সারদা কেলেঙ্কারি, এক নজরে

প্রায় দশ মাস ধরে সুপ্রিম কোর্টে চলেছে মামলা। শুনানির সময় সারদা-কাণ্ডে রাজ্য পুলিসের তদন্তে বারবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিচারপতিরা। শীর্ষ আদালতে সিবিআই তদন্তের লাগাতার বিরোধিতা করে গেছে রাজ্য সরকার। শেষপর্যন্ত সবদিক বিচার করে সারদা কেলেঙ্কারিতে সিবিআই তদন্তেরই নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।

Updated By: May 9, 2014, 07:16 PM IST

প্রায় দশ মাস ধরে সুপ্রিম কোর্টে চলেছে মামলা। শুনানির সময় সারদা-কাণ্ডে রাজ্য পুলিসের তদন্তে বারবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিচারপতিরা। শীর্ষ আদালতে সিবিআই তদন্তের লাগাতার বিরোধিতা করে গেছে রাজ্য সরকার। শেষপর্যন্ত সবদিক বিচার করে সারদা কেলেঙ্কারিতে সিবিআই তদন্তেরই নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।

২০ মে, ২০১৩

সারদা কেলেঙ্কারির সিবিআই তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা।

১৮ জুলাই, ২০১৩

জনস্বার্থ মামলা গ্রহণ করে রাজ্য সরকার, সেবি, ইডি-সহ সব পক্ষকে নোটিশ পাঠানোর নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।

এরপর গত দশমাস ধরে বিচারপতি টি এস ঠাকুর এবং বিচারপতি সি এস নাগাপ্পনের ডিভিশন বেঞ্চে চলেছে শুনানি।

২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪

বাজার থেকে সারদার তোলা হাজার হাজার কোটি টাকা কোথায় গেল?এই টাকার খোঁজ করা না হলে কেন তদন্তে গাফিলতির কথা উঠবে না? সিবিআই তদন্তে কেন আপত্তি রাজ্য সরকারের? জানতে চান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা।

রাজ্যের আইনজীবী যুক্তি দেন,

সারদার ৩৮৩ টি মামলার মধ্যে ২৭৮টি মামলাতেই চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলে সিটের তদন্তকারীদের মনোবল ধাক্কা খাবে। ভোটের আগে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সিবিআই তদন্ত চেয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সারদার টাকা কোথায় গেল তা হলফনামা দিয়ে জানানোর জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

৪ মার্চ, ২০১৪

রাজ্য সরকারের হলফনামা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতিরা।
তাঁরা বলেন,

হলফনামা অত্যন্ত আগোছালো, অনেকটা হাওয়ালা ডায়েরির মতো। আমানতকারীদের টাকা কী ভাবে উধাও হল সে বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য নেই।

২৬ মার্চ, ২০১৪

সারদা কেলেঙ্কারিতে কারা জড়িত? কারা লাভবান? প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতিরা বললেন, সারদা কেলেঙ্কারি বৃহত্তর ষড়যন্ত্র।
এই ষড়যন্ত্রের রহস্য উন্মোচনে রাজ্য কি তদন্ত করছে? ইচ্ছাকৃতভাবে এই দিকটি এড়িয়ে গেলে সিবিআই তদন্তের দরকার হবে। বড় বিষয়গুলি এড়িয়ে ছোট বিষয়ে সিট মাথা ঘামাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতিরা।

শীর্ষ আদালতে রাজ্যের আইনজীবী বলেন,

বিধাননগর থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় দ্রুত চার্জশিট দেওয়া হবে। সেই চার্জশিটেই থাকবে সারদা-কাণ্ডে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের বিবরণ। এ দিনের শুনানিতেও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে জনস্বার্থ মামলার কথা বলেন রাজ্যের আইনজীবী।

শীর্ষ আদালতে রাজ্য সরকার জানায়, সারদার সফটওয়্যার থেকে পাওয়া তথ্য বলছে বাজার থেকে সুদীপ্ত সেন ২৪৬০ কোটি টাকা তুলেছিলেন। এই টাকা কোথায় গেল, তার সবটা সারদার সফটওয়্যার থেকে জানা যায়নি।

বিচারপতিরা প্রশ্ন তোলেন, শুধুমাত্র সারদার সফটওয়্যার থেকে পাওয়া তথ্যের ওপরই যদি পুলিস নির্ভর করে তাহলে তদন্তের কী হচ্ছে?

২৬ মার্চের শুনানিতে সারদা কেলেঙ্কারির বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের বিষয়ে রাজ্যকে হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত।

৯ এপ্রিল, ২০১৪

সারদা-কাণ্ডে কুণাল ঘোষকে দায়ী করে সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দেয় রাজ্য সরকার। বলা হয়, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সহ বেশ কয়েকজন নেতার ভূমিকা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে।

বিচারপতিরা বলেন,

সারদা-কাণ্ডের দিকে তাকালে দেখা যাবে লুঠ চলছিল। এই মামলা অর্ডিনারি নয়, এটা এক্সট্রা অর্ডিনারি মামলা।

রাজ্যের আইনজীবী বলেন, প্রয়োজনে সিটের তদন্তে নজরদারি করুক সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু, সিবিআই যেন দেওয়া না হয়।

বিচারপতিরা বলেন,

সারদা-কাণ্ডে রাজনৈতিক ব্যক্তিরা জড়িত। সবসময় আদালতের নজরদারি কার্যকর হয় না। সিবিআই তদন্তে কেন আপত্তি জানাচ্ছে রাজ্য সরকার?

১৬ এপ্রিল, ২০১৪

সারদা-কাণ্ডে কেন সিবিআই তদন্ত হবে না ফের তা রাজ্যের আইনজীবীর কাছে জানতে চায় সুপ্রিম কোর্ট।

সিবিআই তদন্তের বিরোধিতায় রাজ্যের আইনজীবী দাবি করেন,

সিটের তদন্তে কোনও গাফিলতি নেই। সিবিআই দিলে তদন্তে দেরি হবে।

চিটফান্ড-কাণ্ডে অনেক আগেই সিবিআই তদন্তে সম্মতি জানিয়েছিল ত্রিপুরা ও অসম সরকার। এ বিষয়ে ওড়িশা সরকারের বক্তব্য শুনে পশ্চিমবঙ্গের ব্যাপারে চূড়ান্ত নির্দেশ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল শীর্ষ আদালত।

২৩ এপ্রিল, ২০১৪

সারদা-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তে তাদের আপত্তি নেই বলে সুপ্রিম কোর্টে জানিয়ে দেয় ওড়িশা সরকার।

রায়দান স্থগিত রাখলেও সে দিন বিচারপতিরা বলেন,

প্রতারিতদের মনে আস্থা ফেরানো দরকার। সারদায় জড়িত নেতা-মন্ত্রী সহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। রাজ্যে রাজ্যে আলাদা তদন্ত হলে সমস্যা বাড়বে।

আদালতে রাজ্যের আইনজীবী বলেন,

অন্য রাজ্যে সিবিআই হলে হোক। পশ্চিমবঙ্গে সারদা-কাণ্ডের তদন্তে সিটই যথেষ্ট।

৯ মে, ২০১৪

দশ মাসের সওয়াল-জবাব শেষে সবদিক বিবেচনা করে শেষপর্যন্ত সারদা-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।

.