আর্থিক বদান্যতায় সংস্কৃতি দফতর, বঞ্চিত গ্রামোন্নয়ন
পঞ্চায়েত থেকে বরাদ্দের পরিমাণ কমে অর্থমন্ত্রকের বদান্নতা পেল মুখ্যমন্ত্রীর হাতে থাকা সংস্কৃতি দফতর। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়নে রাজ্য বাজেটে এবার ২৫৫ কোটি টাকা কমিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। উল্টোদিকে সংস্কৃতি দফতরের জন্য এক ধাক্কায় বাজেট বরাদ্দ ১২৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।
পঞ্চায়েত থেকে বরাদ্দের পরিমাণ কমে অর্থমন্ত্রকের বদান্যতা পেল মুখ্যমন্ত্রীর হাতে থাকা সংস্কৃতি দফতর। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়নে রাজ্য বাজেটে এবার ২৫৫ কোটি টাকা কমিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। উল্টোদিকে সংস্কৃতি দফতরের জন্য এক ধাক্কায় বাজেট বরাদ্দ ১২৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। হঠাত্ করে সংস্কৃতি দফতরকে নিয়ে অর্থমন্ত্রকের এই বাড়তি উত্সাহ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। কারণ, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়নকে অবহেলা করে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের এই সিদ্ধান্তের কোনও যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছেন না তাঁরা।
সিনেমা থেকে নাটক, সঙ্গীত থেকে চিত্রকলা, গত ১০ মাসে সংস্কৃতির এই সব ক্ষেত্র বাড়তি পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার চালু করেছে বঙ্গবিভূষণ ও বঙ্গসম্মান নামে বিশেষ আর্থিক পুরস্কার। রাজ্যের ভাঁড়ারে টান থাকলেও চলতি আর্থিক বছরে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের ঢালাও আয়োজন করতে চলেছে রাজ্য সরকার। এর জন্য অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বাজেটে বরাদ্দ করেছেন ১১০ কোটি টাকা। যেখানে গত আর্থিক বছরে বরাদ্দ ছিল ৪৮ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। আর ২০১০-১১ সালে এই দফতরের জন্য বাজেট বরাদ্দ হয়েছিল মাত্র ৭ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা।
এই অতিরিক্ত বরাদ্দ খরচ করা হবে নাটক, সঙ্গীত, স্টুডিওর আধুনিকীকরণ, চলচ্চিত্র উতসবের মতো একাধিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। স্বাভাবিকভাবেই সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এর আর্থিক সুবিধা পাবেন। ইতিমধ্যেই বঙ্গবিভূষণ সম্মান বাবদ ২ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে ৪ জনকে। বঙ্গ সম্মান পুরস্কার বাবদ ১ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও গঠন করা হয়েছে বহু কমিটি। সেই কমিটির জন্যও দেদার টাকা খরচ হচ্ছে। যে সব কমিটিতে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ শিল্পীরাই।
বাজেটে অর্থমন্ত্রীর দেওয়া হিসাব থেকেই জানা যাচ্ছে, সরকার ২৭ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা স্টুডিওর আধুনিকীকরণ ও নির্মাণ বাবদ খরচ করবে। গত আর্থিক বছরে এই বাবদ বরাদ্দ ছিল মাত্র ২ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা। চলচ্চিত্র উতসবের জন্য এবারের বাজেটে বরাদ্দ হয়েছে এক কোটি টাকা। গত আর্থিক বছরে এই খাতে বরাদ্দ ছিল ৬০ লক্ষ টাকা। সংস্কৃতি মেলা ও উতসবের জন্য গত আর্থিক বছরে যেখানে ৫০ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়েছিল, এবার সেখানে এক ধাক্কায় বরাদ্দ বেড়েছে ১০ গুণ। বেড়ে হয়েছে ৫ কোটি টাকা। যদিও এরই মধ্যে গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েতে বরাদ্দ কমেছে ২৫৫ কোটি টাকা। ফলে রাজ্যের এই আর্থিক অবস্থায় কেন সংস্কৃতি দফতরের জন্য এত টাকা বরাদ্দ করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।