কাউন্সিলর কাউয়ের চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি, `সব জানত দলের নেতারা`
মহম্মদ ইকবাল ওরফে মুন্নার পর এবার শম্ভুনাথ কাউ। গোয়েন্দাদের জেরায় তৃণমূল কাউন্সিলরের চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি। শম্ভুনাথ কাউয়ের দাবি, নেতারা সব জানতেন। কয়েকজন নেতাই তাঁকে গা ঢাকা দিয়ে থাকতে বলেছিলেন। ধরা পড়ার পর গার্ডেনরিচে এসআই তাপস চৌধুরী খুনে অন্যতম অভিযুক্ত তৃণমূলের বরো চেয়ারম্যান মুন্নাভাইও একই দাবি করেছিলেন। শম্ভুনাথ কাউয়ের আরও দাবি, শীর্ষ নেতাদের জানিয়েই সেদিন মাঠপুকুরে গিয়েছিলেন তিনি। তবে, অধীর মাইতিকে খুনের কোনও উদ্দেশ্য ছিল না তাঁর।
মহম্মদ ইকবাল ওরফে মুন্নার পর, এবার শম্ভুনাথ কাউ। জেরার মুখে ধৃত তৃণমূল কাউন্সিলর শম্ভুনাথ কাউও জানালেন, মেয়র এবং তৃণমূল নেতৃত্ব সবই জানতেন। নেতৃত্বকে জানিয়েই সে দিন মাঠপুকুরে গিয়েছিলেন তিনি। তবে অধীর মাইতিকে খুনের কোনও পরিকল্পনা ছিল না বলেই গোয়েন্দাদের জানিয়েছেন ধৃত কাউন্সিলর। দলের নেতাদের পরামর্শ অনুযায়ী, মুন্নার মতো গা ঢাকা দিয়েছিলেন তিনিও। মাঠপুকুরে তৃণমূল নেতা অধীর মাইতির খুনের পর জড়িয়ে যায় কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের নাম। যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেন মেয়র।
পুলিসি জেরায় সম্পূর্ণ উল্টো কথা শুনিয়েছেন ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার শম্ভুনাথ কাউ। শম্ভুনাথ কাউয়ের দাবি, ওই বিতর্কিত জমিতে পুরবাজার নির্মাণের পরিকল্পনা করেছিল পুরসভা। সবটাই জানতেন মেয়র। জানতেন পুর আধিকারিকরাও। তাঁদের জানিয়েই গত ২০ মার্চ মাঠপুকুরে গিয়েছিলেন বলে জেরার মুখে জানিয়েছেন ধৃত ওই কাউন্সিলর। জমি সংক্রান্ত বিবাদ মেটানোর দায়িত্ব তাঁর ওপরেই ছিল। কিন্তু ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এলাকারই অন্য এক তৃণমূল নেতা অধীর মাইতির সঙ্গে তাঁর বচসা বাঁধে। ধাক্কা মারলে অধীর মাইতি পড়ে যান এবং তাঁর মৃত্যু হয়। কিন্তু অধীর মাইতিকে খুনের কোনও পরিকল্পনা ছিল না ধৃত কাউন্সিলরের। পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। ঘটনা জানাজানি হতে সে দিনই জেলা সফরের মাঝে শম্ভুনাথ কাউকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কিন্তু টেলিভিশনে মাঠপুকুরের খবর সম্প্রচারিত হতেই তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশ তাঁকে গা ঢাকা দেওয়ার পরামর্শ দেন বলে পুলিসকে জেরার মুখে জানিয়েছেন শম্ভুনাথ কাউ। এমনকি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাঁকে ফিরে আসতেও পরামর্শ দেন ওই নেতারা। নেতাদের কথা মতো তিনি আগাম জামিনের আবেদন করেন বলে পুলিসের কাছে জানিয়েছেন শম্ভুনাথ কাউ।
তদন্তকারী অফিসারদেরও সন্দেহ ছিল, রাজনৈতিক নেতাদের নির্দেশেই গা ঢাকা দিয়েছেন শম্ভুনাথ কাউ। এবং রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন তিনি। সে কারণেই যোধপুর পার্ক এলাকায় তৃণমূল নেতা রতন দে-র বাড়ির সামনে ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে পুলিস নজরদারি চালায়। পুলিসি হেফাজতে থাকা শম্ভুনাথ কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস এবিষয়ে আরও সুনির্দিষ্ট তথ্য পেতে চাইছে। ইতিমধ্যেই এ ঘটনায় অজয় দলুই নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিস।