করোনা তখন ছিল না! ২০১৯ সালেই আত্মহত্যা করেছেন ৪২,৪৮০ জন কৃষক, দিনমজুর
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯-এ আত্মহত্যার ঘটনা বেড়েছে ৬ শতাংশ।
নিজস্ব প্রতিবেদন- করোনার জন্য দেশের অর্থনীতি ধুঁকছে। এমনই দাবি করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। অর্থাত্, করোনা যখন ছিল না তখন দেশের অর্থব্যবস্থা ভাল হওয়ারই কথা। কিন্তু পরিসংখ্যান তো সে কথা বলছে না। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো (NCRB) একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। সেই পরিসংখ্যান বলছে, শুধুমাত্র ২০১৯ সালেই গোটা দেশে ৪২,৪৮০ জন কৃষক, দিনমজুর আত্মহত্যা করেছেন। তা হলে এতজন কৃষক ও দিনমজুরের আত্মহত্যার কারণ কি আর্থিক অনটন নয়! এই নতুন পরিসংখ্যান কিন্তু মোদী সরকারের করোনার অজুহাত নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯-এ আত্মহত্যার ঘটনা বেড়েছে ৬ শতাংশ। তবে ২০১৯ সালে কৃষকদের আত্মহত্যার ঘটনা কিছুটা কম। অন্যদিকে দিনমজুরদের আত্মহত্যার ঘটনা বেড়েছে ৮ শতাংশ। গত বছর সারা দেশে ১০ হাজার ২৮১ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। ২০১৮ সালে সেই সংখ্যাটা ছিল ১০ হাজার ৩৫৭। তবে গত বছর ৩২,৫৫৯ জন দিনমজুর আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন। ২০১৮ সালে বাধ্য হয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন ৩০,১৩২ জন দিনমজুর। মোদী সরকার বারবার দাবি করেছে, দেশে দারিদ্রের অবসানে তারা সবরকম চেষ্টা করছেন। আর করোনা মহামারির জন্যই আজ দেশের অর্থনীতির এমন বেহাল দশা। তবে সরকারের এমন দাবি নস্যাত্ করতে পারে এই রিপোর্ট।
৫৯৫৭ জন চাষী ও ৪৩২৪ জন খেতমজুর গত এক বছরে আত্মহত্যা করেছেন। তাঁদের মধ্যে ৫৫৬৩ পুরুষ কৃষক। ৩৯৪ জন মহিলা। আত্মহত্যার নিরিখে শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র। তার পর কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলঙ্গানা। এনসিআরবি-র রিপোর্ট বলছে, বাংলার কোনও কৃষক এই সময়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হননি। ২০১৮ থকে ২০১৯ সালে দেশে আত্মহত্যার ঘটনাও বেড়েছে অনেকটাই। এনসিআরবির রিপোর্ট বলছে, ২০১৮ সালে ১ লক্ষ ৩৪ হাজার ৫১৬ জন মানুষ আত্মহত্যা করেছিলেন। ২০১৯ সালে ১ লক্ষ ৩৯ হাজার ১২৩ জন। রিপোর্ট বলছে, আর্থিক অনটনের সঙ্গে পারিবারিক অশান্তির জেরে এই পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন অনেকে।