চোলি রহস্য
পুজোতো প্রায় এসেই গেল। পুজো পেরলেই তারপরই লম্বা বিয়ের মরসুম। আর উত্সব, অনুষ্ঠানে সাজের শেষ কথা শাড়ি।
প্রমা মিত্র
পুজোতো প্রায় এসেই গেল। পুজো পেরলেই তারপরই লম্বা বিয়ের মরসুম। আর উত্সব, অনুষ্ঠানে সাজের শেষ কথা শাড়ি। যতই এখন লেহঙ্গা চোলি আর আনারকলির বাজার হোক না কেন, শাড়ির জনপ্রিয়তায় চিড় ধরেনি একটুও। শতাব্দী পেরিয়েও শাড়ি তার স্বাভাবিক সত্ত্বায় স্বমহিমায় বিরাজমান। আর শাড়ির সঙ্গে ব্লাউজের প্রেম অবিচ্ছেদ্য। বিশ্বের সেরা শাড়িও সুন্দর এবং সঠিক ব্লাউজের অভাবে হয়ে যেতে পারে ম্যাড়ম্যাড়ে। আবার নিতান্ত সাদামটি শাড়িই অপূর্ব ব্লাউজের ভালোবাসায় হয়ে উঠতে পারে লাস্যময়ী। সঠিক শাড়ির সঙ্গে মাননসই ব্লাউজের গাঁটছড়া বাঁধার ঘটকালি করলেন অগ্নিমিত্রা পল। যাঁরা এখনও পুজোর ব্লাউজ বানাতে দেননি, লেখা পড়া মাত্রই ছুটে যান দর্জির কাছে। আর পুজোর ভিড়ের মাঝেই তৈরি করুন নিজস্ব স্টাইল স্টেটমেন্ট।
ব্লাউজের স্লিভস বা হাতা
এবারে পুজোয় ছোট কাফ স্লিভ থেকে বড় থ্রি কোয়ার্টার হাতা বা একেবারে ফুলস্লিভ সবকিছুই ফ্যাশনে রয়েছে। তবে স্লিভলেস ব্লাউজ খুব একটা চলবে বলেই মনে করেন অগ্নিমিত্রা। ২ থেকে ৫ ইঞ্চির কাফ স্লিভ, ১৩ থেকে ১৫ ইঞ্চির থ্রি কোয়াটার্স বা ২৩ ইঞ্চির ফুলস্লিভ ব্লাউজ বানানোরই পরামর্শ দিলেন অগ্নিমিত্রা। তবে পুরোটাই নির্ভর করছে মানুষের চেহারার উপর। যাদের হাত একটু মোটা তাদের ফুল স্লিভ এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। হাত মোটা হলে ফুল স্লিভে ঢাকা ব্লাউজে হাত আরও বেশি মোটা লাগবে। আবার হাত খুব রোগা হলে ফুলস্লিভ, থ্রি-কোয়াটার্স ভালো লাগবে। সেক্ষেত্রে ছোট হাতা ব্লাউজে হাত বেশি রোগা লাগতে পারে। পুজোর সময় ট্রাডিশনাল তাঁত বা জামদানি টাইপের শাড়ি সাবেকি স্টাইলে পরলে তার সঙ্গে ঘটি হাতা ব্লাউজও পরতে পারেন। তবে অগ্নির মতে পুজোর সময় গরম থাকে বলে ফুলস্লিভ ব্লাউজ এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। সেক্ষেত্রে বড় স্লিভ পরতে চাইলে থ্রি কোয়ার্টার সবথেকে ভালো। পুজোর পর শীতকালের লম্বা বিয়ের মরসুমের জন্য ফুলস্লিভ ভীষণ ভালো চয়েস।
ব্লাউজের নেকলাইন বা পিঠ
