বানভাসি কলকাতা, সোশ্যাল নেটওয়ার্কে উপচে পড়ল ক্ষোভ

Updated By: Jul 10, 2015, 06:39 PM IST
বানভাসি কলকাতা, সোশ্যাল নেটওয়ার্কে উপচে পড়ল ক্ষোভ

পুরভোটের আগে শাসকদলের নেতারা বলেছিলেন,  বদলে গেছে বেহালা। তবে কোথায় কী? বছরের প্রথম ভারী বৃষ্টিতেই ফিরল পুরনো ছবি। ঠাকুরপুকুর থেকে বরিষা, বানভাসি গোট বেহালা। সোস্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে সরকার এবং পুরসভার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন শহরবাসী। ফেসবুকের দেওয়ালে দেওয়ালে আছড়ে পড়েছে বিদ্রুপ মেশানো একের পর এক পোস্ট। কোথাও, জলমগ্ন রাস্তার ছবি দেখিয়ে লেখা বয়েছে সাজানো ঘটনা। কোথাও সরাসরি ব্যঙ্গ করা হয়েছে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে।   

বেহাল বেহালা

ঠাকুরপুকুরের গৌরনগর। বৃহস্পতিবার থেকে ভাসছে গোটা এলাকা। ঢাকঢোল পিটিয়ে গত বছরই একশ চব্বিশ নম্বর ওয়ার্ডে তৈরি হয়েছিল নতুন নিকাশি নালা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ হিতে বিপরীত হয়েছে তাতে। নর্দমার জল ঢুকছে ঘরে। ঘর বাঁচাতে দরজায় মাটির বাঁধ দিচ্ছেন অনেকে। তবে লাভ কিছুই হয়নি। দেখা মেলেনি স্থানীয় কাউন্সিলরেরও।

একই দশা বরিষা শীলপাড়ার। ভাসছে গোটা এলাকা।
 
বারাসত মহকুমার হৃদয়পুর, শান্তিনগর, হরিহরপুর কোমর জলের তলায়। এলাকার বেশিরভাগ রাস্তায় হাঁটু জল। অনেক বাড়ির মধ্যে ঢুকেছে জল। সমস্যায় এলাকাবাসী। রাতের বর্ষণে থই থই দমদম। দমদম পার্ক, লেকটাউন, বাঙ্গুর, কালিন্দিতে বেশির ভাগ বাড়ির একতলায় জল ঢুকেছে। জল মগ্ল দশা পাতিপুকুরেরও । একই পরিস্থিতি তেঘরিয়া, দমদম বিমান বন্দর এলাকায়। বাসিন্দারা কার্যত গৃহবন্দি। নাওয়া-খাওয়া বন্ধ। যেমন খুশি দর হাঁকাচ্ছে  রিক্সা, অটো। এলাকাবাসী নিকাশি নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।

জলমগ্ন সেক্টর ফাইভের তথ্যপ্রযুক্তি তালুক। কলেজ মোড় থেকে উইপ্রো। সর্বত্রই পরিচিত জলছবি। যানচলাচল বিপর্যস্ত। ট্রাফিক জ্যাম। নিকাশি ব্যবস্থা বেআব্রু দশা। প্রবল বর্ষণে বারাকপুর শিল্পাঞ্চল। গৃহবন্দি প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ। আগরপাড়া, সোদপুর, পানিহাটি, খড়দহ হাঁটু জলের তলায়। জলমগ্ন বি টি রোড। চরম ভোগান্তি মানুষের।

টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন কলকাতা। গতকালের পর রাতভর বৃষ্টিতে জল জমে যায় শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ বেশিরভাগ এলাকায়। রাতভর বৃষ্টি হয়েছে একশো মিলিমিটারেরও বেশি। ঝাড়খণ্ড ও বিহারে নিম্নচাপের জেরে দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টি চলবে বলে আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর।  গিরিশপার্ক, মহাত্মাগান্ধী রোড, বড়বাজার, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, ঠনঠনিয়া, সল্টলেকসহ একাধিক এলাকায় জল দাঁড়িয়ে যায়।  জল জমেছে বাইপাস সংলগ্ন ১০৮ ও ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকায়। চৌবাগা খাল ও সংলগ্ন পাম্পিং স্টেশন যে পরিমাণ জল টানতে পারে তুলনায় অনেক বেশি বৃষ্টি হওয়ায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। প্রতিবারের মত এবারও বর্ষায় চেনা জলছবি  শহরের নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

জল থৈ থৈ আলিপুর বডিগার্ডলাইনও। কিন্তু ডিউটিতে তো বেরোতেই হবে। জলে নামলে উর্দি টাও যে খারাপ হবে!  তাহলে উপায়? উর্দিধারী পুলিস কর্মীদের জল পার করালেন সাদা পোশাকের পুলিস কর্মীরা। বর্ষায় বিরল ছবি ধরা পড়ল হাওড়ার টিকিয়াপাড়া রেল ইয়ার্ডে। জল থইথই রেল ইয়ার্ড। লাইনে ট্রেনের বিরুদ্ধে চরে বেড়াল হাঁস। রাতভরের বৃষ্টিতে হাওড়া পূর্ব রেল শাখায় পরিষেবা বিঘ্নিত হয়। টিকিয়াপাড়া ইয়ার্ডের কাছে লাইন ছিল প্রায় ফুটখানেক জলের তলায়।

 

.