নিরাপত্তা নেই, তাই মন্ত্রীর কোপে সংসদ নির্বাচন

আগামী ৬ মাস নির্বাচন বন্ধ রাখার জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের কাছে আর্জি জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। তাঁর যুক্তি, কয়েক দিনের মধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন স্কুল কলেজে বোর্ড পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। মাদ্রাসা, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক সহ বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রে যেহেতু ব্যাপক পুলিসি নিরাপত্তার প্রয়োজন, সেই কারণে নির্বাচন কেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব হবে না। কোনও নির্দিষ্ট ঘটনা নয়, রাজ্য জুড়ে ছাত্র নির্বাচন সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনা করার জন্যই এই আর্জি বলেও জানিয়েছেন তিনি। এর ফলে গার্ডেনরিচের হরিমোহন ঘোষ কলেজ সহ সব কলেজেই নির্বাচন বন্ধ হয়ে গেল। আগামী নির্বাচন পর্যন্ত পুরোনো ছাত্র সংসদই পরিবর্তন হবে না।

Updated By: Feb 18, 2013, 07:59 PM IST

ছাত্র সংসদ নির্বাচনে অশান্তি এড়াতে এবার নির্বাচন বন্ধেরই দাওয়াই দিল রাজ্য সরকার। সরকারের পরামর্শ আগামী ছমাস রাজ্যের কলেজগুলিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আপাতত বন্ধ থাকুক। সরকারের যুক্তি, সামনেই বিভিন্ন বোর্ডের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। পরীক্ষাকেন্দ্র এবং ছাত্র সংসদ নির্বাচন দু জায়গায় একসঙ্গে পুলিস মোতায়েন করা সম্ভব নয়।  রাজ্যের এই যুক্তি ঘিরে  সমালোচনার ঝড় উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনিক ব্যর্থতা ঢাকতেই এই সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার?
গত কয়েক মাস ধরেই ছাত্র সংসদ নির্বাচনে  বোমা, গুলি বন্দুকের সাক্ষী হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কখনও মৃত্যু হয়েছে স্বপন কোলের, কখনও চোখ হারিয়েছেন এক  ছাত্র। আর এবার গার্ডেনরিচের হরিমোহন ঘোষ কলেজে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রাণ দিতে হল এক পুলিস কর্মীকে। অভিযোগ, ছাত্র সংসদ নির্বাচন ঘিরে আখেরে রাজনৈতিক দলগুলি নিজেদের প্রাধান্য বিস্তারের জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভিযোগ উঠেছে পুলিসের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়েও। সমাধান না খুঁজে শেষ পর্ষন্ত  ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধের সিন্ধান্ত নিল সরকার।
শান্তিপূর্ণ ভাবে কোনও কলেজেই কি আর নির্বাচন করা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন শিক্ষামন্ত্রী? এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকার স্পষ্টত বোঝাতে চাইছে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আর ছাত্রদের স্থান নয়। সাধারণ নির্বাচনের মতো ক্ষমতা দখলের জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্বিতীয়ত প্রত্যেক বছরই এই সময় রাজ্যের বিভিন্ন কলেজের নির্বাচন হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন বোর্ডের পরীক্ষাও চলে। তা হলে এবছর কেন সেই ব্যবস্থা থেকে সরে আসতে হচ্ছে? এটা কী সরকারের অদক্ষতার প্রমাণ হয়ে দাঁড়ালো না?
নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই রাজ্যের বিভিন্ন কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়। কিন্তু সেই নির্বাচনের ভয়াবহ রূপ গত কয়েক বছরে সকলের সামনে উঠে এসেছে। অনেকেই মনে করছে এর পিছনে সরকারের বড় ভূমিকা রয়েছে। নিজের দলের উপরে নিয়ন্ত্রনহীনতাই সরকারকে এই সিদ্ধান্তের দিকে ঠেলে দিয়েছে? প্রশ্ন উঠেছে, গণতান্ত্রিক পথে নির্বাচন বন্ধ করে আদৌ কী এই সমস্যার সমাধান হবে?

.