অগ্নি মনে করেন সবথেকে ভালো ডিপ নেক ওপেন ব্যাক ব্লাউজ। এই ধরণের ব্লাউজ যে কোনও চেহারাতেই মানিয়ে যায়। পিছনে হুক দেওয়া ২ থেকে ৪ ইঞ্চি চওড়া ব্যাক সবথেকে সুন্দর। তবে মেদমুক্ত, দাগছোপহীন পিঠে চোলি ব্যাক ব্লাউজ সবসময়ই সুন্দর লাগে। যদি কারও পিঠে দাগ থাকে বা কেউ যদি খুব বেশি রোগা হন তাহলে যে কোনও রকম স্লিভের সঙ্গে কলার দেওয়া ব্লাউজও বানাতে পারেন। একদম হল্টার, স্প্যাগেটি বা বিকিনি স্টাইলের খোলামেলা ব্লাউজের থেকে ঢাকাঢোকার মাঝে একটু খোলা পিঠের ব্লাউজ অনেক বেশি সেনসুয়াস, কিন্তু একেবারেই ভালগার নয় বলেই অগ্নির মত।
কালার কনট্রাস্ট
বিশেষ কোনও কালার কম্বিনেশনকে প্রাধান্য দিতে রাজি নন অগ্নিমিত্রা। কমপ্লেকশেনর ওপরই পুরোটা নির্ভর করছে। অনেক ক্ষেত্রে আবার বেশি কনট্রাস্ট করার উপায়ও থাকে না। যেরকম ভারী কোনও সাউথ সিল্ক বা চেকসের মধ্যে কাঞ্জিভরম শাড়ি পরলে শাড়ির চেকসের মধ্যে থেকেই ব্লাউজের রঙ বাছতে হবে। নাহলে খুব বেশি জমকালো হয়ে যাবে। অন্যদিকে যদি কোনও ব্রাইট একরঙের শাড়ি হয়, যেরকম ইলেকট্রিক ব্লু, সেখানে একদম কনট্রাস্ট সিলভার বা গোল্ডেন টিস্যুর ব্লাউজ বা রেড চেকসের কোনও ব্লাউজ পরা যেতে পারে। আবার যদি অফ হোয়াইট ঢাকাই শাড়ি হয় তো যে কোনও রঙের ব্লাউজ দিয়েই পরে ফেলা যায়। এরকম শাড়ি সবুজ, লাল, অরেঞ্জ, শকিং পিঙ্ক, পার্পল সব রঙের ব্লাউজের সঙ্গেই ভালো লাগবে। এবারে পুজোয় পার্পল, ইলেকট্রিক ব্লু, অরেঞ্জ ভীষণভাবে চলছে বলেও জানালেন অগ্নি।
ব্রাইট শাড়ি উইথ মিউটেড ব্লাউজ নাকি মিউটেড শাড়ি উইথ ব্রাইট ব্লাউজ
এক্ষেত্রেও কোনও একটা অপশনে নিজের স্টাইলকে আবদ্ধ রাখতে চান না অগ্নি। পুরোটাই নির্ভর করবে কমপ্লেকশনের ওপর। যদি কমপ্লেকশন একটু ফর্সার দিকে হয় তাহলে ব্রাইট শাড়ির সঙ্গে মিউটেড ব্লাউজ ভালো লাগবে। ফর্সারা লাল শাড়ি যেরকম পরতে পারেন সেরকমই আবার অফ হোয়াইট শাড়িও পরতে পারেন। তবে যেটাই পরুন না কেন অপজিট শেডটা ব্লাউজে থাকলে ভালো লাগবে। অন্যদিকে যাদের স্কিন টোন একটু ডার্ক তাদের রেড বা রেড ফ্যামিলির শাড়ি খুব ভালো যায়। তার সঙ্গে গোল্ডেন, অফ হোয়াইট, লাইট অরেঞ্জ বা রাস্ট ব্লাউজ পরলে দারুণ মানাবে।
ব্লাউজের মেটিরিয়াল
র সিল্ক, প্রিন্টেড কটন, খাদি, কটকি, ভেলভেট, নেট, টিস্যু সবরকমই চলছে এখন। শাড়ির সঙ্গে ম্যাচ এবং কনট্রাস্ট করে বাছতে হবে ব্লাউজের মেটিরিয়াল। এক্ষেত্রে অগ্নিমিত্রার একমাত্র বক্তব্য, শাড়ি এবং ব্লাউজ যেন একে অপরকে কমপ্লিমেন্ট করে।