মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরই সুদীপ্তর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত চিঠি, CBI-কে নালিশ শুভেন্দুর

চলতি মাসের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন সারদাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সুদীপ্ত সেন।

Reported By: সুতপা সেন | Updated By: Dec 11, 2020, 06:57 PM IST
মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরই সুদীপ্তর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত চিঠি, CBI-কে নালিশ শুভেন্দুর

নিজস্ব প্রতিবেদন: সারদাকর্তার চিঠির প্রেক্ষিতে সিবিআই অধিকর্তাকে চিঠি দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। চিঠিতে তাঁর অভিযোগ, চাপ ও প্রভাব খাটিয়ে সুদীপ্ত সেনকে দিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত চিঠি লেখানো হয়েছে। রাজ্যের মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরই সুদীপ্তর চিঠিতে তাঁর নাম থাকার কথাও উল্লেখ করেছেন শুভেন্দু।             

চলতি মাসের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন সারদাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সুদীপ্ত সেন। ওই চিঠিতে অভিযোগ করেছেন, ৬ রাজনীতিবিদ তাঁর কাছ থেকে প্রচুর টাকা নিয়েছিলেন। ওই চিঠির প্রেক্ষিতে সিবিআই ডিরেক্টরকে চিঠি দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। চিঠির বিষয়,'সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চলা সারদাকাণ্ডের তদন্ত প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা'। শুভেন্দু লিখেছেন-'সংবাদমাধ্যম থেকে জেনেছি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন সুদীপ্ত সেন। কয়েক বছর পর হঠাৎ গত ১ ডিসেম্বর সুদীপ্ত জেলে বসে চিঠি দিয়েছেন। ওই চিঠিতে তাঁর অভিযোগ, প্রচুর টাকা নিয়েছেন  ৫ রাজনীতিবিদ। সিবিআই ও রাজ্য পুলিসকে তদন্ত ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার অনুরোধ করেছেন। তাঁর চিঠিতে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এই ধরনের ব্যক্তিরা এখন বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন।

বলাই বাহুল্য, বিরোধী দলের রাজনীতিকদের সঙ্গে আমার নামও রয়েছে ওই চিঠিতে। এই ধরণের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত চিঠিতে এমন সময় আমার নাম নেওয়া হল, যখন আমি পশ্চিমবঙ্গের সেচ, জলসম্পদ ও পরিবহণমন্ত্রীর পদ থেকে সবেমাত্র ইস্তফা দিয়েছি। বলে রাখি, আমি ২৭ নভেম্বর ইস্তফা দিই। চিঠিটি লেখা হল ১ ডিসেম্বর। 

অদ্ভূতভাবে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার ও সংশোধনাগারের এডিজি-আইজি জেলের মধ্যে অভ্যন্তরীণ সংযোগ,অর্থাৎ ওই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত চিঠি হাতে পেল সংবাদমাধ্য়ম। ব্যাপক প্রচার চালানো  হল।   
উপরোক্ত ঘটনাক্রম থেকে আমার আশঙ্কা, এই চিঠি লেখার নেপথ্যে সন্দেহের যথেষ্ট উপাদান রয়েছে। প্রভাবশালীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জেল কর্তৃপক্ষ প্রভাব খাটাতে পারে সুদীপ্ত সেনের উপরে। তাঁকে চাপ দেওয়াও হতে পারে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, চিঠির লেখককে প্রভাবিত করা হয়েছিল। অথবা দুর্নীতির তথ্য গোপন করতে চাইছেন তিনি। আপনার অফিস দুর্নীতির তদন্ত করছে। আপনাকে অনুরোধ করছি, সুদীপ্ত সেনের এই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত চিঠির সব দিক খতিয়ে দেখা হোক, এমনকি লেখার সময় এবং প্রেক্ষাপটও। উপযুক্ত পদক্ষেপের জন্য গোটা বিষয়টি আপনাকে অবগত করলাম।'     

সারদা মামলায় গত ৭ বছর ধরে জেল খাটছেন সুদীপ্ত সেন। জেলে বসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন ওই চিঠিতে তিনি দাবি করেছেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ৬ প্রভাবশালী নানা সময়ে তাঁর কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। অতিসম্প্রতি সারদা মামলায় একটি অডিয়োক্লিপের কথা হাইকোর্টে জানায় সিবিআই। ওই অডিয়োক্লিপে একাধিক ব্যক্তির কণ্ঠস্বর রয়েছে। যাতে গতি পেতে পারে তদন্ত। হাইকোর্টে দেবযানীর জামিন-আর্জির মামলায় সিবিআই জানিয়েছিল, তারা ওই অডিয়োক্লিপের ভিত্তিতে দেবযানী ও সুদীপ্তকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে চায়। তা ইতিমধ্যেই মঞ্জুর করেছে নিম্ন আদালত। মামলার তদন্তে দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। তখন সিবিআই দাবি করে, নিম্ন আদালতে সাক্ষী ও নথিপত্র নিয়ে সমস্যা রয়েছে। দ্রুত তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।

আরও পড়ুন- 'কেমন আছেন?', Mukul-কে ফোন Amit Shah-এর

.