্বাচনের ফলাফলে বড় ধাক্কা খেল কংগ্রেস। অন্ধ্রপ্রদেশে জগনমোহন রেড্ডির নেতৃত্বাধীন ওয়াইএসআর কংগ্রেসের পক্ষে ওঠা প্রবল ঝড়ের মুখে মুখ থুবড়ে পড়েছে সোনিয়া গান্ধীর দল। আর প্রধান বিরোধী দল তেলুগু দেশম আক্ষরিক অর্থেই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে এই ভোটে।

Updated By: Jun 15, 2012, 08:43 AM IST

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ঘিরে জাতীয় রাজনীতিতে তুমুল অনিশ্চয়তার আবহের মধ্যেই উপনির্বাচনের ফলাফলে বড় ধাক্কা খেল কংগ্রেস। অন্ধ্রপ্রদেশে জগনমোহন রেড্ডির নেতৃত্বাধীন ওয়াইএসআর কংগ্রেসের পক্ষে ওঠা প্রবল ঝড়ের মুখে মুখ থুবড়ে পড়েছে সোনিয়া গান্ধীর দল। আর প্রধান বিরোধী দল তেলুগু দেশম আক্ষরিক অর্থেই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে এই ভোটে। অধিকাংশ আসনেই তৃতীয় স্থানে রয়েছে চন্দ্রবাবু নাইডুর দল।
শুক্রবার সকাল থেকে অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোর লোকসভা কেন্দ্র-সহ দেশের ৮ রাজ্যের ২৭টি বিধানসভা কেন্দ্রের গণনা শুরু হয়। এর মধ্যে অন্ধ্রেরই ১২ জেলার ১৮টি বিধানসভা কেন্দ্র  ছিল। জগনপন্থী কংগ্রেস সাংসদ মেকাপতি রাজমোহন রেড্ডি সাংসদ-পদ ছেড়ে নেল্লোর থেকে ওয়াইএসআর কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে উপনির্বাচনী যুদ্ধে নেমেছিলেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস প্রার্থী তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী টি সুব্রমণি রেড্ডিকে ৫০,০০০-এরও বেশি ভোটে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন তিনি। তেলুগু দেশম প্রার্থী ভি ভেনুগোপাল রেড্ডি রয়েছেন তৃতীয় স্থানে।
নেল্লোর লোকসভার পাশাপাশি ১৫টি বিধানসভা কেন্দ্রেও জয়ী হয়েছেন জগনমোহন রেড্ডির নেতৃত্বাধীন ওয়াইএসআর কংগ্রেসের প্রার্থীরা। কংগ্রেস ২ এবং তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির প্রার্থী ১টি কেন্দ্রে জিতেছেন। হিসেব বহির্ভূত সম্পত্তি মামলায় সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার হওয়ার ফলে উপনির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে পারেননি প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস রাজশেখর রেড্ডির ছেলে। ভোট গণনার ফলাফলে স্পষ্ট, গ্রেফতার হওয়ার ফলে তেলুগু মুলুকের জনতার সহানুভূতি পেয়েছেন তিনি।
শুধু নিজের এলাকা রায়লসীমা নয়, তেলেগু দেশমের দুর্গ উপকূল অন্ধ্রেও চমকপ্রদ জয় পেয়েছে ওয়াইএসআর কংগ্রেস। আসলে ১৬ জন কংগ্রেস বিধায়ক দলত্যাগ করে জগনমোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় দলত্যাগ বিরোধী আইনে আইনসভার তাঁদের সদস্যপদ বাতিল হয়েছিল, তাঁরাই এবার ওয়াইএসআর কংগ্রেসের টিকিটে ভোটে লড়েছিলেন। একই ভাবে আল্লাগাড্ডা থেকে বিধানসভায় নির্বাচিত প্রজারাজ্যম পার্টির বিধায়ক শোভা নাগি রেড্ডি ইস্তফা দিয়ে এবার জগনের দলের হয়ে ভোটে লড়ছেন। অন্যদিকে ২০১৪ সালের ভোটে তিরুপতি বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ী প্রজারাজ্যম পার্টির সভাপতি চিরঞ্জিবী সদলবলে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে রাজ্যসভায় নির্বাচিত হওয়ায় এই কেন্দ্রে ভোট হয়।

অন্যান্য রাজ্যের বিধানসভা আসনগুলির মধ্যে দলীয় বিধায়ক সুকুমার বর্মনের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া ত্রিপুরার সিপাহিজলা জেলার নলছর(তফশিলী জাতি, সংরক্ষিত) আসনটি নজিদের দখলে রেখেছে সিপিআইএম। এখানে কংগ্রেস প্রার্থী দ্বিজেন্দ্রলাল মজুমদারকে ৪,৯১৬ ভোটে হারিয়ে দিয়েছেন সিপিআইএম প্রার্থী তপনচন্দ্র দাস। আগামী বছরের গোড়াতেই ত্রিপুরায় বিধানসভা ভোটে। তার আগে এই জয় নিশ্চিতভাবেই বামপন্থীদের মনোবল বাড়াবে। কেরালার নেয়াত্তিনকারা বিধানসভার উপনির্বাচনে অবশ্য ধাক্কা খেয়েছে সিপিআইএম নেতৃত্বাধীন এলডিএফ জোট। এই আসনের সিপিআইএম বিধায়ক আর সেলভারাজ পদত্যাগ করে শাসক ইউডিএফ জোটের কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছিলেন। সিপিআইএম প্রার্থী এফ লরেন্সকে ৬,৩০০ ভোটে হারিয়ে দিয়েছেন তিনি।
 
তামিলনাড়ুর পুড়ুকোট্টাইতে ডিএমডিকে-কে হারিয়ে দিয়েছে জয়ললিতার এআইএডিএমকে। বিরোধী ডিএমকে-কংগ্রেস জোটের তরফে এই কেন্দ্রে কোনও প্রার্থী দেওয়া হয়নি। দলীয় বিধায়ক বিমল মুন্দাদার মৃত্যুতে শূন্য হওয়া মহারাষ্ট্রের কাইজ(তফশিলী জাতি, সংরক্ষিত) কেন্দ্রটি এবারও দখলে রেখেছে শরদ পাওয়ারের এনসিপি। কংগ্রেস সমর্থিত আরএলডি প্রার্থীকে হারিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী শ্যামসুন্দর শর্মা জয় পেয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মাথ কেন্দ্রে। জোট-শরিক বিজেপি এবং গতবারের জয়ী কংগ্রেসকে হারিয়ে ঝাড়খণ্ডের হাটিয়া বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছে অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (আজসু)-এর প্রার্থী। মধ্যপ্রদেশের মহেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রটিও কংগ্রেসের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি।

.