হজ হাউস আছে অথচ গঙ্গাসাগরের পুণ্যার্থীরা আকাশের নীচে, মমতাকে নিশানা সাধ্বী সরস্বতীর
সাধ্বী সরস্বতীর এহেন হুঙ্কার উড়িয়ে দিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
মৌমিতা চক্রবর্তী
সকাল থেকে শহিদ মিনার চত্বরে জমছিল গেরুয়া পতাকাধারীদের ভিড়। এরাজ্যে আগে এই ছবি বেমানান হলেও বিজেপির উত্থানের সঙ্গে সঙ্গেই গেরুয়া ঔজ্জ্বল্য বেড়েছে বঙ্গ ভূমিতে। বেলার বাড়ার পরই শহিদ মিনারের তলদেশে উঠল মুহূর্মুর্হূ 'জয় শ্রী রাম' ধ্বনি। হিন্দু জাগরণ মঞ্চের বিরাট হিন্দু জাগরণের মঞ্চের সভার সৌজন্য এদিন গেরুয়াময় হয়ে উঠেছিল ময়দান চত্বর। আর সেই সভা থেকেই উঠল রাম মন্দিরের দাবি। এমনকি আরও এক কদম এগিয়ে হিন্দুত্ববাদী নেত্রী সাধ্বী সরস্বতী দাবি করলেন, অযোধ্যাই নয়, কাশী ও মথুরাতেও মন্দির পুনরুদ্ধার করা হবে। অর্থাত্ ইঙ্গিত স্পষ্ট, রাম মন্দিরেই থেমে থাকবে না গেরুয়া ব্রিগেড।
বাংলায় নাগরিকপঞ্জি চালু, গঙ্গাসাগরের পুণ্যার্থীদের জন্য আবাস ও রাম মন্দিরের জন্য অধ্যাদেশের দাবিতে এদিন শহিদ মিনারে বিরাট হিন্দু সভার আয়োজন করেছিল হিন্দু জাগরণ মঞ্চ। ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলেও বক্তাদের ভাষণ থেকে কারও বুঝতে অসুবিধা হয়নি, এই সভা আদ্যোপান্ত রাজনৈতিক। এমনকি বিজেপির সভায় চেনাপরিচিত মুখদেরও দেখা গিয়েছে হিন্দু জাগরণের মঞ্চে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে তা আরও স্পষ্ট করে দিলেন হিন্দুত্ববাদী নেত্রী সাধ্বী সরস্বতী। বললেন,''এরাজ্যে ৬৫ শতাংশ হিন্দু অথচ হজ হাউস আছে, কিন্তু গঙ্গা সাগরের পুণ্যার্থীরা খোলা আকাশের নীচে রাত কাটান''। এমনকি অস্ত্র ধরতেও যে পিছপা হবে না সংগঠন, তাও ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছেন জাগরণের নেতারা। সাধ্বী সরস্বতীর কথায়,''অধ্যাদেশ জারি করে রাম মন্দির নির্মাণ করা উচিত। বাংলা এখন সবুজ। তবে সাধুসন্তদের আসা-যাওয়া লেগে থাকলে বেশিদিন লাগবে না গেরুয়া হতে। মা কালী দুষ্টের বিনাশের জন্যে অস্ত্র ধরে ধরেছিলেন। এখানে দুর্গা পুজো হয়। ভালবাসার কথা বলে কাজ হবে না। হাতে অস্ত্র নিতে হবে''।
সাধ্বী সরস্বতীর এহেন হুঙ্কার ফুত্কারে উড়িয়ে দিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ''এসব কথাবার্তা বলে পাঁচটা রাজ্য থেকে চলে গিয়েছে। এর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এসব সাধ্বী-টাধ্বী কিছু করতে পারবে না। এরা ইতিহাস জানে না। একটা ইট কেন এক চামচ বালি পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা নেই''।
এদিনের হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সভাই নয়, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তেই চলছে ভিএইচপি-র ধর্মীয় সভা। আর প্রতিটি সভা থেকেই রাম মন্দির নির্মাণের জিগির তোলা হচ্ছে। অনেকেই বলছেন, লোকসভার আগে ধর্মসভার মূল লক্ষ্যই হল হিন্দু ভোটকে এক জায়গায় আনা। আর সেই কৌশলে সঙ্ঘও যে জড়িত তা বোঝা গিয়েছে চলতি সপ্তাহে মোহন ভাগবতের কলকাতা সফরে।
আরও পড়ুন- মোদী-শাহের সভায় বাধা নেই, রথযাত্রায় 'না' রাজ্য সরকারের