ভোটের আগেই ঘোষণা Mamata-র, বিধান পরিষদ গঠনের প্রক্রিয়া এগোল আরও এক ধাপ
বাংলায় বিধান পরিষদ গঠনের প্রক্রিয়া এবার এগিয়ে নিয়ে যেতে তত্পর রাজ্য। সেই লক্ষ্যে বিধানসভার চলতি অধিবেশনেই উঠছে এই বিষয়টি।
নিজস্ব প্রতিবেদন: সেই ২০১১ সালে ভাবনাচিন্তা করেছিল পরিবর্তনের সরকার। তার ১০ বছর পর আরও এক ধাপ প্রশস্ত হল বিধান পরিষদ গঠনের পথ। একুশের ভোটের প্রার্থীতালিকা ঘোষণার সময়ে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে ছিলেন, ক্ষমতায় এলে বিধান পরিষদ গঠন করা হবে। বিধানসভার আসন্ন অধিবেশনে আগামী ৬ জুলাই এনিয়ে আলোচনা হবে সভাকক্ষে। পরিষদ গঠনে আশাবাদী তৃণমূল। শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে এনিয়ে অবস্থান চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছে বিরোধী দল বিজেপি।
বাংলায় বিধান পরিষদ গঠনের প্রক্রিয়া এবার এগিয়ে নিয়ে যেতে তত্পর রাজ্য। সেই লক্ষ্যে বিধানসভার চলতি অধিবেশনেই উঠছে এই বিষয়টি। ৬ জুলাই বিধান পরিষদ গঠন ইস্যু আলোচনার জন্য আনা হবে। ২০১১ সালে অগাস্টে বিধানসভায় বিধান পরিষদের প্রস্তাব এনেছিল তৃণমূল। এনিয়ে সেইসময় অ্যাড হক কমিটিও গঠন করা হয়। কমিটির রিপোর্টে বিধান পরিষদ গঠনের পক্ষে সিলমোহর পড়ে। সেই প্রক্রিয়া হঠাৎ থমকে যাওয়ায় আর এগোয়নি বিষয়টি। বিধানসভা ভোটের আগে প্রার্থী তালিকা ঘোষণার সময় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন,'অনেকেই টিকিট পাননি, তাঁরা বিধান পরিষদের সদস্য হতে পারবেন।' এ নিয়ে এখনই কিছু বলতে নারাজ পদ্মশিবির। তাঁদের অবস্থান পরে স্পষ্ট করে দেওয়া হবে বলে জানান বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা।
দিল্লিতে সংসদের ২ কক্ষ লোকসভা ও রাজ্যসভার ধাঁচেই রাজ্যেও দু'টি কক্ষ গঠনের পরিকল্পনা সরকারের। সংসদে উচ্চকক্ষ বা রাজ্যসভার যে স্থান, রাজ্যে বিধান পরিষদেরও সেই গুরুত্ব রয়েছে। অর্থ বিল ছাড়া যে কোনও বিল বিধান পরিষদে তোলা যায়। নিয়ম অনুযায়ী, বিধান পরিষদের সদস্য সংখ্যা সেই রাজ্যের বিধানসভার সদস্য সংখ্যার এক তৃতীয়াংশের বেশি কখনও হবে না। সেই হিসেবে, এরাজ্যে বিধান পরিষদের সদস্য সংখ্যা সর্বাধিক হতে পারে ৯৮ জন। বিধান পরিষদের সদস্য সংখ্যা ৪০-এর থাকবে না। বিধান পরিষদের কার্যকালের মেয়াদ ৬ বছর। সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষজন এর সদস্য হতে পারেন। তবে বিধায়ক বা সাংসদ থাকাকালীন কেউ বিধান পরিষদের সদস্য হতে পারবেন না।
বিধান পরিষদ এ রাজ্যে নতুন নয়। দীর্ঘ পাঁচ দশক আগে ১৯৬৯ সালের ২১ মার্চ পশ্চিমবঙ্গে বিধান পরিষদ অবলুপ্তির একটি প্রস্তাব পাস হয়। সংসদে এ সংক্রান্ত আইন পাসের পর, ১৯৬৯ সালের অগাস্টে পশ্চিমবঙ্গে অবলুপ্ত হয় বিধান পরিষদ। যুক্তফ্রন্ট সরকার যখন বিধান পরিষদের অবলুপ্তি ঘটায়, তখন সেই সিদ্ধান্তের শরিক ছিল বামেরাও। তৃণমূল ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পরই ফের বিধান পরিষদ গঠনের তোড়জোড় শুরু করে। কিন্তু নানা কারণে তা ওইসময় আর কার্যকর হয়নি। এবার তা গঠনের লক্ষ্যে তত্পর রাজ্য। এই পথ যদিও বেশ দীর্ঘ। সবার আগে রাজ্য বিধানসভায় এই প্রস্তাব পাস করাতে হবে। এরপর তা যাবে রাজ্যপালের কাছে। রাজ্যপাল অনুমোদন দিলে তা সংসদে। সংসদের দুই কক্ষে পাস হলে চূড়ান্ত অনুমোদন দিতে হবে রাষ্ট্রপতিকে। বর্তমানে উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশ সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিধান পরিষদ রয়েছে। বাংলার নামও এই তালিকায় যোগ করতে তত্পর শাসক দল।
আরও পড়ুন- বিধানসভায় নিজের ঘরেই রইলেন বিরোধী দলনেতা Suvendu, এড়ালেন সর্বদল