নাম দিয়ে যায় চেনা, কাশ্মীর থেকে কন্যকুমারী নাম বদলায় ভারতের জনপ্রিয়তম স্ট্রিট ফুড 'ফুচকা'
ভারতের সবথেকে জনপ্রিয় স্ট্রিট ফুড কী? কেউ বলবেন ফুচকা, কেউ বলবেন পানি পুরি, কেউবা হয়তো বলবেন গোল গাপ্পে। নাম আলাদা হলেও আসমুদ্রহিমাচল বৈচিত্রে ভরা এই দেশকে ফুচকাই বেঁধে রেখেছে স্বাদে। জেনে নিন দেশে কত নামে ডাকা হয় আপনার আদরের ফুচকাকে।
ওয়েব ডেস্ক: ভারতের সবথেকে জনপ্রিয় স্ট্রিট ফুড কী? কেউ বলবেন ফুচকা, কেউ বলবেন পানি পুরি, কেউবা হয়তো বলবেন গোল গাপ্পে। নাম আলাদা হলেও আসমুদ্রহিমাচল বৈচিত্রে ভরা এই দেশকে ফুচকাই বেঁধে রেখেছে স্বাদে। জেনে নিন দেশে কত নামে ডাকা হয় আপনার আদরের ফুচকাকে।
পানি পুরি
ফুচকার সহথেকে প্রচলিত নাম পানি পুরি। মহারাষ্ট্র, গুজরাত, মধ্য প্রদেশ, কর্ণাটক এমনকী নেপালেও ফুচকাকে এই নামে ডাকা হয়। তবে নাম এক হলেও স্বাদে সব পানি পুরিই একবারে আলাদা অন্যটির থেকে। মুম্বইতে যেখানে তেঁতুলের মিষ্টি চাটনিতে ডোবানো পানি পুরিতে পাবেন ঝাল ঝাল রাগড়া(মটর), মধ্যপ্রদেশে পানি পুরি ঠাসা থাকে আলুসেদ্ধ মাখায়। গুজরাতে খেজুর, বোঁদে দেওয়া মিষ্টি চাটনিতে ডোবানো পানিপুরির মধ্যে থাকে টুকরো করে কাটা আলু ও সেদ্ধ মুগ। বেঙ্গালুরুতে পানি পুরির মধ্যে পাবেন পেঁয়াজ কুচি।
ফুচকা
পশ্চিম, মধ্য, দক্ষিণ ভারত যদি মজে থাকে পানি পুরিতে তবে পূর্ব ভারতে মজে রয়েছে ফুচকায়। পশ্চিমবঙ্গ, অসমের গণ্ডি ছাড়িয়ে বাংলাদেশেরও বড় আদরের ডাক ফুচকা। উপকরণ আর স্বাদেও পানি পুরির থেকে বেশ আলাদা ফুচকা। মিষ্টি চাটনি নয়, ফুচকা এখানে স্নান করে টক জলে। আলু মাখা, সেদ্ধ ছোলা ভরা ফুচকার স্বাদ বেশ ঝাল ঝাল। পানি পুরির থেকে আকারেও কিছুটা বড়, কড়া ভাজার জন্য রঙটাও একটু লালচে হয় ফুচকার। বিহার, ঝাড়খণ্ডেও বেশ জনপ্রিয় ফুচকা।
গোল গাপ্পে
জনপ্রিয়তায় ফুচকা, পানি পুরির পরই রয়েছে গোল গাপ্পে। উত্তর ভারতে মূলত হরিয়ানায় ফুচকাকে এই নামে ডাকা হয়। মহারাষ্ট্রের বড়া পাওয়ের মতোই উত্তর ভারতে গোল গাপ্পের জনপ্রিয়তা আকাশছোঁয়া। প্রতিটা ফুটপাথের ধার ধরেই থাকে গোলগাপ্পে স্টলের সারি। আলু, মটর ভরা গোল গাপ্পে মিষ্টি চাটনি, টক জলে মিশেলে মাখামাখি। জলে থাকে বিশেষ কিছু মশলা ও হালকা পুদিনার সমাহার। তবে নাম গোল গাপ্পে হলেও দেখতে কিন্তু একটু লম্বাটে ধরণের। হরিয়ানার কোথাও কোথাও গোল গাপ্পের পাশাপাশি ফুচকাকে পানি কে পতাশেও বলা হয়। যদিও স্বাদে প্রায় গোল গাপ্পের কাছাকাছি পানি কে পতাশে।
পকোড়ি
গুজরাতের প্রত্যন্ত কিছু অঞ্চলে ফুচকা পকোড়ি নামে পরিচিত। তবে পকোড়ার সঙ্গে পকোড়ির কোনও মিল নেই। স্বাদ মোটামুটি এক থাকলেও পকোড়িতে দেওয়া হয় ঝুরি ভাজা। মিষ্টি চাটনির বদলে পুদিনা, কাঁচালঙ্কা কুচির টক-ঝাল জলে পকোড়ি পানি পুরির থেকে বেশ আলাদা। অনেক জায়গায় পেঁয়াজ কুচিও দেওয়া হয় পকোড়িতে।
পতাশি বা পানি কে বাতাশে
রাজস্থানে বেশ জনপ্রিয় পতাশির স্বাদ প্রায় পানি পুরির মতো। তবে পতাশির জলে থাকে আম। উত্তর প্রদেশে ফুচকাকে ডাকা হয় পানি কে বাতাশে নামে। আলু, ছোলা, মটর ভরা বাতাশে ডোবানো হয় বেশ মশলাদার জলে। লক্ষ্ণৌতে ৫টি আলাদা স্বাদের জলে বানানো ফুচকাকে বলে পাঁচ স্বাদ কে বাতাশে। হজরতগঞ্জে এই বাতাশে বিখ্যাত।
গুপ চুপ
ওড়িশা, ঝাড়খণ্ডের দক্ষিণ, ছত্তিসগড়, হায়দরাবাদ ও তেলেঙ্গানায় এই মজার নামে ডাকা হয় ফুচকাকে। তবে গুপ চুপে থাকে না আলু। ছোলা বা মটর সেদ্ধ ভরা গুপচুপে মাঝে মাঝে পেতে পারেন পেঁয়াজ কুচি।
ফুলকি
গুজরাতে রুটিকে চাপাটি বা ফুলকা বললেও, উত্তর প্রদেশে ও নেপালের বেশ কিছু জায়গায় কিন্তু ফুলকি মানে আসলে ফুচকা। রমজান মাসে পাওয়া যায় দহি ফুলকি। মটর দিয়ে দই বড়া দিয়ে বানানো হয় দহি ফুলকি। তবে ফুলকি বিশেষ প্রচলিত নয়।
টিক্কি
একমাত্র হায়দরাবাদ ও মধ্যপ্রদেশেই ফুচকাকে টিক্কি নামে ডাকা হয়। বাকি সব জায়গায় টিক্কি বলতে আলু টিক্কি বোঝালেও এখানে মটর আলু ভরা টকজলে ডোবানো ফুচকাই টিক্কি।
পড়াকা
উত্তর প্রদেশ, আলিগড়ে অনেক জায়গায় ফুচকাকে পড়াকাও বলা হয়ে থাকে।