দিল্লি নিজামুদ্দিনের ধর্মীয় সভায় অংশ নেওয়ার পর করোনা আক্রান্ত ২৭ জন, মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের
করোনাভাইরাস সতর্কতায় জনসমাবেশ বন্ধ রাখার আর্জি জানিয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীরা। কিন্তু, সেই আর্জিকে কার্যত বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে প্রায় ২ হাজার মানুষ নিয়ে মার্চের মাঝামাঝি দিল্লির নিজামুদ্দিনে হয় তবলিঘ-ই-জামাতের ধর্মসভা
নিজস্ব প্রতিবেদন: করোনা সর্তকতাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে তবলিঘ-ই-জামাতের মসজিদে ২০০০ জনের বিশাল ধর্মীয় সমাবেশ। আর তারপর থেকে সেই সমাবেশে অংশ নেওয়া অন্তত ২৭ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের হদিশ মিলেছে। মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের।
দক্ষিণ দিল্লির নিজামুদ্দিনের সভার পর থেকেই করোনাভাইরাসের লক্ষণ দেখা দিয়েছে সেই এলাকার অগুনতি মানুষের মধ্যে। ৬ তলা সেই মারকাজেই এখনও রয়েছেন প্রায় ১৪০০ মানুষ। শুধু তাই নয়, সভা শেষ হওয়ার পর প্রায় ৩০টি বাসে করে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েন।
করোনাভাইরাস সতর্কতায় জনসমাবেশ বন্ধ রাখার আর্জি জানিয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীরা। কিন্তু, সেই আর্জিকে কার্যত বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে প্রায় ২ হাজার মানুষ নিয়ে মার্চের মাঝামাঝি দিল্লির নিজামুদ্দিনে হয় তবলিঘ-ই-জামাতের ধর্মসভা। মার্চের মাঝামাঝি হওয়া সেই সভায় ভারতের বাইরের বিভিন্ন দেশের অতিথিরা অংশ নিয়েছিলেন। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব থেকে ধর্মগুরুরা আসেন ওই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সভাতে।
আরও পড়ুন- বাড়ছে না অর্থবর্ষ, ধোপে টিকল না শিল্পপতিদের আবেদন
সমাবেশ শেষ হওয়ার পর সেই অতিথিরা ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যান। লকডাউনের আগে ও পরে যখন বিভিন্ন রাজ্যের করোনাভাইরাস আক্রান্তের হদিশ মিলছে, তখন কিছু সংখ্যক ব্যক্তির ক্ষেত্রে দেখা যায় তাঁরা প্রত্যেকেই মধ্য-মার্চে তবলিঘ-ই-জামাতের ধর্মসভায় অংশ নিয়েছিলেন। ব্যাপারটা যে কাকতালীয় নয় তা বুঝতে বেশি দেরি হয়নি প্রশাসনের।
আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ থেকে সভায় অংশ নেওয়া ৯ জন ও তাঁদের একজনের স্ত্রী করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন। তবলিঘ-ই-জামাতের সভা থেকে তেলেঙ্গানায় ফিরে আসার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন বেশি কিছু মানুষ। তাঁদের মধ্যে মৃত্যু হয় ৬জনের। ধর্ম সভায় অংশ নেওয়ার পর তেলেঙ্গানায় যান কিছু ইন্দোনেশীয়। তাঁদের মধ্যে ১০ জনের দেহে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে।
তবলিঘ-ই-জামাতের সভা থেকে শ্রীনগর ফেরার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন এক ধর্মগুরু। তাঁরও দেহে করোনাভাইরাসের হদিশ মেলে। গত সপ্তাহে আইসোলেশনে থাকাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়। সব যোগসূত্র মিলতেই নড়েচড়ে বসে দিল্লির প্রশাসন।
করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে সেই সভায় যারা সংস্পর্শে এসেছিলেন তাঁদের প্রত্যেককে অবিলম্বে কোয়ারান্টিনে পাঠানোর ও রক্তের নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। শুধু তাই নয়, নিজামুদ্দিনের আশেপাশে দক্ষিণ দিল্লির বহু মানুষের দেহে করোনাভাইরাস থাকার প্রাথমিক লক্ষণগুলি দেখা দেওয়ায় পুরো এলাকা কার্যত সিল করে দেওয়া হয়েছে। সভায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের ওপর চালানো হচ্ছে কড়া নজরদারি।