Abhishek-কথায় নির্বাচনী ময়দানে এবার রবির 'সোনার বাংলা' বনাম নজরুলের 'জয় বাংলা'
'জয় বাংলা'য় গাত্রদাহ, সোনার বাংলা কোথাকার স্লোগান?' বিজেপিকে নিশানা অভিষেকের।
নিজস্ব প্রতিবেদন: 'জয় শ্রী রাম' বনাম 'জয় সিয়া রাম'। এবার রাজনৈতিক ময়দানে এসে পড়ল 'জয় বাংলা' ও 'সোনার বাংলা'। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) এ দিন নাগরাকাটার সভায় বলেন,'আমরা জয় বাংলা বললে এদের গাত্রদাহ। আর সোনার বাংলা কোথাকার স্লোগান?'
গত লোকসভা ভোটের সময় থেকে 'জয় বাংলা' স্লোগান তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বিজেপি (BJP) পাল্টা বলেছিল, 'জয় বাংলা তো বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের স্লোগান। আওয়ামি লিগ এখনও ব্যবহার করে।' নেতাজি জন্ম জয়ন্তীতে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের অনুষ্ঠানে 'জয় শ্রী রাম' ধ্বনির প্রতিবাদে ভাষণ দেননি তৃণমূল নেত্রী। 'জয় বাংলা' স্লোগান দিয়ে শেষ করেছিলেন সংক্ষিপ্ত বক্তব্য। তখন রাজ্যে বিজেপির সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালবীয় প্রশ্ন তুলেছিলেন,'বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের রণহুঙ্কার জয় বাংলা স্লোগান দিয়েছেন পিসি। পিসি কার থেকে স্বাধীনতা চাইছেন?'
Y’day, Pishi raised “Joy Bangla” slogan. Does she know it was the official war cry of the Bangladeshi freedom (Muktijuddho) movement popularised by Sheikh Mujibur Rahman?
Who does Pishi want freedom from?
While Netaji had dreamt of a united Bharat, she spoke of divisiveness...
— Amit Malviya (@amitmalviya) January 24, 2021
এ দিকে 'সোনার বাংলা' গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জোরদার প্রচার করছে বিজেপি (BJP)। অমিত শাহ (Amit Shah) ঘোষণা করেছেন,'৫ বছরের মধ্যে সোনার বাংলা হবে।' গতকাল, শুক্রবার সোনার বাংলা বলতে কী বোঝাতে চাইছেন, তার ব্যাখ্যাও দেন। Zee ২৪ ঘণ্টা Kolkata Conclave-এ তিনি বলেন, 'সোনার বাংলা মানে নির্ভয়ে মতপ্রকাশ, সোনার বাংলা মানে সুরক্ষিত সীমান্ত, সোনার বাংলা মানে সকলের জন্য খাদ্য, সোনার বাংলা যুবকদের রোজগার, সোনার বাংলা মানে সুশাসন,সোনার বাংলা' মানে বাঙালি অস্মিতা।' উল্লেখ্য, বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত রবীন্দ্রনাথের লেখা, 'আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।' এ দিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) বলেন,'সোনা বলতে পারে না। কথায় কথায় বলছে সুনার বাংলা। আমরা জয় বাংলা বললে এদের গাত্রদাহ। আর সোনার বাংলা কোথাকার স্লোগান? তুমি করলে চমৎকার আমি করলে বলাৎকার। তাই না! তুমি করলে রামলীলা আমি করলে ক্যারেক্টার ঢিলা! তুমি করলে সাধু আমি করলে চোর! তুমি সোনার বাংলা বললে দেশপ্রেমিক! আর আমরা জয় বাংলা বললে বাংলাদেশি! আগামী দিনে তোমার মুখ দিয়ে জয় হিন্দ ও জয় বাংলা বের করে ছাড়ব।'
ঘটনা হল, 'সোনার বাংলা' বা 'জয় বাংলা' কোনওটাই শুধুমাত্র বাংলাদেশের স্লোগান নয়। ১৯০৫ সালে কলকাতা টাউনহলে বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদ-সভা উপলক্ষে ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটি রচনা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এটি প্রকাশিত হয়েছিল সঞ্জীবনী পত্রিকায়।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের 'জয় বাংলা' অনুরণিত হয়েছিল ওপার বাংলায়। তবে এই 'জয় বাংলা' শব্দবন্ধন কাজি নজরুল ইসলামের লেখনী থেকে সংগ্রহ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে জেলবন্দি হয়েছিলেন মাদারিপুরের স্কুল শিক্ষক পূর্ণচন্দ্র দাস। তাঁর মুক্তির পর 'পূর্ণ-অভিনন্দন' শীর্ষক কবিতায় নজরুল ইসলামের কলম থেকে নিঃসৃত হয়েছিল,“জয় বাঙলা”র পূর্ণচন্দ্র, জয় জয় আদি অন্তরীণ,জয় যুগে যুগে আসা সেনাপতি, জয় প্রাণ অন্তহীন”। ১৯২৪ সালে প্রকাশিত নজরুলের ‘ভাঙার গান’ গ্রন্থে ঠাঁই পেয়েছিল এই কবিতাটি।
আরও পড়ুন- মমতার মুখ মানুষ চায় না: স্বপন, করলার নাম বদলালেই মিষ্টি হয়ে যায় না: মান্নান