প্রাণ হাতে নিয়ে প্রতিদিন মেট্রোরেল সফরে লাখো কলকাতাবাসী, একটি রিপোর্ট

রেক বিকল হয়ে অন্ধকার সুড়ঙ্গে চল্লিশ মিনিটের বন্দিদশা। সোমবার এমনই দমবন্ধ করা অভিজ্ঞতা হয়েছে মেট্রোর কয়েকশো যাত্রীর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা হয়। পরিকাঠামোর যা হাল আগামী দিনে মেট্রোয় এমন বিপত্তি আরও ঘটতে পারে। মেট্রোর ভগ্নদশা নিয়ে একটি বিশেষ রিপোর্ট।

Updated By: Jun 24, 2014, 04:17 PM IST

রেক বিকল হয়ে অন্ধকার সুড়ঙ্গে চল্লিশ মিনিটের বন্দিদশা। সোমবার এমনই দমবন্ধ করা অভিজ্ঞতা হয়েছে মেট্রোর কয়েকশো যাত্রীর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা হয়। পরিকাঠামোর যা হাল আগামী দিনে মেট্রোয় এমন বিপত্তি আরও ঘটতে পারে। মেট্রোর ভগ্নদশা নিয়ে একটি বিশেষ রিপোর্ট।

ঘটতে পারত আরও ভয়ঙ্কর ঘটনা। প্রতিদিন পাঁচলক্ষ সত্তর হাজার মানুষ যাতায়াত করেন মেট্রোয়। কিন্তু, পরিকাঠামোর যা হাল, তাতে অনেকেই মনে করছেন মেট্রোয় চড়া এখন বিপদ যাত্রা। কেন?

বিপদ এক

মেট্রোয় মোট সাতাশটি রেক রয়েছে। তার মধ্যে এসি তেরোটি, নন এসি চোদ্দটি। রেলের ব্লু বুক অনুযায়ী পঁচিশ বছরের পর মেট্রো রেককে বাতিল করতে হয়। সেই অনুযায়ী, নন এসি রেকগুলির অনেকগুলিরই মেয়াদ ফুরিয়েছে। স্পেশাল রিপেয়ারিং করে চালানো হচ্ছে সেগুলি।

বিপদ দুই

যে তেরোটি এসি রেক রয়েছে তারও ডিজাইনিং নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে। রেলপথের গঠন অনুযায়ী রেকগুলিতে যে পরিবর্তন আনা উচিত এক্ষেত্রে তা করা হয়নি। ফলে প্রথম থেকেই ব্যাটারিতে সমস্যা থেকেই গিয়েছে। বেশি চললে গরম হয়ে যায় রেক। সোমবারের দুর্ঘটনা যদি এসি রেকে ঘটত, তাহলে পরিণতি আরও ভয়ঙ্কর হত।

বিপদ তিন

সকালে ট্রেন চালানোর আগে লাইন পরীক্ষার জন্য পাইলট ট্রেন চালানো বাধ্যতামূলক। রেকের অভাবে এপ্রিল থেকে তা বন্ধ। ফলে বিনা পরীক্ষাতেই ট্রেন চলছে।

বিপদ চার

ট্রেনের সংখ্যা বেড়েছে। তুলনায় বাড়েনি রেকের সংখ্যা। ফলে রেকগুলি পরীক্ষার জন্য কারশেডে যে সময় প্রয়োজন তা কখনই পাওয়া যায় না।

বিপদ পাঁচ

কর্মীর অভাব। ফলে অনেক সময়েই কোনওরকমে রেক পরীক্ষা করেই নামিয়ে দেওয়া হয় রেলপথে। যা অত্যন্ত বিপজ্জনক।

বিপদ পাঁচ

অধিকাংশ নন এসি রেকই বাতিলের খাতায়। সেগুলির যন্ত্রাংশও পাওয়া যায় না। কোনওরকমে জোড়াতাপ্পি দিয়ে কাজ চালাতে হয়। সোমবারের দুর্ঘটনার পিছনেও এটা একটা বড় কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।

বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য একসময় মেট্রোয় মক ডিল ছিল বাধ্যতামূলক। কিন্তু, কর্মী ও অর্থের অভাবে এখন তা বন্ধ।

কীভাবে ভয়ঙ্কর ঝুঁকি নিয়ে চলছে মেট্রো, তা নেতামন্ত্রীদের অজানা নয়। কিন্ত, নতুন রেকের উদ্বোধনে তাঁরা যতটা সক্রিয়, সেই তত্পরতা ধরা পড়ে না পরিকাঠামোর সংস্কারে। তাই এভাবেই চলছে কলকাতার লাইফলাইন।

.