তোকে লিখছি
তোকে,
তোকে লিখছি বলেই বোধহয় কোনো ভূমিকার দরকার হয় না, যেমনটা দরকার ছিল না আমাদের আলাপের সময়। তখন মৃত্যু নিয়ে অদ্ভুত কিছু রোমাঞ্চ ছিল। নরম তেরচা একফালি রোদের পাশ কাটিয়ে নেমে যাওয়া একটা ঢালু রাস্তা ছিল। আর আমরা ছিলাম।
ওই রাস্তা ধরে যাওয়া আর আসার মধ্যে তোকে বলেছিলাম আমার জন্মদিনের কথা— তখন দারুণ বসন্ত। সেই বসন্ত একটা আলাদা দুনিয়া তৈরি করে দিয়েছিল। একটা নদী ছিল। নদীর পাশে জ্যামিতি না জানা রাস্তা ছিল একটা।
কখনও শেষ না হওয়া রাস্তা। তোকে বলেছিলাম, নিয়ে যাবো একদিন। তোর ভেজা ভেজা ভিতু হাত ধরে নদীর পাশ দিয়ে হেঁটে হেঁটে যাব। পায়ের তলাতে পিষে যাবে পুরোনো হয়ে যাওয়া পাতার শক্ত।
অন্য পাড়ে বৃষ্টি হবে। হাওয়াতে চেপে একদল ভেজা গন্ধ নাকে ঝাঁপ দেবে। তোকে দেখাব সেই মাঠটা, যেখানে বৃষ্টির পর আকাশ উল্টে শুয়ে থাকে। মনখারাপিয়া একটা গাছের তলায় তোকে শোনাব সেই সুর, কোনোদিন না শেখা ঠোঁট চুমুর মতো বাঁশিকে ছুঁয়ে গিয়ে যাকে জন্ম দেয়।
তুই জানতে চেয়েছিলি রাস্তাটা কোথায় নিয়ে যাবে আমাদের। তখন জানতাম না। পরে বুঝেছি, ওটা মনের কাছে যাওয়ার রাস্তা। রোজ ভাঙতে থাকা কেউ একটু একটু বেঁচে নেয় ওখানে।
বাঁক ঘোরা একটা রাস্তা শুধু রোদের জন্য অপার্থিব হয়ে থাকে। পাশাপাশি চলে যায় দুটো সাইকেল। মনে পড়ে, দূরে থাকাটাও তো থাকা।
ইতি,
তোর কেউ না
আরও পড়ুন, প্রেমের অণুগল্প "ভালোবাসার দাম"