কিমাশ্চর্যম! নন্দীগ্রামের ভোট নিয়ে বিভ্রান্তি, নথি নিয়ে চাপানউতোর

গোড়া থেকে নন্দীগ্রামের ফলাফলে কারচুপির অভিযোগ করছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। অন্যদিকে ভোটার সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তিতে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)পাল্টা টুইট করলেন।

Updated By: Jul 1, 2021, 07:40 AM IST
কিমাশ্চর্যম! নন্দীগ্রামের ভোট নিয়ে বিভ্রান্তি, নথি নিয়ে চাপানউতোর

শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায়

ভোটার ৬৭৬। ভোট পড়েছে ৭৯৯। তাজ্জব করে দেওয়ার মতো এই ঘটনা ঘটেছে নন্দীগ্রামের (Nandigram) রেয়াপাড়ার এস এন রায় স্কুলের বুথে। Zee ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালের হাতে এসেছে নির্বাচন কমিশনের এক্সক্লুসিভ সেই নথি। বিষয়টি তৃণমূলের (TMC) কারসাজি বলে উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি (BJP)। তৃণমূলের বক্তব্য, তাদের অভিযোগই সঠিক বলে প্রমাণিত হচ্ছে। নন্দীগ্রামের একাধিক জায়গায় গরমিল হয়েছে।

 

২ মে ফলপ্রকাশের দিনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) অভিযোগ করেছিলেন, নন্দীগ্রামে কারচুপি হয়েছে। আদালতে যাবেন। সপ্তাহ দুয়েক আগে হাইকোর্টে মামলাও করেছেন তৃণমূল নেত্রী। এর মধ্যেই Zee ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালের হাতে এল রেয়াপাড়ার এস এন রায় স্কুলের বুথের 'অ্যাকাউন্ট অব ভোটস রেকর্ডেড'। ওই নথিতে স্পষ্ট লেখা রয়েছে, ভোটার সংখ্যা ৬৭৬। ভোটদান ৭৯৯। কিমাশ্চর্যম! সংখ্যাতত্ত্বের এমন উলট-পুরাণ দেখেও চোখে পড়েনি প্রিসাইডিং অফিসারের। স্বাক্ষর করে দিয়েছেন ফর্ম ১৭ সি-তে। 

   

 

গোড়া থেকে নন্দীগ্রামের ফলাফলে কারচুপির অভিযোগ করছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। প্রত্যাশিতভাবে এমন নথি প্রকাশ্যে আসার পর দলের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য (Debangshu Bhattacharya) বলেন,'রেয়াপাড়ার বুথের হিসাবে তো চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার জোগাড়। এটা কী করে সম্ভব? একটা বুথে ১০০-র কাছাকাছি গরমিল। এটা ৮০ ধরুন। একটা বুথে ৮০ হলে বাকিগুলিতে কী হয়েছে ভাবুন! আমরা তো প্রথম থেকে বলে আসছি এই ব্যাপারটার মধ্যে বিরাট জঘন্য খেলা হয়েছে।'     

নন্দীগ্রামে (Nandigram) মমতার নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ানের কথায়,'ওই দিন শেষের দিকে ৩ ঘণ্টা গণনা বন্ধ করে দেয়। হঠাৎ বলে সার্ভার নেই। তাতেও ১ ঘণ্টা দেরি হয়। ভিভিপ্যাট গোনার সময় আমাদের রাখেনি। এমনকি গণনার সময় বিরোধী দলের চাপে আমাদের নতিস্বীকার করে বেরিয়ে আসতে হয়।'             
   
তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে বিষয়টি আদালত ও নির্বাচন কমিশনের উপরে ছেড়েছেন বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। তিনি বলেন,'গত পঞ্চায়েত ভোটে এটা বহু জায়গায় ঘটেছে। এমন জায়গা আছে যেখানে ১০০ শতাংশ ভোট হয়েছিল। তৃণমূল কী অভিযোগ করেছে জানি না। তার সত্যতা বিচার করার লোক আমরা নেই। আমরা ১০ বছর ধরে অভিযোগ করেছি। তার আগে তৃণমূল বামেদের বিরুদ্ধে করেছে। এই অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখার দায়িত্ব আদালত ও নির্বাচন কমিশনের।' 

ভোটযুদ্ধের শুরু থেকে নন্দীগ্রাম হয়ে উঠেছিল সম্মানরক্ষার লড়াই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerje) আধ লাখ ভোটে হারানোর চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। ভবানীপুর ছেড়ে নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে মমতাও শুভেন্দুর চ্যালেঞ্জের জবাব দিয়েছিলেন। ১ এপ্রিল নন্দীগ্রামে ভোটগ্রহণের দিনও বয়ালের বুথে চলে গিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। তুলেছিলেন ভোটপ্রক্রিয়ায় বাধাদানের অভিযোগ। তার পর ভোটগণনার সকাল থেকে তুল্যমূল্য লড়াই। প্রথম দিকে এগিয়ে যান শুভেন্দু। পরে তাঁকে ধরে ফেলেন মমতা। সন্ধে নাগাদ সংবাদ সংস্থা এএনআই জানায়, নন্দীগ্রামে ১২০০ ভোটে জিতে গিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। তার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে রিটার্নিং অফিসার ঘোষণা করেন, মমতাকে ১৯৫৬ ভোটে হারিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। গণনায় গরমিলের অভিযোগে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন,'গোটা রাজ্যের থেকে আলাদা রায় দিল নন্দীগ্রাম। এটা হতে পারে না। আমি আদালতে যাব। আমার কাছে খবর আছে, ভোটের ফল ঘোষণার পর কারচুপি হয়েছে। সেটা খুঁজে বের করব।' সেই মামলা হাইকোর্টে বিচারাধীন। এর মধ্যেই রেয়াপাড়ার একটি বুথের ফল নিয়ে তৈরি হল চাঞ্চল্য। আদালতে শাসক দল এই গরমিল তুলে ধরার তোড়জোড় করছে বলে খবর তৃণমূল সূত্রের।

 ভোটার সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তিতে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)পাল্টা টুইট করেন। যদিও তাঁর পাল্টা নথি অনুযায়ী নন্দীগ্রামের ওই বুথে মোট ৭৯৯ জন ভোটারের ৬৭৬টি ভোট পড়েছে।

 

 

আরও পড়ুন- বিজেপির সাজানো নয় তারই বা প্রমাণ কোথায়? ভুয়ো টিকাকাণ্ডে বিস্ফোরক Mamata

 

.