JU Student Death: 'গার্লফ্রেন্ড নেই বলতেই যৌন পরিচয় নিয়ে টিটকিরি, বিবস্ত্র হতে বাধ্য!'
প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়... তিন পর্যায়ে মানসিক অত্যাচার। এই পরিস্থিতির সঙ্গে অভ্যন্ত ছিলেন না ওই পড়ুয়া। কেঁদে ফেলেন নদিয়া থেকে পড়তে আসা ওই পড়ুয়া। ঘরে ঢুকে বাঁচার চেষ্টা। মাকে ফোন।
পিয়ালি মিত্র: যাদবপুরের মৃত প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার উপর চরম মানসিক অত্যাচার! পুলিস সূত্রে খবর, ধৃতদের জেরায় মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, ঘটনার রাতে কুরুচিকর অশালীন শব্দ লিখে দেওয়া হয়। জানলার সামনে দাঁড়িয়ে ছাত্রকে বলতে বলা হয়। প্রথমে বলতে অস্বীকার করে ওই ছাত্র। তারপর আস্তে আস্তে বলে। তবে তা পছন্দ হয়নি সিনিয়র দাদাদের। এরপর জানলার সামনে দাঁড়িয়ে উচ্চস্বরে গালিগালাজ করতে বলা হয়। এদিকে জানলার উলটো দিকেই রয়েছে আবাসন। এই পরিস্থিতির সঙ্গে অভ্যন্ত ছিলেন না ওই পড়ুয়া। কেঁদে ফেলেন নদিয়া থেকে পড়তে আসা ওই পড়ুয়া।
এরপর ডিনকে ফোন করার পর শুরু হয় দ্বিতীয় পর্যায়ের মানসিক চাপ। তখন ছাত্রকে দিয়ে জোর করে চিঠি লেখানোর চেষ্টা শুরু হয়। বাংলা বিভাগের এক ছাত্রের বিরুদ্ধে চিঠি লিখতে জোর করা হয়। ওই ছাত্র সেই চিঠি না লিখলে, চিঠি লেখে দীপশেখর দত্ত নামে ধৃত পড়ুয়া। চিঠি লিখে তারপর জোর করে ছাত্রকে দিয়ে সই করানো হয়। যাতে আরও মানসিক চাপে পড়ে ওই পড়ুয়া। এরপর তৃতীয় পর্যায়ে ওই ছাত্রের কাছে জানতে চাওয়া হয় তার গার্লফ্রেন্ডের নাম। ছাত্র জানায়, তার কোনও গার্লফ্রেন্ড নেই। তখনই ছাত্রের যৌন পরিচয় নিয়ে শুরু হয় টিটকিরি। ছাত্রকে বিবস্ত্র হতে জোর করা হয়। এই পরিস্থিতিতে একটা ঘরে ঢুকে নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচার চেষ্টা করে ওই ছাত্র। মাকে ফোন করে সে।
প্রসঙ্গত, তদন্তে আগেই সামনে এসেছে যে যাদবপুরের মৃত পড়ুয়া ছিল রাজনৈতিক লড়াইয়ের 'বোড়ে'! উদ্ধার হওয়া চিঠিতে মেলে সেই সূত্র! ধৃতদের জেরায় জানা যায়, বাংলা বিভাগের পডুয়া স্বপ্নদীপকে গেস্ট হিসাবে হস্টেলের থাকার ব্যবস্থা করার পরই ছক কষা হয়। শুধু মানসিক নির্যাতনের “টার্গেট” নয়, যাদবপুরের ওই পড়ুয়াকে রাজনৈতিক লড়াইয়ের 'বোড়ে' করতে চেয়েছিল অভিযুক্তরা। হস্টেলের ঘর থেকে উদ্ধার ডায়েরির মধ্যে থাকা চিঠি থেকেই মেলে সেই ইঙ্গিত। বাংলা বিভাগের এক ছাত্র নেতার বিরুদ্ধে ডিনকে লেখা হয় সেই চিঠি। বাংলা বিভাগে অন্য রাজনৈতিক সংগঠনের প্রভাব রয়েছে। সেই প্রভাবই ভাঙতে মরিয়া ছিল সৌরভ চৌধুরী সহ অভিযুক্তরা।
ইতিমধ্যেই ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় প্রাক্তনী ও বর্তমান মিলিয়ে মোট গ্রেফতার ১৩। যাদবপুরের ছাত্রমৃত্যু ঘটনায় তোলপাড় সব মহল। কড়া পদক্ষেপ করেছে শিশু সুরক্ষা কমিশন। সুপ্রিম কোর্ট এবং ইউজিসি-র নিয়ম মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে শিশু সুরক্ষা কমিশন। প্রথম বর্ষের পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে শোকজ করেছিল শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। সেই শোকজের উত্তরও দিয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেই জবাবে অখুশি শিশু সুরক্ষা কমিশন। ফের উত্তর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। ওদিকে এই ঘটনায় রিপোর্ট তলব করে ইউজিসি-ও। প্রথম দফার রিপোর্ট সন্তোষজনক নয় বলে মত ইউজিসি-র। ইউজিসি-র তরফে ফের চিঠি পাঠানো হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে।
আরও পড়ুন, Jadavpur University: পূর্ণ আবাসিক হবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়? Exclusive বুদ্ধদেব সাউ