বিষমদের পর আমরি কাণ্ডেও সিপিআইএমকে দায়ী করল তৃণমূল

সংগ্রামপুরে বিষমদ কাণ্ড ও নোদাখালিতে জলাধারে বিষ মেশানোর গুজবের জন্য আগেই সিপিআইএমকে দায়ী করেছিল রাজ্য সরকার ও তৃণমূল কংগ্রেস। এবার তার সঙ্গে আমরি কাণ্ডের জন্যও সিপিআইএমকেই দায়ী করা হল তৃণমূলের পক্ষ থেকে।

Updated By: Dec 23, 2011, 07:01 PM IST

সংগ্রামপুরে বিষমদ কাণ্ড ও নোদাখালিতে জলাধারে বিষ মেশানোর গুজবের জন্য আগেই সিপিআইএমকে দায়ী করেছিল রাজ্য সরকার ও তৃণমূল কংগ্রেস। এবার তার সঙ্গে আমরি কাণ্ডের জন্যও সিপিআইএমকেই দায়ী করা হল তৃণমূলের পক্ষ থেকে। রাজ্য সরকার ও তৃণমূলের পক্ষ থেকে প্রধান বিরোধী দলের বিরুদ্ধে এহেন  বিষোদগার করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। কিন্তু তাঁর মতো প্রবীণ পোড়খাওয়া রাজনীতিকের এই আচরণে বিস্মিত রাজনৈতিক মহলও।মগরাহাটে পুলিসের গুলিতে দুজনের মৃত্যু, সংগ্রামপুর বিষমদ কাণ্ডে ১৭৩ জনের মৃত্যুর জন্য সিপিআইএমকে দায়ী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বৃহস্পতিবার ফের নোদাখালিতে জলাধারে বিষ মেশানোর গুজবের জন্যও সিপিআইএমকেই দায়ী করেছেন রাজ্যের জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
শুক্রবার আরও একধাপ এগিয়ে আমরি কাণ্ডের জন্যও রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলকেই দায়ী করলেন তিনি। বিধানসভার চলতি অধিবেশনে মাত্র তিনদিন আসতে পেরেছেন মুখ্যমন্ত্রী। অসুস্থ থাকায় পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও আসতে পারেননি বিধানসভায়। ফলে বেশ কিছুদিন ধরেই বিল আনা, নানা প্রশ্নের জবাব দেওয়ার মত গুরুত্বপূর্ণ পরিষদীয় কাজকর্ম সামলাচ্ছেন সুব্রতবাবু। কিন্তু দীর্ঘদিনের পোডখাওয়া রাজনীতিক সুব্রতবাবু কেন হঠাত সিপিআইএমের বিরুদ্ধে একের পর এক গুরুতর অভিযোগ করতে শুরু করলেন? রাজনৈতিক মহলে এর কয়েকটি ব্যাখ্যা ঘোরাফেরা করছে। এরাজ্যে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা থাকলেও বারবার দলবদল করার প্রবণতা রয়েছে সুব্রতবাবুর। আপাতত বছর দুয়েক তিনি তৃণমূলে থাকলেও এর আগে একাধিকবার তৃণমূল ও কংগ্রেসে ঘোরাফেরা করেছেন তিনি। ক্ষমতায় আসার পর তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা সত্ত্বেও তাঁকে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি বিভাগের মত কার্যত গুরুত্বহীন দফতরের দায়িত্ব দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের একটি অংশের বক্তব্য, এখনও দল বা মুখ্যমন্ত্রীর ততটা আস্থাভাজন হয়ে উঠতে পারেননি সুব্রতবাবু। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর নেকনজরে থাকতেই সিপিআইএমের বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে নেমেছেন তিনি। সুব্রত
বক্সি সাংসদ হয়ে যাওয়ার পর রাজ্য মন্ত্রিসভায় পূর্ত ও পরিবহণ দফতরটি নতুন কাউকে দিতে হবে। তৃণমূলের একাংশের ধারণা ওই দফতরের দায়িত্ব পেতে পারেন সুব্রতবাবু। এছাড়া, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত থেকে পরিষদীয় মন্ত্রকটিও নিয়ে নেওয়া হতে পারে বলে জল্পনা। দলের মধ্যেই তাই প্রশ্ন উঠেছে, এই সমীকরণের কথা মাথায় রেখেই কি সুব্রতবাবু হঠাত্ এতটা অতিসক্রিয় হয়ে উঠলেন। তবে দলেরই আর একটি সূত্রের বক্তব্য, অতীতে তাঁর বারবার দলবদলের নজিরের জন্যই এখনও সুব্রতবাবু মুখ্যমন্ত্রীর আস্থাভাজন হয়ে উঠতে পারেননি। তাই এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোনও ভূমিকা তাঁকে হয়ত দেবেন না মমতা বনম্দ্যোপাধ্যায়। ফলে, লাগাতার সিপিআইএমের বিরুদ্ধ আক্রমণ শানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে কোনও গুরুত্বপূর্ণ দফতর আদৌ সুব্রতবাবু পাবেন কিনা তার দিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।

.