৪৮ বছরের দাম্পত্য জীবনে ইতি! বাড়িতেই স্ত্রীর মূর্তি বসালেন ব্যবসায়ী
যেখানে রোজই বধূ নির্যাতন, স্বামীর হাতে স্ত্রী লাঞ্ছিতা, খুনের ঘটনার খবর শোনা যায়, সেখানে এমন কিছুও হয়!
নিজস্ব প্রতিবেদন- বধূ নির্যাতনের ঘটনা শুনে শুনে ক্লান্ত হয়ে যাওয়া এদেশে এটা আবার কেমন খবর! আগামী কয়েকটা লাইন পরার পর আপনার মনে এমন প্রশ্ন জাগতে পারে। যেখানে রোজই বধূ নির্যাতন, স্বামীর হাতে স্ত্রী লাঞ্ছিতা, খুনের ঘটনার খবর শোনা যায়, সেখানে এমন কিছুও হয়! হ্যাঁ হয়। কারণ এটাই সমাজ। আর এখনও কিছু মানুষ এই সমাজে দৃষ্টান্তমূলক কাজ করছেন। সমাজের চাকা তাই বিনা বাধায় ঘুরছে। ৭৪ বছর বয়সী এক ব্যবসায়ী নিজের বাড়িতেই স্ত্রীর মূর্তি বসিয়েছেন। স্ত্রীর প্রতি অপত্য স্নেহ ও ভালবাসার জেরেই তিনি এমন উদাহরণ তৈরি করার মতো কাজ করেছেন। তা অবশ্য বলাবাহুল্য।
১০ অগাস্ট মাদুরাইয়ের মেলা পোন্নাগরমের বাসিন্দা সি সেতুরমনের স্ত্রীবিয়োগ হয়। স্ত্রীর মৃত্যুর খবর তাঁকে টলিয়ে দেয়। দীর্ঘ ৪৮ বছরের সম্পর্ক তাঁদের। এক লহমায় সব লন্ডভন্ড। সব সময়ের সঙ্গীর ছেড়ে যাওয়ার খবর তিনি মেনে নিতে পারছিলেন না। অপার নিঃসঙ্গতা ক্রমে তাঁকে গ্রাস করছিল। প্রতিটা মূহূর্তে তিনি ৬৭ বছর বয়সী স্ত্রী এস পিচাইমণির অভাব বোধ করছিলেন। তাই এক অভাবনীয় সিদ্ধান্ত নিলেন। স্ত্রীর মৃত্যুর এক মাসের মধ্যে তিনি এস পিচাইমণির একটি মূর্তি বসালেন বাড়িতে। আচমকাই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন সেতুরমনের স্ত্রী। অর্ধাঙ্গিনীকে হারানোর শোক তাঁকে গ্রাস করছিল। আর তাই স্ত্রীকে আবার দিন-রাত চোখের সামনে রাখার ব্যবস্থা করলেন তিনি।
তবে এমন ঘটনা নতুন নয়। এর আগে কর্ণাটকের এক ব্যবসায়ীও স্ত্রীর মূর্তি বসিয়েছিলেন বাড়িতে। তাঁর থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই সেতুরমনও এমন সিদ্ধান্ত নেন। ২৫ দিনের মধ্যে মাদুরাইয়ের এক শিল্পী ফাইবারের মূর্তি বানিয়ে দেন। বাড়ির বসার ঘরেই স্ত্রীর মূর্তি বসিয়েছেন সেতুরমন। ঘরের দরজা খুললেই সেটি চোখে পড়বে। বাড়ির ভিতরে রাখলে বহু বছর মূর্তিটি নষ্ট হবে না বলে দাবি করেছেন সেতুরমন। পেশায় রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী সেতুরমনের তিন মেয়ে। তাদের প্রত্যেকেরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে৷ ফলে বাড়িতে স্ত্রীর মূর্তিই এখন তাঁর সর্বক্ষণের সঙ্গী।