মৃত্যুর পরও আটজনকে বাঁচিয়ে গেলেন! কেরালার এই যুবক মানুষের রূপে মাসিহা
১৪ জুলাই কেরলের কোট্টারকারা এলাকায় বাইক দুর্ঘটনায় আহত হন অনুজিথ। এর পর তাঁকে চিকিত্সার জন্য তিরুবনন্তপূরমে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।
নিজস্ব প্রতিবেদন- মানুষ মানুষের জন্য। কিন্তু আমরা কতজন এই কথাটা মেনে চলতে পারি। নিজের স্বার্থের উর্ধ্বে গিয়ে আমরা কি আদৌ সবার জন্য ভাবতে পারি! কিছু মানুষ কিন্তু পারেন। তাঁরা মানুষের রূপে মাসিহা হয়ে পৃথিবীতে আসেন। নিজের জন্য নয়, বাঁচেন অন্যের জন্য। জীবিত অবস্থায় তো বটেই, মৃত্যুর পরও তাঁরা মানুষকে সাহায্য করে যান। কেরলের যুবক অনুজিথ এমনই একজন মানুষ ছিলেন। মাত্র ২৭ বছর বয়সেই বাইক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন অনুজিথ। কিন্তু এই ছোট্ট জীবনে তিনি বাঁচিয়ে গিয়েছেন কয়েকশো প্রাণ। এমনকী মৃত্যুর পরও তিনি আটজনকে নতুন জীবন দিয়ে গিলেন। কুর্নিশ অনুজিথ।
১৪ জুলাই কেরলের কোট্টারকারা এলাকায় বাইক দুর্ঘটনায় আহত হন অনুজিথ। এর পর তাঁকে চিকিত্সার জন্য তিরুবনন্তপূরমে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। অনুজিতের ব্রেন ডেত ঘোষণা করেন চিকিত্সকরা। কিন্তু মৃত্যুর আগেই অনুজিথ স্ত্রী ও বোনকে তাঁর অঙ্গদানের ইচ্ছের কথা জানিয়ে গিয়েছিলেন। সেই মতো অনুজিথের হৃদপিন্ড, কিডনি, অন্ত্র, চোখ, লিভার, ও হাত অন্যের শরীরের প্রতিস্থাপন করা হয়। ৫৫ বছর বয়সী সানি থমাস নামে একজনের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে অনুজিথের হৃদপিন্ড। নতুন জীবন পেয়েছেন সানি থমাস। আর এভাবেই এই পৃথিবীতে না থেকেও রয়ে গেলেন অনুজিথ।
আরও পড়ুন- হাসপাতালে শুয়ে ছোট্ট শিশু, হাজার কিমি দূর থেকে আসছে মায়ের দুধ
২০১০ সালে ১৭ বছর বয়সে কয়েকশো মানুষের জীবন বাঁচিয়েছিলেন অনুজিথ। সেবার রেল লাইন ধরে হাঁটছিলেন অনুজিথ ও তাঁর বন্ধুরা। সেই সময় তাঁরা লাইনে ফাটল লক্ষ্য করেন। এদিকে সিগন্যাল খোলা থাকায় ট্রেন ছুটে আসছিল। সেই সময় অনুজিথ ও তাঁর বন্ধুরা নিজেদের জীবন বাজি রেখে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েন। তার পর পিঠের লাল ব্যাগ খুলে ড্রাইভারের উদ্দেশ্যে ইঙ্গিত দিতে থাকেন। ড্রাইভার বিপদ বুঝে ট্রেন থামিয়ে দেন। কয়েকশো মানুষ বড় বিপদের হাত থেকে রক্ষা পান। অনুজিথের মতো মানুষদেরও এই পৃথিবীতে এখন ভীষণ দরকার। তাঁরা ছিলেন, আছেন, থাকবেন বলেই দুনিয়াটা এখনো সুন্দর, বাসযোগ্য।