Baguiati Student Abduction and Murder: কিছুই করেনি থানা! বাগুইআটির ছাত্র অপহরণ ও খুনে গুরুতর অভিযোগ পুলিসের বিরুদ্ধে
বসিরহাট পুলিসের তরফে বলা হচ্ছে দেহ উদ্ধারের পরই সিআইডি থেকে পার্শবর্তী জেলাকে তা জানানো হয়। তাহলে বাগুইআটি থানা তা পেল না কেন?
পিয়ালী মিত্র ও বিক্রম দাস: বাগুইআটির দুই ছাত্রের অপহরণ ও খুনের ঘটনায় পুলিসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে। গত ২২ আগস্ট অভিষেক নস্কর ও অতুন দে নামে দুই ছাত্র নিখোঁজ হয়ে যায়। তাদের মুক্তিপণ চেয়ে বাড়িতে ফোনে মেসেজ করা হয়। কিন্তু শেষপর্যন্ত তাদের দেহ পাওয়া যায় বাসন্তী হাইওয়ের পাশে ক্যানালের মধ্য়ে। অভিযোগ উঠছে বাগুইআটি থানার কাছে গেলেও সেখান থেকে কোনও সাহায্য পায়নি দুই ছাত্রের পরিবার। মৃত ছাত্র অভিষেক নস্করের মা কমলা নস্করের অভিযোগ, বাগুইআটি থানা কিছুই করেনি। আমার ছেলে স্কুলে যাওয়ার নাম করে মামার বাড়ি চলে গিয়েছিল। বিকেল পৌঁনে পাঁচটা নাগাদ যখন ফোন করেছি তখন ও কথা বলেছে। বলল এক বন্ধুর বাড়িতে যাচ্ছে। সন্ধ্যে সাড়ে আটটার সময় বলে আমার দাদার ছেলের সঙ্গে গাড়ি কিনতে যাচ্ছে। তারপর আর কোনও খোঁজ নেই। ২২ তারিখ থেকে থানা পুলিস অনেক করেছি। পুলিস বলেছিল করছি, ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিছুই করেনি ওরা। আমরা ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত দিয়েছিলাম। আমরা বলেছিলাম আমাদের বাচ্চাগুলোকে ফিরিয়ে দিন। সামনে দাঁড়িয়ে বলতে পারি বাগুইআটি থানা কিছুই করেনি।
আরও পড়ুন- Kidnap and murder: মুক্তিপণ না মিলতেই চলন্ত গাড়িতে খুন, বাগুইআটির অপহৃত ২ ছাত্রের দেহ উদ্ধার
অভিযোগ, ২২ তারিখ নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ নিয়ে বাগুইআটি থানায় যায় অভিষেকের পরিবার। কিন্তু পুলিস কোনও অভিযোগ নেয়নি। ২৪ তারিখ পুলিস অপহরণের মামলা রুজু করে। নিয়ম মোতাবেক নিখোঁজের অভিযোগ পেলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপহরণের মামলা রুজু করতে হয়। এখনওপর্যন্ত খুনের মটিভ স্পষ্ট হচ্ছে না। শুধুমাত্র ৫০ হাজার টাকার জন্যই খুন নাকি এর পেছনে অন্য কোনও কোনও কারণ রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে যে প্রশ্নটা বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে তা হল পুলিসের ভূমিকা। ডিসি ডিডি বিধাননগরকে আজ পুলিসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, পরিবারের তরফে যদি অভিযোগ করা হয় তাহলে স্থানীয় থানার ভূমিকা খতিয়ে দেখা হবে।
গত ২৩ তারিখ বসিরহাটের ন্য়াজাটে একজনের দেহ উদ্ধার হয়। সেই দেহের ময়না তদন্তও হয়ে যায়। সেখানে দেখা গিয়েছে শ্বাসরোধ করেই খুন করা হয়েছে ওই কিশোরকে। পুলিস বলছে যেহেতু দুই কিশোরের অপরহণের মামলা তাই অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তা বিচার করা হয়েছে। বসিরহাট পুলিসের তরফে বলা হচ্ছে দেহ উদ্ধারের পরই সিআইডি থেকে পার্শবর্তী জেলাকে তা জানানো হয়। তাহলে বাগুইআটি থানা তা পেল না কেন? তাহলে দায় কার? বসিরহাট পুলিস জেলা? বিধাননগের পুলিস কমিশনারেট? নাকি দায় সিআইডির? কী কারণে ৬ তারিখ সেই দেহ সনাক্ত হচ্ছে। কেন এই খোঁজ খবর আগে চালানো হল না?এতটা সময় কীভাবে লাগল?
এনিয়ে বিধাননগরের গোয়েন্দা প্রধান বলেন, গত ২২ তারিখ অভিজিত্ বোস, সত্যেন্দ্র ও সঙ্গে আরও ২-৩ জন দুটি বাচ্চাকে গাড়ির মধ্যে শ্বাসরোধ করে খুন করে। বাসন্তী হাইওয়ের উপরে কোনও একটি জায়গায় রাত ৯-১০টার মধ্যে ওই ঘটনা ঘটায়। এরপর দুটি ভিন্ন জায়গায় ক্যানালের মধ্যে দুটি দেহ ফেলে দেওয়া হয়।
পুলিসকে কিছুটা বিভ্রান্ত করতে প্রথমে অতনু দে-র পরিবারকে মোবাইলে মেসেজ করা হয়। চাওয়া হয় মুক্তিপণ। সেই মেসেজের উত্তর না মেলায় অতুনর কয়েকজন বন্ধুকে মেসেজ পাঠায় অপরহণকারীরা। সেখানে লেখা হয়, ওর বাবা কী অশিক্ষিত! মেসেজের কোনও উত্তর দেয় না! কাল পর্যন্ত টাকার ব্যবস্থা না করতে পারলে অতনুকে ভুলে যা। ১ কোটি টাকা রেডি কর। তা জোগাড় করতে না পারলে অতনুকে ভুলে যা। আমার কলব ও মেসেজের অপেক্ষায় থাক। দুদিন টাইম দিলাম। মনে করা হচ্ছে খুন করে ফেলার পর মুক্তিপন চাওয়া হয়। প্রথমে লাখ টাকা ও পরে তা বাড়িয়ে এক কোটি টাকা করে দেওয়া হয়।