আস্থা ভোটের প্রয়োজন নেই, জানিয়ে দিলেন অর্থমন্ত্রী
কয়লা দুর্নীতি প্রশ্নে এখনই আস্থা ভোটে যাচ্ছে না সরকার। প্রধান বিরোধী দল বিজেপির সাংবাদিক বৈঠকের পরেই অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম সরকারের তরফে জবাব দিতে গিয়ে বিরোধীদের তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, সংসদের অধিবেশন হতে না দেওয়াটা গণতন্ত্রের উপর কালো দাগ।
কয়লা দুর্নীতি প্রশ্নে এখনই আস্থা ভোটে যাচ্ছে না সরকার। প্রধান বিরোধী দল বিজেপির সাংবাদিক বৈঠকের পরেই অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম সরকারের তরফে জবাব দিতে গিয়ে বিরোধীদের তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, সংসদের অধিবেশন হতে না দেওয়াটা গণতন্ত্রের উপর কালো দাগ। বিরোধী নেত্রী সুষমা স্বরাজের লভ্যাংশ নিয়ে বিবৃতির কড়া সমালোচনা করেন অর্থমন্ত্রী। সুষমা স্বরাজের `মোটা মাল` শব্দ প্রয়োগ খুবই দুর্ভাগ্যজনক মন্তব্য বলেও জানান তিনি। তাঁর অভিযোগ, বাইরে থেকে কেন, সংসদের অধিবেশনেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। তিনি বলেন, `সংসদের উপর আস্থা আছে সরকারের`। একইসঙ্গে দিনভর চলা আস্থা ভোটের জল্পনাও নস্যাৎ করে দেন তিনি। তাঁর সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী অম্বিকা সোনি এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং টেলিকম মন্ত্রী কপিল সিব্বল।
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রীর ইস্তফা দাবিতে আজও সরকারের উপর চাপ বজায় রাখল বিজেপি। প্রধানমন্ত্রীকে সংসদের কোনও কক্ষেই সুষ্ঠু ভাবে বক্তব্য পেশ করতে দেওয়ার পক্ষপাতী নন তাঁরা। সোমবার সংসদে প্রাধানমন্ত্রীর কয়লা কেলেঙ্কারি নিয়ে বিবৃতি দেওয়ার পরেই বিজেপির দুই শীর্ষ নেতৃত্ব সুষমা স্বরাজ ও অরুণ জেটলি যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে ডেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। সেইসঙ্গে কয়লা ব্লক নিয়ে ক্যাগের পেশ করা রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে অনড় বিজেপি শিবির।
সংবাদিক সম্মেলনে বিজেপি নেতা অরুণ জেটলি প্রধানমন্ত্রী `নৈতিকতা` মানছেন না বলে অভিযোগ আনেন। তিনি বলেন, ক্যাগের রিপোর্টে স্পষ্ট, কয়লা ব্লক বণ্টনে স্বচ্ছতা রাখা হয়নি। অথচ কয়ালা ব্লক বণ্টন নিয়ে স্বচ্ছতা বজায় রাখার দাবি জানিয়েছিল বিজেপি। কয়লা দুর্নীতির দায় প্রধানমন্ত্রীর ওপরই বর্তায় বলেও জানান অরুণ জেটলি। পাশাপাশি, বণ্টিত হওয়া ১৪২টি কয়লার ব্লক বাতিল করারও দাবি জানান অরুণ-সুষমা।
লোকসভার বিরোধী দলনেত্রী সুষমা স্বরাজ তাঁর বক্তব্যে জানান, ২০০৪ থেকে ২০০৮, এই আট বছরে ক্রমশ মহার্ঘ হয়েছে কয়লার দাম। আন্তঃরাষ্ট্রীয় বাজারে আকাশ ছোঁয়া হয়ে দাড়ায় কয়ালার দাম। আর তারই সুযোগ নিয়েছে কংগ্রেস সরকার। তিনি আরও অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের কথা আসলে `ছুতো`।
অন্যদিকে, তৃণমূল সূত্রে খবর কয়লা দুর্নীতি নিয়ে দুই কক্ষেই আলোচনা হোক। দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর পাশেই থাকবে তারা।
কয়লা ব্লক বন্টন নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে কোনঠাসা প্রধানমন্ত্রী আজ পাল্টা চ্যালেঞ্জের রাস্তায় গেলেন। সংসদের বিবৃতিতে ক্যাগ রিপোর্টের ভিত্তি নিয়েই প্রশ্ন তোলেন মনমোহন সিং। তিনি বলেন, ক্যাগের পর্যবেক্ষণ প্রশ্নাতীত নয়। রিপোর্টে ওঠা দুর্নীতির যাবতীয় অভিযোগকেও খারিজ করে দেন তিনি। বিরোধীদের তুমুল হট্টগোলের মাঝেও বিবৃতি থামাননি মনমোহন সিং। তিনি বলেন, সংসদে বিরোধীরা তাঁকে বলারই সুযোগ দিচ্ছে না। রীতিমতো আক্রমণাত্মক সুরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিতেও ক্যাগ রিপোর্টকে চ্যালেঞ্জ জানানো হবে। বিরোধীদের প্রবল চাপের জেরে সংসদের দু`কক্ষই সারাদিনের মতো মুলতুবী করতে বাধ্য হন আধ্যক্ষ।