ভোট শেষ তবুও হিংসা অব্যাহত জেলায় জেলায়
ভোট শেষ। কিন্তু লাগামছাড়া সন্ত্রাস চলছেই। খড়গপুরের রাধানগরে ২৫ জন বাম কর্মী সমর্থকের বাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ভোট শেষ। কিন্তু লাগামছাড়া সন্ত্রাস চলছেই। খড়গপুরের রাধানগরে ২৫ জন বাম কর্মী সমর্থকের বাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসে বিধ্বস্ত খড়গপুরের রাধানগর। গতকাল রাতে প্রায় দুশো-তিনশোজনের একটি দল সিপিআইএম কর্মী সমর্থকদের বাড়িতে তাণ্ডব চালায়। ঘরের চাল থেকে মাটির দাওয়া, সব কিছুই ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। হামলাকারীদের আক্রোশ থেকে রক্ষা পায়নি শিশু ও মহিলারাও। চলে লুঠপাট, মারধর। দুষ্কৃতীদের মারে আটজন গ্রামবাসী আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিনজন মহিলা। তাঁদের সবাইকেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বেশ কয়েকজন সিপিআইএম কর্মী ঘরছাড়া। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসে তপ্ত ঘাটালের রাজনগরও। সেখানে বাম কর্মীসমর্থকদের দশটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।
ভোট শেষ হতেই হামলা শুরু হয়ে গেল বারাকপুর শিল্পাঞ্চলে। নৈহাটির বড়ায় এক প্রাক্তন সেনাকর্মীর বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়া হয়। প্রাক্তন সেনাকর্মী সুনির্মল বিশ্বাসের অভিযোগ, রবিবারই ভোট না দিতে হুমকি দিয়েছিল এলাকা তৃণমূল নেতাকর্মীরা। বাড়িতে রীতিমতো বাইকবাহিনী এসে উপস্থিত হয়। কিন্তু সেই হুমকি উপেক্ষা করেই গতকাল সপরিবারে ভোট দিতে যান তাঁরা। এরপরই গতকাল রাতে সুনির্মলবাবুর বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়া হয়। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
ভোট মিটতেই শহরের বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়ে যায় সন্ত্রাস। অভিযোগ, কসবার জগন্নাথ ঘোষ রোডে গতকাল সন্ধ্যায় ব্যাপক বোমাবাজি হয়। তৃণমূল কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই বোমা ছোঁড়ে বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছয় পুলিস। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ করে পুলিস। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঘটনার প্রতিবাদ করলে পুলিস তাঁদের ওপরই লাঠিচার্জ করে। উত্তেজনা থাকায় এলাকায় পুলিস পিকেট মোতায়েন করা হয়।
ভোট পরবর্তী হিংসায় উত্তপ্ত ক্যানিংয়ের জীবনতলা। বামদলের এজেন্ট হিসেবে কাজ করায় নারায়ণপুরে তিন বামকর্মীর বাড়িতে হামলা হয়েছে। পুলিসের সামনেই বোমাবাজি হয়েছে বলে অভিযোগ। বাসন্তীর ভাঙনখালিতেও চারটি বাড়িতে ভাঙচুর, লুঠপাট হয়েছে। দুটি ঘটনাতেই অভিযোগ তৃণমূলের দিকে।
সিপিআইএম কর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল দক্ষিণদিনাজপুরের গঙ্গারামপুরে। নিহতের নাম সাবেকুল সরকার। আজ সকালে বাগধারা ব্রিজের তলায় তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। সিপিআইএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হীরেন সাহা এই ঘটনাকে রাজনৈতিক খুন বলেই দাবি করেছেন। অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। সাবেকুলের বাবা হরসুরার প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান হাসিমুদ্দিন সরকার। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।