আর্থিক দাবিতে সর্বদল চান মুখ্যমন্ত্রী, অনীহা বিরোধীদের প্রশ্নের জবাব দিতে
রাজ্যের জন্য আর্থিক সাহায্যের দাবিতে এবার দিল্লিতে সর্বদলীয় স্তরে দরবারের আবেদন জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ বিধানসভায় তিনি এই আবেদন করেন। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, রাজ্যকে আর্থিক সাহায্যের জন্য তিনি একাধিকবার প্রধানমন্ত্রী এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জির কাছে দরবার করেছেন। কিন্তু কোনও সাহায্য পাননি।
রাজ্যের জন্য আর্থিক সাহায্যের দাবিতে এবার দিল্লিতে সর্বদলীয় স্তরে দরবারের আবেদন জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ বিধানসভায় তিনি এই আবেদন করেন। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, রাজ্যকে আর্থিক সাহায্যের জন্য তিনি একাধিকবার প্রধানমন্ত্রী এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জির কাছে দরবার করেছেন। কিন্তু কোনও সাহায্য পাননি। তাই বাংলার দাবিকে জোরদার করে দিল্লিতে পৌঁছতে এবার সর্বদল দরবারের রাস্তায় হাঁটতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়েছে বামেরা। তবে, বাম নেতৃত্বের বক্তব্য, আর্থিক দাবিদাওয়া আদায়ে রাজ্য সরকারের লিখিত বয়ানের ওপরই শাসকদলের সঙ্গে দিল্লি যাওয়ার বিষয়টি নির্ভর করবে। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র এদিন বিধানসভায় বলেন, এই ইস্যুতে বামেরাও কেন্দ্রকে বলেছে। রাজ্যের স্বার্থে দিল্লি যেতে বামেদের আপত্তি নেই। কিন্তু, কী বয়ানে আর্থিক সাহায্য চাওয়া হচ্ছে তা দেখতে হবে।
তবে দিল্লি যাত্রায় মুখ্যমন্ত্রী সব দলকে আহ্বান জানালেও রাজ্যের কংগ্রেস বিধায়করা তাতে সামিল হবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ, এই ইস্যুতেও প্রদেশ কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের মতবিরোধ ইতিমধ্যেই মাথাচাড়া দিয়েছে। শুক্রবার, বিধানসভায় দলের পরিষদীয় নেতা মহম্মদ সোহরাব বলেন, মুখ্যমন্ত্রীকে একাধিকবার এ নিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে কংগ্রেস। কিন্তু, তিনি একবারের জন্যও প্রদেশ কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা করেননি। জবাবে, বিধানসভার ভিতরেই কংগ্রেসকে রীতিমতো কটাক্ষ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বারবার কথা বলার পরও তাঁকে যে রাজ্যের কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে, তা তিনি জানতেন না।
সাম্প্রতিককালে দিল্লিতে আর্থিক দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনার জন্য কখনও মুখ্যমন্ত্রী নিজে গেছেন। কখনও পাঠিয়েছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে। কিন্তু সুরাহা হয়নি। প্রকল্পভিত্তিক বরাদ্দ মঞ্জুর করতে কেন্দ্র রাজি হলেও সুদ মকুবের দাবিতে এখনও সাড়া মেলেনি। এই পরিস্থিতিতে এবার দিল্লির কাছ থেকে টাকা আদায়ে বামেদের সাহায্য চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার বিধানসভার অধিবেশন বয়কট করে বামেরা। তবে, কংগ্রেস বিধায়করা উপস্থিত ছিলেন। এদিন, বিরোধী শূন্য বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের উন্নয়নের স্বার্থে সব দল মিলে দিল্লিতে যাওয়া উচিত। পরিষদীয় মন্ত্রীকে বলা হয়েছে সকলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে।
অন্যদিকে, বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বিরোধীদের কোনও প্রশ্নেরই উত্তর দিচ্ছেন না-এই অভিযোগে আজই ওয়াকআউট করেন বাম বিধায়করা। তার আগে অধ্যক্ষকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। বামেদের অভিযোগ, আজ বিধানসভার প্রশ্নোত্তরপর্বে যে তালিকা অনুযায়ী আলোচনার কথা ছিল, তা নিয়মবিরুদ্ধ ভাবে বদলে দেওয়া হয়েছে।
গত ১৩ মাসে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতা চলাকালীন ওয়াকআউট করলেন বামেরা। এর আগে সংগ্রামপুরে বিষমদ কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর মদে বিষ মেশানোর মন্তব্যের প্রতিবাদে সভা ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে এসেছিলেন তাঁরা। আজও কতকটা একইভাবে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতা চলাকলীন সভা থেকে ওয়াকআউট করেন তাঁরা। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের অভিযোগ, ক্ষমতায় আসার পর থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় বিরোধীদের একটি প্রশ্নেরও উত্তর দেননি।
যদিও বামদের এই অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ প্রধান শাসক দল। শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বাম বিধায়কদের ওয়াকআউট সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়ন কর্মসূচিকে আটকাতেই বিধানসভায় গণ্ডগোল করছেন কয়েকজন হাতেগোণা লোক।